এফএনএস বিদেশ: রাশিয়ার হামলার মুখে ইউক্রেনকে সহায়তা করলেও জার্মানির শীর্ষ স্তরের নেতারা এখনো কিয়েভ সফরে যাননি। অবশেষে সেই ক‚টনৈতিক অস্বস্তি কাটিয়ে ইউক্রেন ও জার্মানির প্রেসিডেন্টের মধ্যে টেলিফোনে আলোচনা হয়েছে। খোদ প্রেসিডেন্ট অবাঞ্ছিত হলে রাষ্ট্রের অন্য নেতারা কীভাবে কোনো জায়গায় যেতে পারেন? এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাংক-ভাল্টার স্টাইনমায়ারের পরিকল্পিত কিয়েভ সফর এমন কারণে বাতিল হবার পর চ্যান্সেলর শলৎস ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যরাও তাই ইউক্রেন অভিমুখে না যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। অতীতে স্টাইনমায়ারের ‘পুটিন প্রীতি’ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি পছন্দ নয় বলেই এমন জটিলতার সূত্রপাত। অথচ রাশিয়ার হামলার মুখে জার্মানির মতো গুরুত্বপূর্ণ দেশের সহায়তাও ইউক্রেনের জন্য জরুরি। অবশেষে সংকটের মাঝে ক‚টনৈতিক বরফ গলার প্রক্রিয়া শুরু হলো। জার্মানির প্রথম গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে চলতি সপ্তাহে কিয়েভ সফরে গিয়েছিলেন সংসদে প্রধান বিরোধী ইউনিয়ন শিবিরের নেতা ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস। জেলেনস্কির সঙ্গে অপ্রত্যাশিত সাক্ষাতের সময় তিনি জার্মান প্রেসিডেন্টকে ঘিরে বর্তমান অস্বস্তি কাটিয়ে তোলার বিষয়েও কথা বলেন। তবে শুধুমাত্র ম্যার্ৎসের উদ্যোগের কারণেই জেলেনস্কি সুর নরম করেছেন কিনা, তা স্পষ্ট নয়৷ যাই হোক, বৃহস্পতিবার টেলিফোনে জেলেনস্কি ও স্টাইনমায়ার প্রায় ৪৫ মিনিট কথা বলেন। সেই আলোচনার পর চ্যান্সেলর শলৎস ঘোষণা করেন, যে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক ‘অদূর ভবিষ্যতে’ কিয়েভ সফরে যাচ্ছেন। জার্মান সংসদের নিম্ন কক্ষ বুন্ডেসটাগের প্রেসিডেন্ট ব্যার্বেল বাসও সপ্তাহান্তে কিয়েভ সফরের ঘোষণা করেছেন। জার্মান প্রেসিডেন্টের দফতর জানিয়েছে, যে জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনায় স্টাইনমায়ার ইউক্রেনের প্রতি সংহতি, শ্রদ্ধাবোধ ও রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে সে দেশের মানুষের সাহসি সংগ্রামের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছেন। জেলেনস্কি স্টাইনমায়ার ও সরকারের সদস্যদের কিয়েভে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। জেলেন্সকি এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, যে তিনি স্টাইনমায়ারকে ইউক্রেনের প্রতি বিশাল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস নিজে এখনো ইউক্রেন সফরের কোনো পরিকল্পনার কথা জানান নি। ফ্রান্সের সদ্য পুনর্নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে তিনি কিয়েভ যেতে পারেন, এমন এক সম্ভাবনার গুজব শোনা গেলেও আপাতত এর সত্যতা যাচাইয়ের কোনো উপায় নেই। ক‚টনৈতিক মনোমালিন্য সত্তে¡ও শলৎস বার বার বলেছেন, যে তিনি ইউক্রেনের দুর্দিনে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তার প্রশ্নে কোনো আপোশ করতে প্রস্তুত নন। অস্ত্র সরবরাহ নিয়ে তাঁর দ্বিধা-দ্ব›দ্ব সম্পর্ক সংশয় সত্তে¡ও শলৎস শেষ পর্যন্ত একের পর এক সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের পরিকল্পনায় সম্মতি দিয়ে চলেছেন। বৃহস্পতিবার চেক প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে ইউক্রেনকে সোভিয়েত আমলের সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোর উদ্যোগ নিচ্ছে জার্মানি। এর বদলে চেক সেনাবাহিনীর আধুনিকীকরণের ক্ষেত্রে জার্মানি এক যোথ প্রকল্পে অংশ নিচ্ছে।