শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:২৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে গেছে হাসিনার স্বৈরতন্ত্র: কূটনীতিকদের ইউনূস ভারতে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ-হত্যার প্রতিবাদে শাটডাউন কর্মসূচির ঘোষণা চিকিৎসকদের নলতা আহসানিয়া মিশন রেসিডেনসিয়াল কলেজের অধ্যক্ষের দুর্নীতি ॥ উত্তাল নলতা ॥ শিক্ষক কর্মচারীরা মতবিনিময় করলেন ডাঃ শহিদুল আলম ও চেয়ারম্যান আজিজুর রহমানের সাথে মহামারীর দ্বারপ্রান্তে গাজা আলোচনায় থাইল্যান্ড ॥ বন্দী থাকসিন মুক্ত হরিনগর বাজারে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদের মাঝে নগদ অর্থ প্রদান পাইকগাছায় একটি বাঁশের সাঁকো পারাপারে এলাকাবাসীর চরম ভোগান্তি মাথাভারি হচ্ছে প্রশাসনের ॥ বাড়ছে সরকারের দু:চিন্তা ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ এর পদত্যাগ দাবীতে-মানববন্ধন চাম্পাফুল ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত

জেলা রেজিস্ট্রার নুর নেওয়াজের দুর্নীতির সাতকহন ॥ দুদকে অভিযোগ

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

জি এম শাহনেওয়াজ ঢাকা থেকে ॥ ফাঁদ পেতে ও নানা খাত তৈরি করে অসৎ উপায়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন শেরপুরের জেলা রেজিস্ট্রার নুর নেওয়াজ বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে । ঘুষ আদায়ের খাতসমূহ হচ্ছে, জেলার অধীনস্থ সাব-রেজিস্ট্রার কাছ থেকে জোরপূর্বক দলিল প্রতি দেড়শ টাকা আদায়, দলিলের নকল প্রতি দুইশ থেকে তিনশ টাকা আদায়, বিদ্যুৎ বিলের নামে দলির প্রতি অর্থ আদায়, মোহরার থেকে অফিস সহকারী ও নকল নবীশদের পদোন্নতির নামে টাকা আদায় এবং জমির শ্রেণি ও দলিলের পাতা পরিবর্তন। জেলা রেজিস্ট্রারের নানা দুর্নীতি-অনিয়ম ও বিতর্কিত কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে তার অধীনস্থ কারো মূখ খোলার সাহস নেই বলে জনশ্রুতি আছে। প্রতিবাদ করার কেউ না থাকায় অনেকটা বেপরোয়া এখন তিনি। সংক্ষুদ্ধ ও বঞ্চিত একটি পক্ষ এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে ন্যায় বিচার পেতে অভিযোগ করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। দুর্নীতি বিরোধী এই প্রতিষ্ঠান অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তের কথা ভাবছে। গত মাসের ২১ তারিখে দুদক চেয়ারম্যান বরাবর এই অভিযোগ দাখিল করেন সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের একজন নকল নবীশ। সব অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করেছেন। রাগান্বিত হয়ে এ প্রতিবেদককে শেরপুরের জেলা রেজিস্ট্রার নুর নেওয়াজ বলেন, এখন আমার কি করার আছে। বলেন, আপনাকে আমি কি চিনি? আপনি সাংবাদিক বললেই কি হবে না কি?। এক পর্যায়ে বলেন, আপনি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দুদক থেকে পান বা মঙ্গলগ্রহ থেকে পান; আমার অফিসে বিমানে কিংবা উড়ে পারেন আসেন; আমি বক্তব্য। উত্তেজিত হয়ে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি। দুদকে করা অভিযোগ থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, শেরপুরের জেলা রেজিস্ট্রার নুর নেওয়াজ এখানে বদলি হয়ে আসার পর থেকেই নানা খাত দেখিয়ে বহুমূখী পন্থায় দুর্নীতির জাল বিছিয়ে দেন। প্রথম টার্গেট করেন তার অধীনস্থ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসগুলোকে। সেগুলো হচ্ছে, সদর