শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন

গাজায় দুই দিনের হামলায় দুইশত চল্লিশ ফিলিস্তীনিকে হত্যা করেছে ইসরাইল

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় রবিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৩

আবারও হত্যার শিকার শিশু ও মহিলারা ঃ গাজা আবার লাশের গন্ধ ঃ আগুনের লেলিহান শিখাঃ
ইসরাইলের ভূ-খন্ডে হামাসের পাল্টা হামলা ঃ হিজবুল্লাহ ও ইহুদী সেনাদের গোলাগুলি ঃ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইল সফরে ঃ যুদ্ধবিরতিতে আশাবাদী কাতার ঃ বৃটেনে ইসরাইল বিরোধী বিক্ষোভ
দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ দখলদার ইসরাইলি বাহিনী যুদ্ধ বিরতি শেষ হতে না হতেই এবং আরব যুদ্ধ বিরতি না বাড়িয়ে গত দুই দিন যাবৎ গাজায় নির্বিচারে বিমান হামলা পরিচালনা করছে। ছয় দিন গাজা ছিল অনেকটা শান্ত, তবে ফিলিস্তীনিদের আতঙ্ক কাটেনি, নিরস্ত্র, নিরীহ, অসহায় ফিলিস্তীনিদের ধারনা ছিল যুদ্ধ বিরতির মেয়াদ না বাড়লে বর্বর ইসরাইল আবারও তাদের বর্বরতা প্রদর্শন করে গণহত্যায় মেতে উঠবে আর সেটাই সামনে আসলো। কাতার ও মিশর ইসরাইল ও হামাসের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিলো যুদ্ধ বিরতির মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য কিন্তু ইসরাইল যুদ্ধ বিরতির মেয়াদ না বাড়িয়ে গণহত্যায় মেতে উঠেছে, যে গাজায় লাশ আর লাশের গন্ধ ছিল সরব, যে গাজা ছিল আগুনের লেলিহান শিখায় জলন্ত, ছয় দিনের শুন্যতা হয়ে উঠেছিল সুনশান নিরব সেই গাজা আবারও লাশ আর লাশের মিছিল স্বজন হারানো ফিলিস্তীনিদের কান্না। শুক্রবার ভোর হতে না হতেই দখলদার বর্বর ইসরাইল বাহিনী গাজায় এক সাথে বিমান ও স্থল হামলা শুরু করে। গতকাল পর্যন্ত নিহত ফিলিস্তীনির সংখ্যা দুইশত চল্লিশ জন এবং হামলায় মারাত্মক ভাবে আহত হয়েছে পাঁচশতাধীক। ইসরাইলিদের বিমান হামলঅয় গাজায় অন্তত বিশটির বেশী বসতবাড়ী ধ্বংস স্তুপে পরিনত হয়েছে। ইসরাইলের বিমান হামলার জবাব তাৎক্ষনিক ভাবে দিয়েছে হামাস তারা ইসরাইলের ভূ-খন্ডে রকেট ও মার্টারসেল নিক্ষেপ করেছে এবং হামাসের উক্ত হামলায় অন্তত পাঁচ ইসরাইলি সেনা মারাত্মক ভাবে আহত হয়েছে ও সামরিক যানবাহন ধ্বংস হয়েছে। যুদ্ধ বিরতি বৃদ্ধি না করা ও যুদ্ধ বিরতি ভঙ্গ করার বিষয়ে ইসরাইল হামাসকে দায়ী করেছে অন্যদিকে হামাস ইসরাইলকে অভিযুক্ত করে এক টেলিগ্রাম বার্তা প্রেরন করেছে বন্দী বিনিময় চুক্তিতে ইসরাইলের দাবী ছিল সেনাদের অন্যদিকে হামাসদের দাবী ছিল হামাস যোদ্ধাদের। ইসরাইল গত ছয় দিনে যে সকল ফিলিস্তীনিকে গ্রেফতার করেছে তাদের মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানায় ইসরাইল দৃশ্যতঃ যুদ্ধ বিরতি ও বন্দী বিনিময় চুক্তি ইসরাইলই ভঙ্গ করেছে বন্দী চুক্তিমোতাবেক গত ছয় দিনে হামাস আশি জন ইসরাইলি নাগরিক ও দুইশত চল্লিশ জন ফিলিস্তীনি মুক্ত হয়েছে। হামাস অভিযোগ করে বলেছে তাদের হাতে আটক ইসরাইলি সেনা গিলাদ শাচিলের মুক্তির বিনিময়ে মুক্ত হওয়া