এফএনএস : মাহে রমজানের আজ একাদশ দিবস। মাগফিরাত ক্ষমা লাভের দশকের আজ সূচনা দিবস। আজ আমরা আলোচনা করবো চোখের রোজা সম্পর্কে। চোখেরও রোজা আছে। আর তা হচ্ছে, হারাম, অশ্লীল ও নিষিদ্ধ কাজ থেকে চোখকে ফিরিক্সে রাখা। এর বিপরীত অবস্থা হচ্ছে সকল ভালো ও নেক কাজের প্রতি চোখ খুলে রাখা এবং পুংখানুপুংখ রূপে তা দেখা। মহান আলাহ মানুষকে অনেক কাজ থেকে দূরে থাকতে বলেছেন। এ ধরনের কাজে লিপ্ত হওয়ার আগে চোখ তা দেখে এবং পরে মন প্রলুব্ধ হয়। ফলে মানুষ নিষিদ্ধ কাজটি করে ফেলে। উদাহরণ হচ্ছে, মাহরাম নক্স এমন স্ত্রী লোকের প্রতি না তাকানোর নির্দেশ রক্সেছে। তাদের সৌন্দর্য উপভোগ করলে শেষ পর্যন্ত তা অবৈধ যৌন আচরণ পর্যন্ত নিক্সে যেতে পারে। অথচ এই দুটো কাজই হারাম। এ সম্পর্কে মহান আলাহ পবিত্র কুরআনের সুরা নূর-এর ৩০-৩১ আক্সাতে বলেছেন, হে নবী, আপনি মুমিনদের বলে দিন তারা যেন নিজের চোখকে অবনত রাখে এবং লজ্জা স্থানকে হেফাজত করে। হজরত আলীর এক প্রশেহ্মর জবাবে রসুলুলাহ সালালাহ আলইহি ওক্সাসালাম উœরে তাকে বলেন, তোমার চোখ অবনত রাখ। যে ব্যক্তি নিজের চোখ অবনত রাখে না কিংবা নিষিদ্ধ জিনিসের উপর থেকে দৃষ্টি ফিরিক্সে রাখে না সে কমপক্ষে চার ধরনের ক্ষতি ও বিপর্যক্সের সম্মুখীন হক্সে থাকে। প্রথম লাগামহীন দৃষ্টির কারণে তার মন আহত হয় ও পক্ষাঘাতগ্রস্ত হক্সে পড়ে। চোখ নামক বিষাক্ত ছুরির আঘাতে মন ব্যথিত, অশান্ত ও অস্থির থাকে। দ্বিতীয়ঃ চোখের দেখা জিনিসের নাগাল না পাওক্সায় মন কষ্ট পায় ও সর্বদা আফসোস, দুশ্চিন্তা ও উœেজনার মধ্যে সময় কাটায়। তৃতীয়ঃ আলাহর ইবাদতের স্পৃহা চলে যায়, আনুগত্যের স্বাদ নষ্ট হক্সে যায় এবং পাপ কাজের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়। সর্বশেষ হচ্ছে নিষিদ্ধ বস্তু দেখা ও ইজ্জত -আবরু লংঘনের পরিণামে বিরাট ম্লনাহ হয় এবং কঠোর পাপে লিপ্ত হয়। পরকালে আলাহ এই খোলা চোখের উপর শীশা ঢেলে শাস্তি দেবেন। চোখ হচ্ছে উœম এক শিকারী। তাকে অনিক্সন্ত্রিত রাখলে সে যে কোন সময় পাপের বস্তু শিকার করবে এবং অন্তর ও ঈমানকে নষ্ট করবে। অপর দিকে চোখ অবনত রাখলে এবং নিষিদ্ধ জিনিস থেকে দৃষ্টি ফিরিক্সে রাখলে আলাহর আনুগত্য বৃদ্ধি পায়। আর তা হচ্ছে বড় নেক কাজ। মন নিরাপদ থাকে, মনে শান্তি ও স্থিতি বিরাজ করে এবং যে কোন সময় অন্যাক্স কাজে হোঁচট খাওক্সার আশঙ্কা থাকে না। ফেতনা-ফ্যাসাদের সাথে দূরত্ব সৃষ্টি হয়, বিপদ থেকে নিরাপদ থাকা যায় এবং ম্লনাহ থেকে বাঁচা যায়। তাকওয়া অনুসরণের কারণে আলাহর পক্ষ থেকে বান্দার অন্তওে জ্ঞান,প্রজ্ঞা ও নেক কাজের তাওফিক সৃষ্টি হয়। মুমিনের অন্তরে ভাল-মন্দ পার্থক্য করার ক্ষমতা সৃষ্টি হয়। যারা চোখ খোলা রাখে তাদের ঈমানি অন্তর মরে যায় এবং সে অন্তরে পাপের আগাছা-পরগাছা জন্মে। মাহে রমজান হচ্ছে প্রশিক্ষণের মাস। এই মাসে চোখকে নিয়ন্ত্রিত করতে পারলে তা বছরের বাকি এগার মাসে দিশারী হয়ে থাকবে। এই মাসে আলাহ আমাদের চোখকে তার দিক নির্দেশনা মোতাবেক অবনমিত ও নিয়ান্ত্রিত রাখার তাওফীক দিন। আমীন!