উপজেলা, নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতি ও নকলা শ্রীবদ্দী উপজেলা। এই অফিসগুলো থেকে প্রতিটি দলিলের বিনিময়ে দেড়শ টাকা উৎকোচ নেয়ার ঘোষণা দেন তিনি। একই সঙ্গে সদর রেকর্ড রুম ও জেলার ৫টি রেজিস্ট্রি অফিসেই তিনি দলিলের নকল প্রতি সাড়ে তিনশ টাকা আদায় করেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। এসব অফিসে প্রতিদিন গড়ে আনুমানিক ৪০০-৫০০টি দলিল রেজিস্ট্রি ও সম-পরিমাণ নকল উঠানো হয়, যা অভিযোগে তুলে ধরা হয়েছে। এসব খাত থেকে তার দৈনিক আয় দুই লাখ টাকার বেশি। এদিকে, বিদ্যুৎ বিলের নামে দলিল প্রতি একশ টাকা নিলেও সরকারি কোষাগারে কম দেখিয়ে এখাত থেকেও মাসে মোটা অংকের টাকা আত্নসাৎ করেন বলেও ওই রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। মোহরার থেকে অফিস সহকারী পদে পদোন্নতি দিয়ে এখান থেকেও অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। একই সঙ্গে শ্রীবদ্দী সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের এক নকল নবীশদের পদোন্নতি বাগিয়ে নেন বড় অংকের টাকা। আবার নকল নবীশদের গ্রেডেশন তালিকা করার নামে তাদের কাছ থেকে জনপ্রতি অর্ধ লাখ করে টাকা গ্রহণ করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, সুচতুর ও মতলববাজ এই কর্মকর্তা সাবেক আইজিআর খান মো. আব্দুল মান্নানের মেয়াদে ভূয়া অনুমোদন পত্রের ভিত্তিতে এক ডজন নকল নবীশকে তাদের নিয়োগ বৈধ করার ধোঁয়া তুলে হাতিয়ে নিয়েছেন মোটা অংকের টাকা। এভাবে, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে নিরীক্ষা ও পরিদর্শনের নামে অর্থ বাণিজ্য করেন নুর নেওয়াজ বলেও অভিযোগ রয়েছে। একই ভাবে, – সারপ্রাইজ ভিজিটে গেলে এক লাখের নিচে নামেন না তিনি। আবার তিনি জেলা রেজিস্ট্রার কর্মস্থলের তয় তলায় একটি কক্ষে খণ্ডকালিন অবস্থানের জন্য বরাদ্দ রেখেছেন। সব সময় ময়মনসিংহের নিজ বাসভবনে অবস্থান করেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন জমির শ্রেণি ও দলিলের পাতা পরিবর্তন করে। তার এই ঘুষ বাণিজ্যের জন্য শ্রীবদ্দী অফিসের নকল নবীশ রফিকুল ইসলাম নিজেও আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। এই রফিকের ধানমন্ডিতে নিজস্ব ফø্যাট ও দোকান রয়েছে বলেও অভিযোগে উঠে এসেছে। জেলা রেজিস্ট্রারের তল্লীবাহক হওয়ায় রফিকের নিজ কর্মস্থলে খুব বেশি যাওয়া লাগে না। এই কর্মকর্তাকে সার্বক্ষণিক দেখভালোর দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। আবার নুর নেওয়াজ বিদেশ ভ্রমণে গেলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন মনে করেন না। এ নিয়েও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তার সম্পর্কের টানাপোড়েন রয়েছে। এর আগে টাঙ্গাইলের বাসাইলেও চাকরির সুবাধে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার তকমা পান তিনি। আর শেরপুরে এসে দুর্নীতি স্বর্গরাজ্যে গড়ে তুলেছেন। এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে অপসারণের জন্য সরকার দলীয় হুইপ তার উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও অদৃশ্যে কারণে ওই তদন্তটি আলোকমুখ দেখিনি। বহাল তবিয়তে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন নুর নেওয়াজ। এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ঘুষ দুর্নীতি বন্ধে দুদকের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি অভিযোগ কারীর।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com