শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৮:৪৩ পূর্বাহ্ন

শ্যামনগর সংবাদ সংগ্রহকালে চেয়ারম্যান কর্তৃক সাংবাদিকের সাথে দূর্ব্যবহার উল্টা সাংবাদিকের নামে মামলা

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার ঃ তুই কিসের সাংবাদিক। কত নাম করা সাংবাদিক দেখলাম এলোআর গেল, তোর মত সাংবাদিককে তো তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেব। এখান থেকে যা নইলে তোর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হাজতে ঢুকিয়ে দেবো। এমন আশ্ফালন করতে করতে ছুটে এসে সাংবাদিক সোহরাব হোসেনের হাত থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিল শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান অসীম মৃধা। শ্যামনগর থানা পুলিশ ও উপস্থিতিদের সামনেই সাংবাদিকের উপর এ ধরনের উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে একজন জনপ্রতিনিধি মুন্সীগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান অসীম মৃধা। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সকাল ১০ দিকে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে। জানা গেছে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের চিলের খাল চিংড়ি মহল থেকে এক একর জমি বন্দোবস্ত নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাছ চাষ করে আসছেন চুনকুড়ি গ্রামের স্থানীয় ভূমিহীন খালেক মোল­া। উক্ত মাছের ঘেরে পানি তোলার ঘটনায় একই এলাকার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার জিয়াউর রহমান ও আট নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার জলিল গাজী উক্ত মৎস্য ঘেরে যায়। এ সময় ঘেরে পানি তোলা নিয়ে বাকবিতণ্ডের এক পর্যায়ে উক্ত দুই মেম্বার এবং তাদের নেতৃত্বে ছয় সাত জনের একটি দল উক্ত মৎস্য ঘেরের বাধ কেটে দিয়ে ব্যাপকক্ষতিসাধন করে। এ সময় বাধা দিলে উক্ত ঘের মালিক খালেক মোল­া ও তার পুত্র মনিরুলের সাথে তাদের বাক-বিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি হয়। এ ঘটনা জের ধরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অসীম মৃধার নির্দেশে মেম্বার জিয়াউর রহমান ও জলিল গাজীর নেতৃত্বে তার লোকজন ঘের মালিক আব্দুল খালেক মোল­া ও তার পুত্র মনিরুল ইসলামকে পিঠমোড়া দিয়ে বেঁধে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়। উক্ত ঘটনার বিষয়টি জানার জন্য সাংবাদিক সোহরাব হোসেন ঘটনাস্থলে যান এ সময় চেয়ারম্যান বলেন বিষয়টি তেমন কিছু না এনিয়ে রিপোর্ট করার কোন দরকার নেই। ঘটনা শোনার পর সাংবাদিক সোহরাব হোসেন ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় লোকজনের সমাগম এবং এক পর্যায়ে ডাকচিতকার শুরু হলে বিষয়টি শ্যামনগর থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়। খবর পেয়ে শ্যামনগর থানার এসআই খবির হোসেন সহ ফোর্স ঘটনাস্থলে আসেন। পরবর্তীতে খবর পেয়ে সাংবাদিক সোহরব হোসেন সংবাদ সংগ্রহের জন্য ঘটনাস্থলে যান। এসময় পুলিশ ও ইউপি চেয়ারম্যান তাকে ছবি তুলতে নিষেধ করেন। এসময় সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ দিয়ে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পুলিশের সামনে একজন সাংবাদিককে কাছ থেকে একটি মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া এবং অকথ্য গালিগালাজ করার বিষয়টি নিয়ে সাধারণ জনগণের মনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বলছেন আইন প্রকারী সংস্থার সামনে যদি একজন সাংবাদিককে এ ধরনের হেনস্তা করা হয় তাহলে সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকরা তাদের স্বাধীনতা হারাবে। ফলে এরপর থেকে আর এলাকার বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম দুর্নীতি ও প্রকাশ করতেও সাংবাদিকরা বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়বে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার অনেক ব্যক্তিরা বলেন তিনি ইউনিয়ন পরিষদে বিচারের নামে সাধারণ মানুষের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জুলুম ও নির্যাতন চালিয়ে আসছেন। প্রতিকার করার কেউ নেই। দু একজন প্রতিকার করতে গেলে তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বলেও তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। সাংবাদিক সোহরাব হোসেন তাৎক্ষণিক বিষয়টি শ্যামনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কে অবহিত করলে চেয়ারম্যান অসীম মৃধা এক ঘন্টার মধ্যে প্রেসক্লাবে এসে বিষয়টি মীমাংসা করবেন বলে ওয়াদা করলেও না অজুহাতে তিনি আদৌ প্রেসক্লাবে হাজির হননি বলে জানা গেছে। ঐ চেয়ারম্রানের যোগাযোগে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। জন প্রতিনিধি কর্তৃক একজন সাংবাদিক কে এ ধরনের হেনস্থা এবং সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ করার অপপ্রয়াস কে এক ধরনের গুন্ডামি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বলেও অভিমত প্রকাশ করেছেন এলাকার সচেতন মহল। সাথে সাথে চেয়ারম্যান অসীম মৃধার এ ধরনের অসদাচরণের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী সহ সাংবাদিক ও সুশীল সমাজ। ইউপি চেয়ারম্যান অসিত মৃধার কাছে জানতে চাইলে তিনি দৃষ্টিপাতকে জানান, সাংবাদিক সোহরাবের সাথে অশ্লীল আচরন করা হয়নি। এমনকি মোবাইল ছিনিয়ে নেয়নি। মামলা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মামলা করিনি। মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া ও অশ্লীল গালিগালাজ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রত্যক্ষদর্শী এসআই মোঃ খবির হোসেন জানান, চেয়ারম্যান ও সাংবাদিকের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছিল। চেয়ারম্যান মোবাইল নিয়েছিল পরে আমি জানতে পেরে চেয়ারম্যানের কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে সাংবাদিকের শ্বশুরের কাছে প্রদান করি। সাংবাদিক কর্তৃক অভিযোগের বিষয়ে জানতে শ্যামনগর থানার ওসি নুরুল হকের সাথে যোগাযোগ করলে এসআই সেলিম ফোন রিসিভ করেন। জানান মোবাইল উদ্ধার করে সাংবাদিক সোহারবের শ্বশুরের কাছে দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকের দেওয়া অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে। প্রমান হলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com