এফএনএস: ‘গাছ পাকা ফল, গাছ পাকা ফল’Ñএভাবে হাকডাক দিয়ে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছিলেন কাওয়ান বাজারের মৌসুমি ফল বিক্রেতা আলী হোসেন। নারায়ণগঞ্জের লিচু আর গাজীপুরের আম বিক্রি করছিলেন তিনি। ক্রেতারাও দর কষাকষি করে কিনছিলেন। কেউ আবার দেখে অন্য দোকানে ছুটছিলেন। গতকাল রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, জ্যৈষ্ঠ মাস শুরু হতে না হতেই মৌসুমি ফলের সমাহার সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। ঈদের পর থেকেই একটু একটু করে ক্রেতাও বেড়েছে। ফলে চাহিদা বেড়েছে মৌসুমি ফলের। এ বিষয়ে ফল বিক্রেতা আলী হোসেন বলেন, গরম পড়তে শুরু করেছে, আর ফলও পাকতে শুরু করেছে। বাজারে যেমন ফল আসছে, তেমনি ক্রেতাও আছে। তবে দাম একেক জায়গায় একেক রকম। তবে দাম যেমনই হোক মৌসুমের প্রথম দিকে ফলের স্বাদ নিতে পেরে খুশি ক্রেতা-বিক্রেতারা। বাজারে এখন আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, তরমুজ সবই পাওয়া যাচ্ছে। এসব ফলের দিকে ক্রেতাদের আগ্রহ অনেক বেশি। কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি পাকা কাঁঠাল ১২০ টাকা থেকে শুরু করে আকার ভেদে ৩০০ টাকা, প্রতিকেজি পাকা আম ২০০ টাকা থেকে জাতভেদে ৪০০ টাকা, প্রতি ১০০ পিস লিচু ২৫০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা, প্রতিকেজি জাম ৪০০ টাকা, প্রতিটি তরমুজ আকার ভেদে ১২০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি সফেদা বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ২০০ টাকায়। এ ছাড়া বাজারে আছে জামরুল। প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। আছে তালশাস এবং পেঁপেও। বাজারে লিচু, আম, জাম, জামরুল ও কাঁঠালের সরবরাহ এখনও ব্যাপকহারে শুরু হয়নি। বিক্রেতারা বলেন, যদিও কাঁঠাল পাওয়া যাচ্ছে তবে ১০-১২ দিন পর ব্যাপকহারে কাঁঠালসহ অন্যান্য ফল বাজারে আসবে। কাঁঠালের জন্য বিখ্যাত গাজীপুর, ময়মনসিংহের ভালুকা। একই অবস্থা জামরুলেরও। কারওয়ান বাজারে কথা হয় ফল ক্রেতা শিশিরের সঙ্গে। কাঁঠাল আর তরমুজ কেনার পর ঘুরছিলেন লিচুর বাজারে। তিনি বলেন, এবার সব ফল যেন একসঙ্গেই এসেছে। অন্যান্যবার প্রতিটি ফল কিছু সময় ধরে পর পর এলেও এবার আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, তরমুজ সবই এখন বাজারে। এটা বেশ ভালো। তিনি বলেন, রাজধানীর অন্য যে কোনো জায়গার তুলনায় কারওয়ান বাজারে পণ্যের দাম বেশ কম। তাই বেশকিছু ফল কিনেছি, আরও কিছু কেনার ইচ্ছে আছে। আশা করি সামনে সরবরাহ আরও বাড়বে। তখন ফলের দাম আরও কমবে। এদিকে মৌসুমি ফলের দাম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে। ফল বিক্রেতারা বলছেন, একদিকে ফল কেবল আসতে শুরু করেছে, অন্যদিকে তেলের দাম বেড়েছে। এতে বেড়েছে পণ্য পরিবহনের খরচও। এ কারণে ফলের দাম বেড়েছে। তবে ঈদের পর থেকে ক্রমেই ফলের সরবরাহ বাড়ছে। দামও আগের চেয়ে এখন অনেকটা কম। অন্যদিকে, বাজারে প্রতিকেজি মাল্টা ১৬০-১৮০ টাকা, সবুজ আপেল ১৮০-২০০ টাকা, আনার ৪৫০-৫০০ টাকা, পেয়ারা ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া তালের শ্বাস প্রতিপিস ৪০ টাকা, আনারস প্রতিপিস ৩০-৪০ টাকা, ডাব ৬০-১০০ টাকা এবং সাদা আঙুর কেজিতে ৩০০-৩৪০ ও লাল আঙুর ৭৫০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।