এফএনএস বিদেশ : ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের জন্য রাশিয়ার শাস্তি চেয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। গত বুধবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে যোগ দিয়ে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন তিনি। রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের উদ্দেশে তিনি বলেন, ইউক্রেনে ‘আগ্রাসন’ চালানোর অপরাধে রাশিয়াকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। গত (১৯ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে শুরু হয় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশন। করোনা মহামারির কারণে প্রায় তিন বছর পর প্রথমবারের মতো বৈশ্বিক এ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান। তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভাদিমির পুতিন, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এতে যোগ দেননি। তার বদলে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছেন তারা। অধিবেশনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে ইউক্রেন যুদ্ধ। এ সংঘাতের জন্য রাশিয়াকে দায়ী করে দেশটির নেতাদের কঠোর সমালোচনা করেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় নেতারা। বুধবার রাজধানী কিয়েভ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অধিবেশনে বক্তব্য দেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।বক্তব্যের শুরুতেই জেলেনস্কি রাশিয়ার বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। তার দেশের ‘বিপর্যয়কর অশান্তি’ সৃষ্টির জন্য মস্কোকে দায়ী করেন। আর এজন্য রাশিয়াকে বিচারের আওতায় আনার আহŸান জানান। বলেন, একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে রাশিয়াকে বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং সেই সঙ্গে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার ভেটো ক্ষমতা কেড়ে নিতে হবে। জেলেনস্কির ভাসায়, ‘ইউক্রেনের ভ‚খন্ড অবৈধভাবে দখল ও হাজার হাজার মানুষকে হত্যার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করতে একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন প্রয়োজন। মস্কোকে তার অপরাধের জন্য অবশ্যই শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। দেশটির ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাও অব্যাহত রাখতে হবে। সেই সঙ্গে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ভোটে দেয়ার ক্ষমতা মস্কোর হাত থেকে কেড়ে নিতে হবে।’ আল-জাজিরার খবরে বলা হয়, ভাষণের একপর্যায়ে অধিবেশনে থাকা বিশ্বনেতারা দাঁড়িয়ে জেলেনস্কিকে অভিবাদন জানান। সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে এমন দৃশ্য খুবই বিরল। জেলেনস্কির এ বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা আগেই ইউক্রেনে আংশিক রিজার্ভ সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেন পুতিন। তার এই নির্দেশের বাস্তবায়ন গত বুধবার থেকেই কার্যকর হয়েছে।পুতিনের এ ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় জেলেনস্কি বলেন, এই পদক্ষেপে এটিই প্রমাণতি হয় যে শত্র“ শান্তি আলোচনায় আগ্রহী নয়। পুতিন ইউক্রেনকে রক্তের সাগরে ডুবাতে চান। এদিকে রাশিয়ার সঙ্গে যোগ দিতে ইউক্রেনে রুশ অধিকৃত অন্তত চারটি অঞ্চলে গণভোট আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই অঞ্চলগুলোর রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা। আজ শুক্রবার (২৩ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর) গণভোটের আয়োজনের কথা জানিয়েছেন তারা।