শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:০৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে গেছে হাসিনার স্বৈরতন্ত্র: কূটনীতিকদের ইউনূস ভারতে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ-হত্যার প্রতিবাদে শাটডাউন কর্মসূচির ঘোষণা চিকিৎসকদের নলতা আহসানিয়া মিশন রেসিডেনসিয়াল কলেজের অধ্যক্ষের দুর্নীতি ॥ উত্তাল নলতা ॥ শিক্ষক কর্মচারীরা মতবিনিময় করলেন ডাঃ শহিদুল আলম ও চেয়ারম্যান আজিজুর রহমানের সাথে মহামারীর দ্বারপ্রান্তে গাজা আলোচনায় থাইল্যান্ড ॥ বন্দী থাকসিন মুক্ত হরিনগর বাজারে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদের মাঝে নগদ অর্থ প্রদান পাইকগাছায় একটি বাঁশের সাঁকো পারাপারে এলাকাবাসীর চরম ভোগান্তি মাথাভারি হচ্ছে প্রশাসনের ॥ বাড়ছে সরকারের দু:চিন্তা ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ এর পদত্যাগ দাবীতে-মানববন্ধন চাম্পাফুল ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত

সাতক্ষীরা পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে কাউন্সিলদের সংবাদ সম্মেলন

