বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
চলছে রস আনতে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি, সাতক্ষীরার ঐতিহ্যের ধারক খেঁজুর রস, গুড়, পাটালী কয়েকদিন পরেই মহাসমারোহে দেখা মেলবে রসের দেবহাটায় কবর থেকে লাশ উত্তোলন আশাশুনি জলবায়ু সহনশীল পানি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নীতিমালার বাস্তবায়নে কর্মশালা আশাশুনি বার্ষিক পুষ্টি কর্ম পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা কুমিরায় রাস্তার উপর থেকে সরকারী গাছ কাটার সময় আটক ১ বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক ও নার্স অ্যাসোসিয়েশনের আলোচনা সভা সমাজসেবায় বিশেষ অবদান রাখায় মানবাধিকার সম্মাননা পেলেন আলহাজ্ব শাহজাহান জমাদ্দার ডুমুরিয়ায় সোনালী ব্যাংকে খেলাপি ঋণ আদায় ও ঋণ বিতরণ বিষয়ক মতবিনিময় কালিগঞ্জে অসহায় দরিদ্র ব্যাক্তিদের মাঝে কম্বল বিতরণ কালিগঞ্জে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সক্ষমতা বৃদ্ধি বিষয়ক কর্মশালা

ওমিক্রনের সংক্রমণে আবারো নাজুক পরিস্থিতিতে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২২

এফএনএস : করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণে আবারো নাজুক অবস্থায় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। ইতিমধ্যে ওমিক্রণের সংক্রমণ রোধে বিভিন্ন দেশে বিধিনিষিধ চালু হয়েছে। আর দেশের রপ্তানি খাতে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ইতিমধ্যে কমে গেছে নতুন রপ্তানি আদেশ। ফলে রপ্তানি পণ্যের কাঁচামাল আমদানির জন্য ব্যাক টু ব্যাক এলসি খোলাও কমে গেছে। একই ভাবে কাঁচামাল আমদানিও হ্রাস পেয়েছে। ফলে সার্বিকভাবে পণ্য আমদানির এলসি খোলা কমেছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের পাশাপাশি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যেও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ওমিক্রনের কারণে দেশের প্রধান রপ্তানির বাজার ইউরোপ, আমেরিকার অনেক দেশে লকডাউন চলছে। ফলে ওসব দেশ থেকে নতুন রপ্তানির আদেশ কমে গেছে। ওই কারণে রপ্তানি পণ্যের কাঁচামাল আমদানি করতে ব্যাক টু ব্যাক এলসির খোলাও কমিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য আমদানিও কমেছে। কারণ ওমিক্রনের প্রভাবের বিষয়ে নিশ্চিত হতে না পারায় ব্যবসায়ীরা একটু ধীরে চলো নীতি গ্রহণ করেছে। কারণ আগে করোনার দুদফা আঘাতের ক্ষতি এখনো তাদের পক্ষে কাটিয়ে উঠা সম্ভব হয়নি। সূত্র জানায়, নভেম্বর পর্যন্ত দেশে আমদানি বেড়েছে। কিন্তু ওমিক্রনের প্রভাবে ডিসেম্বর থেকে আমদানি খাতে প্রবৃদ্ধির হার কমতে শুরু করেছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রপ্তানিমুখী শিল্পের কাঁচামাল আমদানির জন্য ২০ কোটি ডলারের ব্যাক টু ব্যাক এলসি খোলা হয়। আর সম্প্রতি তা ৫ কোটি ৫০ লাখ ডলারে নেমে এসেছে। ধারাবাহিকভাবে ব্যাক টু ব্যাক এলসি খোলা কমেই চলেছে। পাশাপাশি ব্যাক টু ব্যাক এলসির আওতায় রপ্তানিমুখী শিল্পের কাঁচামাল আমদানিও কমতে শুরু করেছে। যদিও নভেম্বর পর্যন্ত ওই খাতে আমদানি বেড়েছিল। কিন্তু ডিসেম্বর থেকে কমতে শুরু করেছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ১৫ কোটি ডলারের ব্যাক