ফিলিস্তীনিদেরকে পুনরায় গ্রেফতার করেছে ইসরাইলি সেনারা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর রাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিন্দেন যে সময়ে ইসরাইল সফর করছে সেই সময় গুলোতে ইসরাইল পুনরায় গাজায় বিমান হামলা করে নিরস্ত্র ফিলিস্তীনিদের কে হত্যা করছে যা আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিনত হয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস বলেছেন গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর আবারও দফায় দফায় বিমান হামলা ও হত্যাকান্ডে তিনি অন্তত মর্মাহত। কাতারের পক্ষ হতে বলা হয়েছে আমরা যুদ্ধ বিরতির মেয়াদ বৃদ্ধির লক্ষে পক্ষগুলোকে নিয় দফায় দফায় বৈঠক করলেও কার্যকর সিদ্ধান্তে পৌছাতে ব্যর্থ না তবে কাতারের পক্ষ হতে যুদ্ধ বিরতির বিষয়টি কার্যকর করার প্রচেষ্টা চালছে। গতকালের ইসরাইলের হামলা ধরন ও পদ্ধতি ছিল ভিন্ন প্রকৃতি বিমান ও স্থল বাহিনীর পাশপাশি ইসরাইলের নৌ বাহিনীর সদস্যরাও হামলায় তথা ফিলিস্তীনি হত্যা মিশনে নামে। গতকালের হামলার লক্ষ্য বস্তু ছিল খান ইউনুস এলাকা, গত দেড় মাসে গাজায় বিমান হামলা ও স্থল হামলায় পনের হাজারে অদিক ফিলিস্তীনিকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে যার মধ্যে অন্তত সাত হাজার শিশু, এই সময় গুলোতে হামাসের প্রতিরোধ হামলায় ইসরাইলের ষাটের অধিক সেনা নিহত হয়েছে যাদের মধ্যে অন্তত এক ডজন সামরিক বাহিনীর উর্দ্ধতন কর্মকর্তা। পৃথিবীর কোন দেশে কোন অঞ্চলে এতো অধিক সংখ্যক শিশু হত্যার নজির স্থাপন করলো কেবল ইসরাইল। জাতিসংঘ ইতিমধ্যে বলেছে গাজা শিশু কবরস্থানে পরিনত হওয়া এক শহরের নাম। গত শুক্রবার ইসরাইল গাজায় নির্বিচারে বিমান হামলার পর পরই হামাস সদস্যরা পাল্টা হামলা চালানোর পাশাপাশি ইসরাইলের ভু-খন্ডে হামলা চালায়। এ সময় ইসরাইলের রাজধানী তেল আবিব সহ গুরুত্বপূর্ণ শহর গুলোতে সাইরেন বাঁজতে থাকে। গতকাল হতে আবারও হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা ইসরাইলের ভূ-খন্ডে ক্ষেপনাস্ত্র হামলা শুরু করেছে। গতকাল দিনব্যাপী হিজবুল্লাহ ও ইসরাইলি সেনাদের মধ্যে চলছে তুমুল গোলাগুলি। এদিকে ইসরাইল গাজায় হামলা চালানোর পর পরই একটি জরিপ সংস্থা ইসরাইলিদের মনোভাব জানতে চাইলে সংখ্যাগরিষ্ঠ ইসরাইল মনে করেন যুদ্ধ বিরতি দীর্ঘস্থায়ী হওয়া জরুরী। গতকালও ইসরাইলা দেশটির প্রধানমন্ত্রী সেনাতিহায়ু সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে। উত্তর গাজা এবং পশ্চিমতীরে হামলার পর এবার ইসরাইলি সেনারা দক্ষিনে অগ্রসর হচ্ছে। ত্রান বাহি ট্রাক গুলো প্রবেশের ক্ষেত্রে এখনও বাঁধা দেইনি ইসরাইল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর এবার বৃটেনের রাজধানী লন্ডনে গতকাল ইসরাইলের মানবতা বিরোধী, গণহত্যার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে। যতই দিন যাচ্ছে ততোই ইসরাইল পুরো বিশ্ব ব্যবস্থা হতে বিচ্ছিন্ন হতে চলেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com