সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:৩৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
সংসদ নির্বাচনে আ’লীগ প্রার্থী আতাউল হক দোলনের নির্বাচনীয় কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত বেগম রোকেয়া দিবসে আলোচনা সভা ও সম্মাননা স্মারক প্রদান কপিলমুনিতে মুক্ত দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত আশাশুনিতে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালিত আশাশুনিতে বেগম রোকেয়া দিবস পালিত আশাশুনিতে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস উপলক্ষে মানববন্ধন ও আলোচনা সভা কয়রায় আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস পালন বেগম রোকেয়া দিবসে আলোচনা সভা ও শ্রেষ্ঠ সাত জয়িতাকে সম্মাননা প্রদান আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত দাকোপে আর্ন্তজাতিক দূর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত

ফেসবুককে অবশ্যই রোহিঙ্গাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে: অ্যামনেস্টি

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২

এফএনএস বিদেশ : রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি ঘৃণামূলক বক্তব্য রোধে ব্যর্থ হওয়ায় ফেসবুকের প্রধান কোম্পানি মেটাকে সমালোচনা এবং কইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ‘দ্য সোশ্যাল অ্যাট্রোসিটি: মেটা অ্যান্ড দ্য রাইট টু রেমেডি ফর দ্য রোহিঙ্গা’ শীর্ষক প্রতিবেদনে সংস্থাটি দাবি করেছে যে, ফেসবুকের অ্যালগরিদম সিস্টেম মিয়ানমারে ক্ষতিকারক রোহিঙ্গাবিরোধী কন্টেন্ট প্রসারে ভ‚মিকা রেখেছে, কিন্তু মাধ্যমটি এখনও এ নিয়ে কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেন, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর জাতিগত নির্মূল অভিযানের অংশ হিসেবে রোহিঙ্গাদের হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ ও হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে বাস্তুচ্যুত করা হয়। নৃশংসতার দিকে অগ্রসর হওয়া মাস ও বছরগুলোতে ফেসবুকের অ্যালগরিদম রোহিঙ্গাদের প্রতি ঘৃণার ঝড়কে তীব্র করে তুলেছিল যা চলমান বিশ্বের সহিংসতায় অবদান রাখে। তিনি আরও বলেন, যখন মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে, তখন মেটা ঘৃণা আবর্তনমূলক অ্যালগরিদমের কারণে লাভবান হচ্ছিল। এর দায়ভার অবশ্যই মেটাকে নিতে হবে। কোম্পানির এখন দায়িত্ব হচ্ছে, যারা তাদের বেপরোয়া কর্মে সহিংস পরিণতি ভোগ করেছে তাদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করা। অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অনেক রোহিঙ্গা ফেসবুকের ‘রিপোর্ট’ ফাংশনের মাধ্যমে রোহিঙ্গাবিরোধী কনটেন্ট রিপোর্ট করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। তারা এই বিদ্বেষপূর্ণ কনটেন্টগুলো মিয়ানমারে শ্রোতাদের কাছে ছড়িয়ে পড়তে অনুমোদন দেয়। ২০২১ সালের অক্টোবরে হুইসেল-ব্লোয়ার প্রকাশিত ‘ফেসবুক পেপারস’ থেকে পাওয়া তথ্য উলে­খ করেছে অ্যামনেস্টি। এতে ফেসবুকে জাতিগত সংখ্যালঘু এবং অন্যান্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ কনন্টেট ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টি কর্মকর্তারা জানতেন বলে ইঙ্গিত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের পাশাপাশি উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোর ওইসিডি গ্র“পে ফেসবুকের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করেছে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা। গত ডিসেম্বরে ফেসবুক ও এর মূল কোম্পানি মেটার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় দায়ের করা অভিযোগে ১৫০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়েছে শরণার্থীরা। সেই সময়ে, মেটার একজন মুখপাত্র বলেছিলেন যে সংস্থাটি মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগণের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধে হতবাক হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তিনি জানিয়েছিলেন যে ফেসবুকে ঘৃণামূলক বক্তব্য মোকাবেলায় এটি বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ফেসবুক থেকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে নিষিদ্ধ করা এবং ফেসবুকে মাঝারি বিষয়বস্তুর জন্য বার্মিজ ভাষাভাষীদের একটি নিবেদিত দল তৈরি করা। তবে অ্যামনেস্টি বলেছে যে এই ব্যবস্থাগুলি যথেষ্ট নয়। এছাড়াও জাতিসংঘের তদন্তকারীরা এর আগে বলেছে যে ফেসবুক রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে উসকে দিতে একটি ‘নির্ধারক ভ‚মিকা’ পালন করেছে। মায়ানমারে জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের চেয়ারম্যান মারজুকি দারুসমান বলেছিলেন, মিয়ানমারের জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভ এবং বিভেদ ও সংঘাত সৃষ্টিতে ফেসবুক যথেষ্ট পরিমাণে অবদান রেখেছে। অ্যামনেস্টি জানায়, আজ পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের ক্ষতিপূরণ দিতে মেটা অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে। যদিও তা কোম্পানিটির বিপুল লাভের তুলনায় খুব সামান্য। এ থেকে বোঝা যায়, কোম্পানিটি মানবাধিকার প্রভাবের বাস্তবতা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। ২২ বছর বয়সী রোহিঙ্গা নারী শওকুতারাকে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে বলেন, ফেসবুককে অবশ্যই অর্থ দিতে হবে। তারা না করলে আমরা বিশ্বের প্রতিটি আদালতে যাব। আমরা আমাদের সংগ্রামে কখনও হাল ছাড়ব না। অ্যামনেস্টি আরও বলেছে, ক্ষতিপূরণ দেয়ার পাশাপাশি, ফেসবুককে অবশ্যই তার অ্যালগরিদমগুলিতে মৌলিক পরিবর্তন করতে হবে। উলে­খ্য, ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সবচেয়ে জঘন্য জাতিগত নির্মূল অভিযানের মুখোমুখি হয়ে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা তাদের দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিল। ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ ও মিয়ানমার একটি প্রত্যাবাসন চুক্তি স্বাক্ষর করে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাউকে ফেরত নেয়নি মিয়ানমারের জান্তা সরকার। সূত্র: এএফপি, আল-জাজিরা

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com