টু ব্যাক এলসির আওতায় আমদানি হয়েছিল। আর অতিসম্প্রতি তা মাত্র ৭ কোটি ৬৪ লাখ ডলারে নেমে এসেছে। মূলত রপ্তানিমুখী শিল্পের কাঁচামাল আমদানির জন্যই ব্যাক টু ব্যাক এলসি খুলতে হয়। সূত্র আরো জানায়, ওমিক্রনের প্রভাবে সার্বিকভাবে আমদানির এলসি খোলা কমেছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ১৩৬ কোটি ডলার এলসি খোলা হয়েছিল। কিন্তু সপ্তাহে মাত্র ৪৩ কোটি ডলারের এলসি খোলা হয়েছে। একই সময়ে আমদানি ১১৪ কোটি ডলার থেকে কমে ৫৭ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। সিমেন্টের কাঁচামাল ক্লিংকার আমদানির জন্য ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ২ কোটি ২১ লাখ ডলারের এলসি খোলা হয়েছিল এবং ৯৬ লাখ ডলারের আমদানি হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে এলসি খোলা হয়েছে ৮২ লাখ ডলারের এবং ১ কোটি ২৩ লাখ ডলারের আমদানি হয়েছে। বিপি শিট আমদানির জন্য ডিসেম্বরে ৩৩ লাখ ৫০ হাজার ডলারের এলসি খোলা হলেও এখন তা ২ লাখ ডলারের নেমে এসেছে। রড তৈরির কাঁচামাল স্ক্র্যাপ ভেসেল বা পুরোনো জাহাজ আমদানির জন্য ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ১ কোটি ৯০ লাখ ডলারের এলসি খোলা হলেও এখন ওই খাতে কোনো এলসি খোলা হয়নি। একই সময়ে তুলা আমদানির এলসি ৬ কোটি ৪৫ লাখ ডলার থেকে ৩ কোটি ২৩ লাখ ডলারে নেমে এসেছে। সিনথেটিক বা মিক্সড ইয়ার্ন আমদানির এলসি ১ কোটি ৭৪ লাখ ডলার থেকে কমে ১ কোটি ১৩ লাখ ডলার হয়েছে। সুতা আমদানির এলসি ৬ কোটি ৫১ লাখ ডলার থেকে কমে ২ কোটি ৯৩ লাখ ডলার হয়েছে। টেক্সটাইলের কাপড় আমদানির এলসি ২ কোটি ৭৫ লাখ ডলার থেকে কমে ৪ লাখ ডলারে নেমেছে। ২ কোটি ডলার থেকে কমে ৫৫ লাখ ডলারে নেমেছে টেক্সটাইল এক্সেসরিজের এলসি খোলা। এদিকে বিদ্যমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার দ্বিতীয় ধাক্কার পর এখন ওমিক্রনের সংক্রমণে আবারো ব্যবসা-বাণিজ্যে নাজুক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এমন অবস্থায় অনেক ব্যবসায়ীরই ঋণের কিস্তি পরিশোধের সক্ষমতা নেই। ঋণ পরিশোধের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক সময় না বাড়ালে ঋণগ্রহীতাদের অনেকেই খেলাপি হবেন, যা দীর্ঘমেয়াদে দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর হবে। ওমিক্রনের সংক্রমণ ঠেকাতে বিধিনিষধ আরোপের প্রথম ধাক্কা পর্যটন খাতে লেগেছে। কক্সবাজারসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকাগুলোতে পর্যটকদের আগমন কমে গেছে। ফলে ওসব এলাকায় হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ব্যবসায় নেতিবাচক অবস্থা দেখা দিয়েছে। সরকার নতুন আইন করেছে হোটেলে থাকতে ও খেতে টিকার সনদ দেখাতে হবে। কিন্তু বাস্তবে ওই সনদ অনেকেরই নেই। অন্যদিকে বিদ্যমান অবস্থা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানান, ওমিক্রনের প্রভাবে রপ্তানির আদেশ আগের চেয়ে কমেছে। তবে আগের যেসব আদেশ আছে সেগুলো কেউ বাতিল করেনি। ওসব অর্ডার দিয়েই এখনো কারখানা চলছে। বিদেশ থেকে আগের রপ্তানির মূল্য দেশে আসা এখন কমে গেছে। কারণ অমিক্রনের প্রভাবে অনেক দেশে আবার লকডাউন দিয়েছে। যে কারণে নেতিবাচক অবস্থা দেখা দিয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com