দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ ইসরাইল বাহিনীর নৃশংসতা থামছে না। গাজার সর্বত্র মৃত্যুফাঁদ আর মৃত্যু আতঙ্ক। প্রতিটি প্রান্তরে দখলদার বাহিনীর নির্মম, নিষ্ঠুর হত্যাকান্ড চলছে তো চলছেই। এক অন্ধকার বিভিষিকাময় পরিস্থিতি বিরাজমান গাজা উপত্যকায়। যেখানে মৃত্যুই শেষ কথা, মৃত্যু প্রতিনিয়ত প্রতিমুহুর্ত গাজার অধিবাসিদেরকে ডাকছে। হামলায় প্রাণ যাচ্ছে ফিলিস্তিনিদের সেই সাথে ক্ষুধার যন্ত্রণায় প্রতিনিয়ত, প্রতিমুহুর্ত গাজাবাসি মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে, পুরো গাজা উপত্যকায় পানির অভাব এতটুকু বিপর্যয়কর পরিস্থিতির অবতরনা ঘটেছে যে সুপেয় পানির জন্য লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। যখনই একটি গাড়ী দেখছে ফিলিস্তিনিরা তখনই হুড়মুড় করে ত্রানবাহী যানবাহনটি ঘিরে রাখছে তথা ঘিরে ধরছে। ইতিমধ্যে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী ঘোষনা দিয়েছে যে আসছে রমজান মাসেও ফিলিস্তিনিদের উপর হামলাও হত্যাকান্ড অব্যাহত গতিতে চলবে। গতকাল ও কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা খবর দিয়েছে যে, মিশরের রাজধানী কায়রোতে হামাস ইসরাইল যুদ্ধ বিরতি নিয়ে আলোচনা চলছে। ফিলিস্তিনি মুক্তি সংগ্রামের এই সংগঠনটির প্রধান ইসমাইল হানিয়া মিশরের রাজধানী কায়রোতে অবস্থান করছে। যে কোনা মুহুর্তে যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব কার্যকর হতে পারে এমনটিতে প্রচার প্রচারনা চলছে। এদিকে হামাস এর সশস্ত্র শাখা আল কাসেম বিগ্রেড তাদের নিজস্ব টেলিগ্রাম বার্তায় জানিয়েছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর হামলা প্রতিমুহুর্তে মৃত্যুমুখে নিরীহ ফিলিস্তিনিরা। প্রাণ বাঁচতে ঘরের বাইরে বের হলেও মৃত্যু এবং ঘরের মধ্যে অবস্থানকরলেও মৃত্যু পুরো জনপদকে তারা মৃত্যুপুরীতে পরিনত করেছে। এরই মধ্যে বিশ্ব খাদ্যসংস্থা গাজায় খাদ্য বিতরন কর্মসূচি বাতিল করায় ফিলিস্তিনিদের বেঁচে থাকা অধিকতর কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এদিকে হামাস এর পক্ষ হতে অপর এক টেলিগ্রাম বার্তায় বলা হয়েছে দখলদার ইসরাইলের অব্যাহত হামলা ও হত্যাকান্ডের পাশাপাশি রাফা, গাজা উত্তর ও দক্ষিন এলাকায় ফিলিস্তিনিদের জন্য খাদ্য সরবরাহে বাঁধা প্রদানকরা হচ্ছে। এমনকি চিকিৎসা সামগ্রী নিতেও বাঁধা প্রদান করা হচ্ছে যে কারনে সাত লাখের অধিক ফিলিস্তিনিদের জীবন ধারনে ও বেঁচে থাকায় চরম অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। হামাস আরও বলেছে আরব বিশ্ব এবং বাকি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিরবতা সন্দেহজনক ও হতাশাজয়, হামাস অপর এক আবেগী পোষ্টে বলেছে ফিলিস্তিনিরা এখনো এই আশা নিয়ে বেঁচে আছে যে তারা এই পৃথিবীতে এমন একজনকে খুজে পাবেন যিনি তাদের আর্তনাদ শুনবেন এবং তাদের পাশে দাঁড়াবেন। এদিকে আন্তর্জাতিক আদালতে নরওয়ে ফিলিস্তিনি তথা স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রগঠনের পক্ষে অবস্থান নিলেন। আন্তর্জাতিক আদালতে নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এমপেন বার্থ এইড বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের উপর যে অবিচার করা হচ্ছে তা বন্দ করতে হবে। এবং একটি দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানই ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদেরকে সংঘাতের একমাত্র সমাধান। তিনি আরও বলেন বিশ্বের চোখ বর্তমান সময়ে গাজার ভয়ঙ্কর যুদ্ধের দিকে এই যুদ্ধে প্রতিনিয়ত ফিলিস্তিনিরা নির্মম নিষ্ঠুর হত্যকান্ডের শিকার হচ্ছে তো হচ্ছেই। তাদের জীবন পরিপূর্ণ বিপন্ন। ইসরাইলের জেলখানায় আটক ফিলিস্তিনিদের উপর নির্মম নির্যাতন পরিচালনার অভিযোগ নতুন নয়। এদিকে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যরা গাজা শহরের ঢেইর এলাকায় বোমা হামলা চালিয়ে একই বাড়ীর তেইশ জন নিহত হয়েছে। দেইর আল-বালাহ এলাকায় উক্ত হামলায় ফিলিস্তিনিদের জনপ্রিয়কৌতুক অভিনেতা মাহমুদ যুয়াইতারের মারাত্মক ভাবে আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আন্তর্জাতিক আদালতে ফিলিস্তিনির পক্ষে আবেদন কারীরা একাত্বতা প্রকাশ করায় দৃশ্যতঃ ইসরাইল অনেকটা একঘরে হয়ে পড়েছে। ব্রাজিলের সাথে ইসরাইলের সম্পর্ক অত্যন্ত তলানীতে পৌছেছে। ইসরাইলের বিরুদ্ধে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুনার বক্তব্য ছিল নির্যাতিত হত্যাকান্ডের শিকার ইসরাইলিদের পক্ষে। এদিকে হুতিদের বহরে সাব মেরিনের সংযোজন এবং অতিরিক্ত দুই লাখসেনার অন্তর্ভূক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ ইরসাইলের জন্য উদ্বেগের কারন হয়েছে। হুতিরা ঘোষনা দিয়েছে যতদিন না পর্যন্ত ইসরাইল গাজায়হামলা বন্ধ না করবে ততোদিন পর্যন্ত ইসরাইলের ভূ-খন্ড ও সাগরে ইসরাইল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের জাহাজে হামলা চলবে। হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা গত দুই দিন যাবৎ ব্যাপক ভিত্তিক ইসরাইলি হামলা চালাচ্ছে।