শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:৫৫ পূর্বাহ্ন

মিয়ানমারের গোলাগুলি: কেঁপে উঠছে বাংলাদেশ সীমান্ত

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বুধবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

ওপারের মর্টার সেল গুলি আছড়ে পড়ছে সীমান্ত গ্রামগুলোতে ঃ উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, আতঙ্কেক নির্ঘূম সীমান্ত পারের জনজীবন
দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে চলছে তুমুর সংঘর্ষ। জান্মা সরকারের অনুগত বাহিনীর সাথে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি সহ একাধিক বিদ্রোহী পক্ষের চলছে গোলাগুলি, চলছে ভয়াবহ যুদ্ধ। দখল, পাল্টা দখল এ ব্যবহত হচ্ছে কামানের গোলা, গুলি, মর্টারসেল সহ বহুবিধ অস্ত্র। সীমান্তের ওপারের গোলাগুলিতে প্রতিনিয়ত কেঁপে উঠছে বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলার ও বান্দরবানের নাইয়্যাংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম, সকাল, দুপুর, বিকাল, রাত সব সময় অত্যাধুনিক অস্ত্রের ব্যবহারের গর্জনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে বাংলাদেশীরা। ইতিমধ্যে বাংলাদেশী সহ দুই জন মিয়ানমার থেকে আসা মর্টারসেল আঘাতে নিহত হয়েছে। গতকাল আরও একজন মারাত্মক ভাবে আহত হয়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌছেছে ঘরের মধ্যে থেকে মিয়ানমারের গোলাগুলি হতে রক্ষা পাচ্ছে না সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামবাসি। ইতিমধ্যে সীমান্ত সংলগ্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বিজিবি অত্যন্ত সতর্ক অ’বস্থানে আছে। প্রতিবেশী দেশটি ইতিপূর্বে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর নির্যাতন পরিচালনা করলে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশ আশ্রয় নিলে মানবিক কারনে বাংলাদেশ সরকার তাদের আশ্রয় দেয় এবং বর্তমানে কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকাতে তারা অবস্থান নিয়ে বসবাস করছে। সোমবার এবং গতকাল মঙ্গলবার মিয়ানমারের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের তীব্রতা ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পায়। প্রতিটি গোলা এবং মর্টার সেল এ সীমান্তের সর্বত্র মুহুর মুহুর কম্পন সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি এতটুকু ভয়াবহ আতঙ্ক জনক ও উদ্বেগের কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে সীমান্ত সংলগ্ন ধুমধুম, মধ্যমপাড়া, জলবাইতলী, মন্ডল পাড়া, নয়াপাড়া, কোনার পাতা, পশ্চিম কুল, বেতবুনিয়া বাজার পাড়া, উখিয়ার ঘাট, দক্ষিন বালুখালী সর্বত্র যেন মিয়ানমারের ওপারে থেকে উড়ে আসা মর্টার সেলের আতঙ্ক। গতকাল মঙ্গলবার বান্দরবানের সীমান্তবর্তী নাইখ্যাংচড়ি উপজেলার ধুমধুম ইউনিয়নের তুমব্র“ পশ্চিমকুল এলাকায় সৈয়দ আলম (৩৪) নামের এক ইজিবাইক চালক মিয়ানমারের মর্টার সেলের আঘাতে আহত হয়েছে। সৈয়দ আলম নিজ বসতবাড়ীর উঠানে দাড়িয়ে থাকা অবস্থায় মর্টার সেলের আঘাতে আহত হয়। মিয়ানমারের সর্বত্র সংঘর্ষ সহ এক পক্ষ অন্যপক্ষের উপর হামলা পরিচালনা করছে। সরকার সমর্থিত সেনারা বিভিন্ন এলাকায় পরাজিত হচ্ছেসম্প্রতি বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন রুখাইন রাজ্যে গত কয়েকদিন যাবৎ তুমুল লড়াইয়ের পর একের পর এক সামরিক চৌকি কিবদ্রোহীরা দখলে নিচ্চে এবং প্রাণপনে লড়াই করে সরকার সমর্থক সেনারা কেউ কেউ নিহত হয়েছে আবার অনেকে গহীন জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছে। আবার প্রানে বাঁচতে বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করে বিজিবির কাছে আত্মসমর্পন করেছে। গতকালও রাখাইনের বিভিন্ন এলাকাতে জান্তা সরকারের অনুগত বাহিনীর সাথে বিদ্রোহীদের তুমুল লড়াই হয়েছে যা অব্যাহত আছে। রাজ্যটির ফ্রাউক ইউ ও কিয়ার্ড কতা ও শহরের আও দুটি সামরিক ঘাঁটি দখলে নিয়েছে বিদ্রোহীরা। মিয়ানমারের সরকার হেলিকপ্টার এর মাধ্যমে বিদ্রোহীদের উপর গোলাবর্ষন করেও বিদ্রোহীদের সাথে পেরে উঠছে না। সর্বশেষ খবরে জানাগেছে তুমুল এবং ভয়াবহ যুদধ চলছে সীমান্তের ওপারে। গতকাল বান্দরবান জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে সীমান্তবর্তী বসবাস রতদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীূর দুইশত উনত্রিশজন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহন করেছে। মিয়ানমারের ওপার হতে বাংলাদেশের ভূখন্ডে মর্টার সেলে দুই জনের মৃত্যুর ঘটনায় গতকাল ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদুত অং কিউ মোয়েকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। সীমান্তসংলগ্ন গ্রামবাসি নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় গ্রহন করেছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অবস্থান করা লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গাকেক বারবার আশ্বাস দেওয়ার পর ও মিয়ানমার সরকার ফিরিয়ে নেইনি, প্রতিবেশী দেশ হলেও তারা বাংলাদেশের সাথে প্রতিবেশী সুলভ আচরন করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকে না। সীমান্ত তাদের সীমান্তরক্ষীদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ ভূ-খন্ডে প্রবেশ করে। মিয়ানমারের বিষয়ে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বিজিবি সতর্কতার প৩াশাপাশি ধৈর্য ধারন করছে এটা প্রতিভেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশেষ সতর্ক থাকছে। ওপারের সংঘর্ষে গোলাগুলিতে বাংলাদেশ ভূখন্ডে যেন নিরাপত্তাহীনতা দেখা না দেয় সে বিষয়টি মিয়ানমারকে বিশেষ ভাবে অনুধাবন করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com