মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই ২০২৪, ১২:১১ অপরাহ্ন

সরকার নারীর খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে -প্রধানমন্ত্রী

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৮ মার্চ, ২০২২

এফএনএস: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিটি কাজে নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, স্বাধীনতা লাভের পর ৫০ বছরে বাংলাদেশের অন্যতম অর্জন হচ্ছে লিঙ্গবৈষম্য কমিয়ে নারীর ক্ষমতায়নের পথে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে উলে­খযোগ্য সাফল্য লাভ। এরই ধারাবাহিকতায় এদেশের উন্নয়নের ধারাকে টেকসই করার লক্ষ্যে আমাদের সরকার তৃণমূল পর্যায় থেকে নারীর খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। আজ ৮ মার্চ ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ উপলক্ষে গতকাল সোমবার দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। এবারের প্রতিপাদ্য ‘টেকসই আগামীর জন্য জেন্ডার সমতাই আজ অগ্রগণ্য’। দিবসটি উপলক্ষে বিশ্বের সকল নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নারীর দারিদ্র্য বিমোচনে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে ভিজিডি কর্মসূচি, দরিদ্র মা’র জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান কর্মসূচি, কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা কর্মসূচি, মহিলাদের আত্ম-কর্মসংস্থানের জন্য কর্মমুখী প্রশিক্ষণ এবং ক্ষুদ্রঋণসহ বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প ও কর্মসূচি। তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই যুগে জ্ঞানভিত্তিক দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার জন্য নারী-পুরুষ সবাইকে আমরা তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে এসেছি। নারীর কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ও উদ্যোক্তা তৈরিতে জয়িতা ফাউন্ডেশনের অনলাইন মার্কেট প্লেস ‘ই-জয়িতা’ চালু করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারী পাচার, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধসহ নারীর প্রতি যে কোন ধরনের সহিংসতা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে করা হয়েছে কঠোর আইন ও নীতি। এ ছাড়া মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ১০৯, পুলিশের ৯৯৯ ও ৩৩৩ হেল্প লাইনের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক সহায়তা ব্যবস্থা। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নেতৃত্বে, সংসদে, নীতি নির্ধারণে, রাজনীতি থেকে প্রশাসনে, শিল্প-সংস্কৃতি চর্চায়, বিদেশে শান্তি রক্ষায়, গবেষণা থেকে খেলাধুলা, জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে পর্বতারোহণ প্রতিটি ক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি এদেশের নারী আজ স্বীয় প্রতিভায় সমুজ্জ্বল। জেন্ডার বাজেটিং, মাইক্রো ফাইন্যান্স, ই-কমার্স এর মতো উদ্যোগগুলো নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করেছে। শেখ হাসিনা বলেন, নারী আন্দোলনের ইতিহাসে আজ এক গৌরবময় দিন। দীর্ঘ কর্মঘন্টা আর মজুরি বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে নারী আদায় করেছিল তার অধিকার। আদায় করেছিল বিশ্ব সমীহ। নারী তার মেধা ও শ্রম দিয়ে যুগে যুগে সভ্যতার সকল অগ্রগতি এবং উন্নয়নে করেছে সমঅংশীদারিত্ব। আর তাই সারাবিশ্বে বদলে গেছে নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি। এখন নারীর কাজে মূল্যায়ন হচ্ছে, বৃদ্ধি পাচ্ছে স্বীকৃতি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থ নারীদের পুনর্বাসন ও ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে নারী পুনর্বাসন বোর্ড গঠন করেন। তিনি জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে নারীর সমানাধিকারের বিষয়টি সংবিধানে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের নারী ও শিশুর উন্নয়নে ভ‚মিকা রাখার জন্য অর্জিত হয়েছে জাতিসংঘের সাউথ-সাউথ পুরস্কার। নারীর ক্ষমতায়নে সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে আমরা অর্জন করেছি জাতিসংঘ কর্তৃক প্ল্যানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ ও ‘এজেন্ট অভ চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’। শেখ হাসিনা বলেন, শিক্ষায় লিঙ্গ সমতা আনার স্বীকৃতিস্বরূপ ইউনেস্কোর ‘শান্তি বৃক্ষ এবং ‘গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড ২০১৮’ সহ দারিদ্র্য দূরীকরণ, পৃথিবীর সুরক্ষা ও সবার জন্যে শান্তি-সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে উদ্যোগ গ্রহণ করায় ২০২১ সালে অর্জিত হয়েছে ‘এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার’। তিনি বলেন, এদেশের নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যেমন আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি, তেমনিভাবে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো- ইনশাল­াহ। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ৮ মার্চ ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ পালন করা হচ্ছে জেনে আনন্দ প্রকাশ এবং দিবসটি উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com