শাহজাহান সিরাজ, কয়রা (খুলনা) থেকেঃ সমুদ্র উপকূলবর্তী খুলনানর কয়রা উপজেলায় ঘনঘন সামুদ্রিক ঘূণিঝড়ের কারনে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষকরা। ২০২১ সালে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও জাওয়াদ মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে বয়ে যাওয়ায় বেশি ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছে আমন চাষীরা। যে কারনে উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় চাষী তার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বোরো ধান চাষে মেতে উঠেছে। মাঘের শীত বাঘের গায় সে শীত উপেক্ষা করে সকাল সকাল কোদাল হাতে বাড়ী থেকে বেরিয়ে পড়েছেন কৃষকরা। ইরি বোরো তৈরির কাজ শেষ। তাই তারা চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এমন চিত্র দেখা গেছে উপজেলায়। উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, বিগত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে ব্যাপকহারে বোরো চাষ শুরু করেছে কৃষকরা এবং প্রায় ১০ হাজার বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের ধানের আবাদ হচ্ছে। উলেখ্য ২০২১ সালে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে উপজেলার মহারাজপুর বাগালী, কয়রা সদর, উত্তর ও দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের একটি বিশাল এলাকা লবণ পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারনে চাষীদের হাজার হাজার বিঘা জমির আমনের বীজতলা নষ্ঠ হয়। কিন্তু তার পরও কৃষকরা অন্য এলাকা থেকে বীজতলা সংগ্রহ করে বিলম্বে হলেও কিছু কিছু এলাকায় আমনের চারা রোপন করে। তবে মরার উপর খাড়ার ঘা স্বরুপ আমন ধান ফলনের শুরুতেই আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ। ফলে কৃষকরা আশানুরুপ ফসল ঘরে তুলতে না পারায় অনেকের ঘাড়ে চেপেছে ঋনের বোঝা। যে কারনে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক আমনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নতুন নতুন জমিতে বোরো আবাদের চাষ শুরু করেছেন। অন্যদিকে সম্প্রতি স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ¦ মোঃ আকতারুজ্ঝামান বাবু সম্প্রতি কয়রা উপজেলা পরিষদে সকল ইউপি চেয়ারম্যানদের নিয়ে এক বৈঠকে লবণ পানির ঘের বন্ধ করে মিষ্ঠি পানির ঘের করার অনুরোধ জানিয়েছেন। সে জন্য ইতোমধ্যেই অনেক এলাকায় জমি মালিকরা ধান চাষ করার প্রস্তুতি নিয়েছেন এবং কিছু কিছু লবণ পানির ঘের ছিল এমন জমিতে পরিক্ষা মুলক লবণ সহিষ্ণু জাতের বোরো ধান রোপনও করেছেন। এ বিষয় মহারাজপুর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক, হাবিবুর রহমনি ঢালী, শাহাবাজ আলী, মোতালেব মোড়ল, আঃ হক, ছলেমান সরদার, আঃ হালিম বিশ^াস, মফিজুল সরদার, শ্রীরামপুর গ্রামের আঃ হালিম খোকন, মদিনাবাদ গ্রামের আলতাফ হোসেন, মনিরুল ইসলাম, বামিয়া গ্রামের ভবতোষ মন্ডল সহ একাধিক কৃষক জানায়, বড় বড় খাল গুলির ইজারা বন্ধ করে খনন করা হলে সমগ্র উপজেলায় ব্যাপক হারে বোরো আবাদের বৃদ্ধি পেত। তারা বলেন, প্রতি বছর চিংড়ী চাষিরা ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্থ’ হওয়ায় অনেকেই আমন ও বোরো ধান চাষে মেতে উঠেছে। জানা গেছে. সংসদ সদস্য ও ইউপি চেয়ারম্যানগণ সরকারের একটি বড় অর্থ দিয়ে কৃষকদের জন্য স্বল্প খরচে গভীর স্যালো এবং সেচ মিটারের ব্যবস্থা করবেন। উপজেলা কৃষি অফিসার আসাদুজ্জামান জানান, লবণ পানির চিংড়ী ঘের বন্ধ হলে উপজেলার প্রতিটি এলাকায় আমনসহ বোরো ধানের চাষ বৃদ্ধি পাবে এবং বর্তমান ধানের বাজার বৃদ্ধি থাকায় চাষীরা চলতি মৌসুমে বোরো চাষ বাড়াতে শুরু করেছে।