 
																
								
                                    
									
                                 
							
							 
                    এফএনএস : বিপুলসংখ্যক অবৈধ হাটবাজার দেশের মহাসড়ককে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। যদিও মহাসড়কের ওপর বা নিয়ন্ত্রণ রেখার মধ্যে হাটবাজারসহ কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণের সুযোগ নেই। ২০২১ সালের মহাসড়ক আইনে এ বিষয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। ১৯২৫ সালের হাইওয়ে অ্যাক্টেও মহাসড়কের নিয়ন্ত্রণ রেখার মধ্যে হাটবাজার স্থাপনে বিধিনিষেধ ছিল। কিন্তু ওসব বিধিনিষেধ উপেক্ষা করেই মহাসড়কের ওপর এবং নিয়ন্ত্রণ রেখার মধ্যে গড়ে উঠেছে অসংখ্য হাটবাজার। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে অবৈধভাবে ২৫৬টি স্থায়ী ও অস্থায়ী হাটবাজার গড়ে ওঠেছে। ওসব হাটবাজারে আসা ছোট ছোট যানবাহন ও পণ্যবাহী যানবাহনের কারণে মহাসড়কে যানজট তীব্র আকার ধারণ করছে। আর মাঝেমধ্যেই ঘটছে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা। হাইওয়ে পুলিশ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশের বিভিন্ন স্থানে মহাসড়কে পাশে অবস্থিত ২৫৬টি স্থায়ী ও অস্থায়ী হাটবাজার শনাক্ত করা হয়েছে। আর ওই হাটবাজারগুলোয় আসা ইঞ্জিনচালিত নসিমন, করিমন ও পণ্যবাহী বিভিন্ন যানবাহনের কারণে মহাসড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। মাঝে মাঝে দুর্ঘটনাও ঘটে। বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, মহাসড়কের পাশে হাটবাজার বা কোনো স্থাপনা নির্মাণ করলে সেখানে স্থানীয় যানবাহনের একটা চাপ তৈরি হয়। তখন মহাসড়কের ওপর দিয়ে কিংবা আশপাশে মানুষের চলাচলও বেড়ে যায়। স্থানীয় যানবাহন ও হাটবাজারে আসা মানুষের কারণে মহাসড়কে চলা যানবাহনের একটা সাংঘর্ষিক অবস্থা তৈরি হয়। ফলে যানজট, বিশৃঙ্খলা, দুর্ঘটনার মতো ঘটনা ঘটে। বিশ্বব্যাপী মহাসড়কের যে মানদন্ড, তার সঙ্গে ওসব হাটবাজার কোনোভাবেই যায় না। সূত্র জানায়, পৃথিবীর কোথাও মহাসড়কের ধারেকাছে হাটবাজার তো দূরের কথা, কোনো আবাসিক এলাকাও থাকে না। মহাসড়কের ওপর এবং আশপাশে গড়ে ওঠা হাটবাজারগুলো দ্রুত অপসারণ জরুরি। এদেশে মহাসড়কের ওপর হাটবাজার গড়ে তোলা দীর্ঘদিনের সমস্যা। অথচ ২০২১ সালের মহাসড়ক আইনে মহাসড়কের নিয়ন্ত্রণ রেখা কতটুকু তা স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে। আইনটির সংজ্ঞায় সংরক্ষণ রেখা সম্পর্কে বলা হয়েছে, মহাসড়কের দুই পাশের ভূমির প্রান্তসীমা থেকে ১০ মিটার বা সরকার কর্তৃক গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নির্ধারিত রেখা। অন্যদিকে মহাসড়ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ সম্পর্কিত একটি উপধারায় বলা হয়েছে, সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতীত মহাসড়কের সংরক্ষণ রেখার মধ্যে কোনো অবকাঠামো নির্মাণ, হাটবাজার বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে মহাসড়কের কোনো অংশ ব্যবহার করা যাবে না। এদিকে মহাসড়কের হাটবাজারের বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশ হেড কোয়ার্টারের এসপি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, হাটবাজারগুলো মহাসড়ক থেকে ২০০-৩০০ ফুট দূরে বসানোর শর্তে ইজারা দেয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, ওসব হাটবাজার ক্রমেই মহাসড়কের কাছে চলে আসে। আবার কোথাও কোথাও দেখা গেছে, হাটবাজারগুলো মহাসড়ক থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ দূরত্বে স্থাপনের জন্য ইজারা নিলেও সেগুলো মহাসড়কের সংরক্ষণ রেখার মধ্যে বসানো হয়। অন্যদিকে মহাসড়কের ওপর অবৈধভাবে গড়ে ওঠা হাটবাজার অপসারণে পদক্ষেপ নেয়া প্রসঙ্গে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী একেএম মনির হোসেন পাঠান জানান, মহাসড়কের সংরক্ষণ রেখার মধ্যে কোনো ধরনের স্থাপনা তৈরির নিয়ম নেই। তারপরও দেশের বিভিন্ন স্থানে মহাসড়কের সংরক্ষণ রেখার মধ্যে হাটবাজারসহ বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। সেগুলো অপসারণে সওজ আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।