এম এম নুর আলম ॥ প্রায় দুই মাস আশাশুনি উপজেলা ভূমি অফিসে নেই এসিল্যান্ড। দীর্ঘ সময় এসিল্যান্ডের অনুপস্থিতিতে দেখা দিয়েছে দাপ্তরিক জটিলতা। নামপত্তন (মিউটেশন) থেকে শুরু করে আটকে গেছে ভূমিসংক্রান্ত নানান কাজ। ফলে একদিকে যেমন বেড়েছে জনদুর্ভোগ, তেমনি কমেছে সরকারি রাজস্ব আয়। কবে যোগদান করবেন নতুন এসিল্যান্ড সে বিষয়টি জানে না কেউ। এসিল্যান্ড না থাকায় চলতি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। উপজেলা প্রশাসনের কাজ শেষ করে এসিল্যান্ডের দাপ্তরিক দায়িত্ব পালন করতে অনেকটাই হিমশিম খাচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এসিল্যান্ড অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ আগস্ট এসিল্যান্ড দীপা রানী সরকার বদলি আদেশ সহকারে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে যান। এর কয়েক দিনের মধ্যে তালা উপজেলার এসিল্যান্ড রুহুল কুদ্দুসকে আশাশুনিতে পোস্টিং দেওয়া হয়। কিন্তু তিনিও এই বদলির আদেশ পরিবর্তন করিয়ে অন্যত্র যোগদান করেছেন বলে জানা গেছে। এরপর থেকে অদ্যাবধি কোনো কর্মকর্তা যোগদান না করায় সমস্যা বেড়েই চলেছে। গত ৪২ দিনে নতুন কোনো এসিল্যান্ড না আসায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রনি আলম নূর অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ইউএনও হিসেবে অর্পিত গুরু দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ভূমি অফিসের দায়িত্ব পালন করা কষ্টকর। উপজেলার ১১ ইউনিয়নের ৯টি ভূমি অফিসের অধীন জনগণ তাদের প্রয়োজনীয় কাজ মেটাতে প্রতিদিন উপজেলা ভূমি অফিসে গিয়ে শূন্য হাতে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছে। উপজেলা ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা কুল্যা ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের জ্ঞানান্দর ঢালী জানান, আমি এক মাসের অধিককাল নামজারি আবেদন করেছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত ভূমি অফিস থেকে পেলাম না। তার জন্য আমি খুব অসুবিধায় পড়েছি। একই ইউনিয়নের আরার গ্রামের বিল্লাল হোসেন জানান, আমি একজন সাইকেল মিস্ত্রি। দীর্ঘ এক দেড় মাস ধরে একটা নামজারি করতে দিয়েছি কিন্তু আজ পর্যন্ত পেলাম না। রেজিস্ট্রি অফিসের জমি রেজিস্ট্রির জন্য নামজারি না হলে রেজিস্ট্রি করতে পারছি না। কোনো কায়দায় নামজারি করতে পারলাম না। করোর কাছে বলার জায়গা নাই। কোনোভাবে জমিটা বিক্রয় করতেও পারছি না। অপরদিকে, এই বিষয়ে আশাশুনি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ও দলিল লেখকদের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, মিউটেশন বন্ধ থাকার কারণে রেজিস্ট্রি কমে গেছে। এতে করে কমে গেছে সরকারি রাজস্ব আদায়। আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রনি আলম নুর বলেন, বর্তমানে আশাশুনিতে কোনো এসিল্যান্ড না থাকায়, আমি সহকারী কমিশনার ভূমির অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। ভূমি অফিসের সমস্ত কাজ চলছে। তবে এসিল্যান্ড না থাকায় আমার একার পক্ষে উভয় দপ্তর সামলানো কষ্ট কর হয়ে যাচ্ছে। নতুন একজন এসিল্যান্ড এখানে যোগদান করার কথা রয়েছে। তবে তিনি কবে যোগদান করবেন সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে জানেন না বলেও জানান তিনি।