এফএনএস: মধ্যযুগীয় কায়দায় জমি দখলকে কেন্দ্র করে দেশের কোথাও কোথাও নৃশংস হত্যার ঘটনা সংগঠিত হচ্ছে। তেমনি একটি মর্মান্তিক ও নৃশংস ঘটনা ঘটেছে খুলনার তেরখাদা উপজেলার আদালতপুর গ্রামের বাবলু শেখের (৫০) বাড়িতে। বাবলু শেখের বাড়িতে প্রবেশ করে টেটা, বলম, রামদা, শরকি, ঝুপিসহ অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে পালিয়ে যায় প্রতিপক্ষের লোকজন। হামলায় প্রতিপক্ষের দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে বাবলু শেখের মৃত্যু হয়। এর পর এ ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তদন্তের একপর্যায়ে গত সোমবার রাতে ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানার জিরাবো এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামি মুকুল শেখকে (৩৭) গ্রেপ্তার করে সিআইডি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সিআইডির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার মুকুল শেখ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছেনÑ তাদের সঙ্গে নিহত বাবলু শেখদের জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। সেই বিরোধের জেরে মুকুল শেখ অন্যান্য সহযোগীসহ গত ৪ মে সকাল ১০টায় টেটা, বলম, রামদা, শরকি, ঝুপিসহ অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাবলু শেখের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় বাবলু শেখ তার ছেলে নাজমুল শেখ কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুকুল শেখের ঝুপির কোপে গুরুতর জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় অন্যান্য আসামিরা বাবলুর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য এলোপাতাড়ি পিটিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে সরে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে আশপাশের লোকজন এসে রক্তাক্ত অবস্থায় বাবলু শেখকে উদ্ধার করে তেরখাদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ হত্যাকান্ডের পর নিহত বাবলু শেখের ছেলে নাজমুল শেখ বাদী হয়ে খুলনার তেরখাদা থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। ঘটনাটি দেশজুড়ে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে প্রচারিত হয়। এরপর বিভিন্ন তদন্ত সংস্থার পাশাপাশি সিআইডির এলআইসি শাখা ছায়া তদন্ত শুরু করে। ঘটনাস্থল ও আশপাশ এলাকার বিভিন্ন উৎস থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সরেজমিনে সংগ্রহ করা হয়। পরবর্তীতে সংগৃহীত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এলআইসির একটি চৌকস টিম গত সোমবার রাতে ঢাকার আশুলিয়া থানার জিরাবো এলাকায় অভিযান চালিয়ে মুকুল শেখকে গ্রেপ্তার করে।