বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৩:২৬ অপরাহ্ন

আবারও অজানা শঙ্কায় গাজাবাসি : ইসরাইলের ঘোষনা

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৩

দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ এবার গাজায় কি অপেক্ষা করছে? চারদিনের যুদ্ধ বিরতি গতকাল শেষ হয়েছে। ইসরাইলি দখলদার বাহিনী গত দেড়মাস যাবৎ গাজায় ভয়াবহ নারকীয় তান্ডব চালিয়ে পনের হাজারের বেশী নিরস্ত্র ফিলিস্তীনিকে হত্যা করে যার মধ্যে শিশুর সংখ্যা ছয় হাজার। বর্বর বাহিনী ফিলিস্তীন জনগোষ্ঠীকে কেবল নিশ্চিহৃ করতে চাইছে না তারা শিশুদের কে হত্যা করে আগামী দিনের ফিলিস্তীনি জাতিগোষ্ঠীকে নির্মূল করতে চাইছে। গত দেড় মাসে এমন পরিস্থিতির উদ্ভব হয় যে গাজা ছিল আগুন জ্বলা একটি বিভিষিকাময় জনপদ। গতকাল যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ায় আবারও যে দখলদার বাহিনী গাজায় অব্যাহত ভাবে বিমান হামলা পরিচালনা করে গণহত্যায় মেতে উঠবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। ইতিমধ্যে দেশটির প্রধান মন্ত্রী নেতানিহানু বলেছেন, যুদ্ধ বিরতির পরে ইসরাইলি বাহিনী গাজায় অভিযান পরিচালনা করবে। ধারনা করা হচ্ছে বিগত দিনগুলোর হামলা অপেক্ষা এবারের হামলা আরও ভয়াবহ হতে পারে। গতকাল যুদ্ধ বিরতির শেষ দিনে গাজায় হামাসের হাতে বন্দী সতের ইসরাইলি মুক্তি দিয়েছে হামাস এবং ইসরাইলের কারাগারে আটক পঞ্চাশ জন ফিলিস্তীনিদের কে মুক্তি দিয়েছে। গত চার দিনে যুদ্ধ বিরতির দিনগুলোতে ইসরাইল একশত পঞ্চাশজন ফিলিস্তীনিকে মুক্তি দিয়েছে যার মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু এবং ফিলিস্তীনি মুক্তি সংগ্রাম হামাস পঞ্চাশ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে। দৃশ্যতঃ বিশ্বের অত্যন্ত ক্ষমতাশালী দেশ ইসরাইল কোন ভাবেই হামাসকে নির্মূল করতে না পেরে এবং হামাসের ও জিম্মিদের সন্ধান না পেয়ে অবশেষে কাতারের মধ্যস্থতায় হামাসের সাথে বন্দী বিনিময় চুক্তি করতে বাধ্য হয় যার প্রেক্ষাপটে চারদিনের যুদ্ধ বিরতি কার্যকর হয়। দখলদার ইসরাইলি বাহিনী যুদ্ধ বিরতির মাঝেও গাজার পশ্চিমতীরে গুলি বর্ষন করে। অন্ততঃ ছয়জন ফিলিস্তীনিকে হত্যা করে তাদের বর্বরতাকে প্রদর্শন করেছে। যুদ্ধ বিরতির মাঝে গাজায় হামাস বিশ্বাস ঘাতকতার বিচার কার্য করেছে। শনিবার গাজার একটি শরনার্থী শিবিরে অবস্থান করা ইসরাইলের দুই গোয়েন্দাকে চিহিৃত করেছে। উল্লেখিত দুই ফিলিস্তীনি ইসরাইলের পক্ষে দেশের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তৎপরতায় নিয়োজিত ছিলেন। হামাস সদস্যরা উক্ত দুই ফিলিস্তীনিকে চিহিৃত পরবর্তি প্রকাশ্যে বিচারের মুখোমুখি করে এবং বিচারের দুই গুপ্তচরকে ফাইরিং স্কোয়াডে মৃত্যুদ্বন্ড দেওয়া হয়। এখানেই শেষ নয় মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত দুই জনের লাশ গাজার একটি লাইটপোস্টে ঝুলিয়ে রেখে তাদের প্রতি অর্থাৎ লাশের প্রতি ঘৃনা প্রদর্শন করা হয়। দেশ প্রেমিক ফিলিস্তীনিরা এ সময় ঝূলন্ত লাশ কে উদ্দেশ্য করে বিশ্বাস ঘাতক হিসেবে চিৎকার করতে থাকেন। দুই লাশের ঝুলিয়ে রাখার ছবি এবং ধিক্কার জানানোর ভিডিও ফুটেজ বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে। এ দিকে গাজায় গত দেড়মাসে ইসরাইলি হামলায় ষাট জনের বেশী সাংবাদিক নিহত হয়েছে। যুদ্ধের খবর সংগ্রহ এবং স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন কারী সাংবাদিকরা যেন ইসরাইলের বর্বরতার দৃশ্য বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে না পারে সে জন্যই সাংবাদিকদেরকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারনা। মিশরের রাফাহ সীমান্ত দিয়ে গতকাল ও শতাধিক ত্রানবাহী গাড়ী গাজায় প্রবেশ করেছে। আন্তর্জাতিক মিডিয়া গুলোতে প্রকাশিত খবরা খবরে বলা হয়েছে জাতিসংঘে পরিচালিত ত্রান তৎপরতাও চলছে গাজায়। মিশর সরকারের পক্ষ হতে যুদ্ধ বিরতির সময় বর্ধিত করার বিষয়টি বলা হলেও ইসরাইলের বক্তব্য মিশরের বক্তব্যের বিপরীত। আরব দেশগুলো ইসরাইলের বিরুদ্ধে যে কোন সময়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে হামলা পরিচালনা করতে পারে এমন ধারনাও করা হচ্ছে। হামাসের শক্তি এবং সামর্থের উৎস্য কি? তা ইসরাইল উদঘাটন করতে যেমন পারেনি অনুরুপ হামাসের দেশপ্রেম, সাহস এবং বীরত্ব তাদেরকে আতঙ্কিত করেছে। গাজায় দৃশ্যতঃ আগামী দিনগুলোতে ভয়াবহ হামলার যে আশঙ্কা করা হচ্ছে তা কতটুকু ফিলিস্তীনিদের নির্মূল করবে তা নিয়ে বিশ্ব মিডিয়াগুলো বিভিন্ন মুখি খবর পরিবেশন করছে। গত দেড় মাসে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী গাজা উপত্যকায় চল্লিশ হাজার টন বিস্ফোরক ফেলেছে। আগামী কয়েক দশক যাবৎ গাজায় ভূমি আবহাওয়া এবং জলবায়ূ কতটুকু স্বাভাবিক থাকবে এটা বলা শঙ্কা ব্যতিত কিছু নয়। আজ হতে হয়ত গাজায় আবারও হামলা হবে অথবা প্রতি এক দিন যুদ্ধ বিরতির জন্য প্রতি দশ জন জিম্মিকে ফিলিস্তীনিরা মুক্তি দেবে এই শর্তে হয়ত আরও কয়েকদিন ইসরাইল যুদ্ধ বিরতি বজায় রাখতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com