মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই ২০২৪, ০৮:২৫ পূর্বাহ্ন

শীতের দাপট কমছে না, বইছে কনকনে ঠান্ডা হাওয়া, বাড়ছে ঠান্ডা জনিত রোগ বালাই : জনজীবনে ছন্দপতন

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০২২

দৃষ্টিপাত রিপোর্ট \ দাপুটে শীত, কনকনে হাওয়া যেন জেকে বসেছে। থামছেই না শীতের চোখ রাঙানী। বিস্তীর্ণ জনপদে শীতের তীব্রতা যেন রন্ধে রন্ধে অনুপ্রবেশ করেছে। শীতের বিরামহীন তান্ডবে বির্যস্থ জনজীবন, সাতক্ষীরার বিশলক্ষাধীক মানুষ গত কয়েকদিন যাবৎ শীতের সাথে যুদ্ধ করে দৃশ্যতঃ ক্লান্ত। তবুও থেমে নেই জীবন যাত্রা, তবে হীমেল হাওয়া, কনকনে শীতের সময় গুলোতে খেটে খাওয়া মানুষ গুলোর জন্য বয়ে এনেছে অভিশাপ, পক্ষকাল ব্যাপী শীতের আগ্রাসনের সাথে স্থবিরতায় আর ছন্দপতনের যে প্রবাহ তা যেন বেড়েই চলেছে। শীতের তীব্রতার সাথে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ছিল কয়েকদিন অবশ্য গত কয়েকদিনে বৃষ্টিপাতের উপস্থিতি না থাকলেও শীতের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। আবহাওয়া দপ্তর খবর দিয়েছে আগামী এক দুই দিন পর্যন্ত শীতের রাজত্ব অব্যাহত থাকবে। সাতক্ষীরার নিন্ম ও চরাঞ্চলের মানুষ গুলো শীত যন্ত্রনায় কাহিল। উত্তরের হাওয়া দিন রাতে সমান তালে বইছে। খেতে মাঠে কাজ করার শক্তি সামর্থ হারাচ্ছে শ্রমজীবীরা। হাট বাজারে উপস্থিতি যৎ সামান্য, সন্ধ্যার পর চায়ের দোকান গুলোতেও জনসাধারনের উপস্থিতি হাতে গোনা। কর্মব্যস্ত সাতক্ষীরা শহরের নিত্য দিনের কোলাহল আর জনসাধারনের সরব উপস্থিতি যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। বর্তমান সময়ে কৃষি উৎপাদনের প্রাথমিক ধাপগুলো বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে শীতের কল্যানে। সর্বত্র শীত আর শীত এবং শীত কষ্ট, শহরের ফুটপথের পুরাতন কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি ব্যাপক ভাবে লক্ষনীয়। চিংড়ী ঘেরগুলোতে চলছে ছেচামারা কিন্তু শীতের প্রকোপের কারনে মাছ ধরা, জাল টানা ছেচামারা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে শীতকালিন রোগ বালাই। সমানতালে সংক্রমিত হচ্ছে জনসাধারন শীতের মৌসুমের রোগ বালাই গুলো ঠান্ডাকে বিশেষ পুঁজি বানিয়ে অধিকতর বিস্তৃত ঘটাচ্ছে। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে ঠান্ডা জনিত এবং শীত জনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। করোনার ওমিক্রনের এই সময় গুলোতে শীত ওমিক্রন কে আমন্তন জানাচ্ছে। ওমিক্রনের প্রথম ও প্রধান লক্ষন বা কারন যাই বলি না কেন ছর্দি, কাশি, হাচি আর ছর্দি, কাশি, হাচির উৎস্য ঠান্ডা, এই মুহুর্তে শীতকালীন বা ঠন্ডাজনিত রোগ বালাইকে প্রতিহত করতে হলে প্রথমেই যে বিষয়টি আমলে আনতে হবে তা হলো ঠান্ডা এবং শীতকে প্রতিরোধ করা। শীতের সময় গুলোতে শীতকে কাবু করতে হলে, শীতকে জয় করতে একমাত্র মাধ্যম গরম কাপড়ের ব্যবহার, বিষয়টি এমন কোন অবস্থাতেই শীত বা ঠান্ডা কে আশ্রয়, প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। শীতে সর্বাপেক্ষা কাহিল হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা, কারন শিশু ও বৃদ্ধদের শরীরে একদিকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যৎসামান্য অন্যদিকে শীত নিবারনের জন্য শারিরীক ক্ষমতা অনেকাংশে শিশু ও বৃদ্ধদের থাকে না। শীতে নিউমোনিয়ার প্রকোপ ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। আর নিউমোনিয়ার আক্রান্তদের মধ্যে বৃদ্ধ ও শিশুদের সংখ্যাই বেশী। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অভিমত নিউমোনিয়া কোন কোন সময়ে প্রানঘাতী পর্যায়ে পৌছায়। শীতে হ্যাঁপানী, এ্যাজমা, এ্যালার্জী বেড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। অতি ঠান্ডায় নাক দিয়ে অবিরাম পানি ঝরা এবং নাক বন্ধ হওয়ার সমস্যায় আক্রান্ত অনেকে। ঠান্ডা জনিত রোগ বালাই হতে রক্ষা পেতে তাই নিয়ম মানার বিকল্প নেই। ঠান্ডা পানি পান করা হতে বিরত থাকতে হবে, কুসুম গরম পানি পান করাই উত্তম, গোসলের ক্ষেত্রেও কুসুম গরম পানির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। ঘরের দরজা জানালা কেবল রাতে নয় দিনের বেলাতেও বন্ধ রাখতে হবে। রাতে ঘুমের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের শরীর থেকে লেপকাঁথা, কম্বল যেন সরে না যায় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। শীতের সময় গুলোতে অসহায়, হতদরিদ্রদের গরম কাপড় সহ আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে পাশে দাঁড়ানো মানবতাকে জাগ্রত করবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com