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

স্টাফ রিপোর্টার ঃ সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র মোঃ তাজকিন আহম্মেদ বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিধিনিষেদ পরিপন্থী কার্যক্রম পরিচালনা, দুর্ণীুিত, স্বজনপ্রীতি অভিযোগ এনে গতকাল সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পৌরসভার কাউন্সিলররা। পৌরসভার প্যানেল মেয়র আলহাজ্ব কাজী ফিরোজ হাসান লিখিত বক্তব্যে বলেন সাতক্ষীরা পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে সরাসরি জনগনের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্বপালন করে আসছে। পৌরসভার মেয়র কর্তৃক ক্ষমতার অপব্যবহার বিধি নিষেধ পরিপন্থি কার্যক্রম পরিচালনা, দুর্ণীতি, স্বজনপ্রীতি ও সাতক্ষীরা পৌরসভার মর্যাদা হানিকর কার্যকলাপ ও সাতক্ষীরা পৌরসভার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার বিরুদ্ধে আমরা সাতক্ষীরা পৌরসভার কাউন্সিলরবৃন্দ বাধ্য হয়ে স্থানীয় সরকার পল­ী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। কিন্তু মেয়র উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে গতকাল সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এসে নিজেকে সাধু এবং সকল কাউন্সিলরবৃন্দকে অসাধু ব্যাখ্যা করে মিথ্যা ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত তথ্য প্রচার করেছেন। আমরা কাউন্সিলরবৃন্দ উক্ত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পৌরসভার পানি সরবরাহ আদর্শ উপ-আইনমালা, ১৯৯৯ এর ১৯ ধারা অনুসারে পানির বিল চঁনষরপ উবধহফং। যেটি মওকুফ করার কোন বিধান নেই। যদিও একই উপ-আইনমালার ১২(৩) নং ধারায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মূল্য পরিশোধ করলে ১০% রিবেট দেয়ার সুযোগ আছে। তবে তিনি ক্ষমতার চুড়ান্ত অপব্যবহার করে বছরের পর বছর বকেয়া পানির বিল আদায় না করে, সে গুলো একক ক্ষমতায় মওকুফ করেছেন। ছিয়াত্তর লক্ষ ছাপ্পান্ন হাজার নয়শত দুই টাকা মওকুফ করে পৌরসভার আর্থিক ক্ষতি সাধন করেছেন। বর্তমান এ শাখায় বিদ্যুৎ বিল বাবদ প্রায় ৫.৫ কোটি টাকা বকেয়া আছে। কর্মকর্তা কর্মচারীদের ০২ মাসের বেতন বকেয়া আছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের হাট-বাজার ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ৩এর ৩.৪ নং অনুসারে দরপত্র দাতা অবহিত হওয়ার ০৭(সাত) কার্যদিবসের মধ্য সমুদয় অর্থ প্রদানের বিধান আছে। কিন্তু বর্তমান মেয়র সম্পূর্ণ বিধি-নিষেধ পরিপন্থী ভাবে হাট-বাজার ইজারা গ্রহীতা গণের নিকট প্রায় ১,১৮,৯৫,৯৭১/- টাকা বকেয়া রেখেছেন। মেয়র অবৈধ সিন্ডিকেট করে তার দলীয় পছন্দের ব্যক্তিদের নিকট হাট-বাজার ইজারা প্রদান করেছেন। সাতক্ষীরা পৌরসভার মোট ০৯(নয়) টি পাবলিক টয়লেট আছে। মেয়র দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে পাবলিক টয়লেট ইজারা দেননি। এমনকি খাস কালেকসনের মাধ্যমে উপার্জিত একটি টাকাও জমা প্রদান করেননি। সাতক্ষীরার পৌরসভার মোট ১৬,৬১২ টি খানা বিদ্যমান। কনজারভেন্সি ইনস্পেক্টর এর জবানবন্দি (কপি সংযুক্ত-৪ কনজারভেন্সি সুপারভাইজারের জবান বন্দি) মতে প্রতিটি খানা থেকে প্রতি মাসে ৫০/৮০/১০০ টাকা করে সংগ্রহ করা হয়। টাকা আত্মসাতৎ করেছেন। মেয়র কোন সুপারিশ ছাড়া অপব্যবহার পুর্বক গত ০৬ টি অর্থ বছরে ১,৩৩,০৩,২২১/- টাকা কর মওকুফ করেছেন। টাকা পৌর কর মওকুফ করে একই ভাবে ৬(ছয়) টি অর্থবছর ১০,০২,৬৯৬/- টাকার লাইসেন্স ফি মওকুফ করেছেন। মেয়র বিগত ০৬(ছয়) বছর ২২,৪৪,৬২২/- টাকা ভূয়া আপ্যায়ন বিল করে পৌর ফান্ড থেকে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। অনুরুপ ভাবে ভুয়া ভ্রমন বিল দেখিয়ে পৌরসভা ফান্ড থেকে ১০,৫৩,৪১০ টাকা উত্তোলন করেছেন। মেয়র মোঃ তাজকিন আহমেদ নিজ ও নিজ দলীয় কর্মীদেরকে আর্থিক সুবিধা প্রদানের জন্য পৌরসভার ক্রয় কাজে উচগ পদ্ধতিতে ক্রয়কার্য করে থাকেন। মূলত তিনি পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮ এর ৮১নং ধারা লঙ্ঘন করে এই কার্য সম্পাদন করেছেন। যদিও পাবলিক প্রকিরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮ এর তফশিল-এর ৮১ ধারা অনুসারে প্রতি ক্রয় এর ক্ষেত্রে অনধিক ২৫,০০০/- (পঁচিশ হাজার) টাকা, তবে বছরে অনধিক ১০,০০০,০০০/- (দশ লক্ষ) টাকার ক্রয় করার বিধান আছে। তবে, তিনি এই বিধি লংঘন করে ২০১৬-১৭ অর্থ বছর ২৭,৪৫,৫৪৮/- (সাতাশ লক্ষ পয়তালি­শ হাজার পাঁচশত আটচলি­শ) টাকা, ২০১৭-১৮ অর্থ বছর ৬৩,৬১,১৪৯/- (তেষট্টি লক্ষ একষট্টি হাজার একশত উনপঞ্চাশ) ্টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থ বছর ৫৭,৬৭,২৩৩/-( সাতান্ন লক্ষ সাতষট্টি হাজার দুই শত তেতত্রিশ) টাকা, ২০১৯-২০ অর্থ বছর ৬০,০০,১৮২ (ষাট লক্ষ একশত বিরাশি) টাকা, ২০২০-২১ অর্থ বছর ৭৯,৩৬,৮৭৩/-(উনআশি লক্ষ ছত্রিশ হাজার আটশত তিহাত্তর) টাকা, এবং ২০২১-২২ অর্থ বছর ১৪,২২,৭২৭/- (চৌদ্দ লক্ষ বাইশ হাজার সাতাশ শত সাতাশ) টাকার ক্রয় করেছেন। মুলত তিনি সম্পূর্ণ বিধি নিষেধ পরিপন্থী ভাবে আর্থি সুবিধা গ্রহনের জন্য ভুয়া বির ভাউচার করে পৌরসভার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। কাউন্সিলরা আরো বলেন, মেয়র কোন প্রকার কারন ছাড়া নিজ দলীয় কর্মীদের প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য করে থাকেন। মুলত তিনি পৌরসভা ফান্ডকে নিজ দলীয় কর্মীদের প্রতিপালনের তহবিলে পরিণত করেছেন। তিনি বিগত ০৬(ছয়) বছর পৌরসভা ফান্ড থেকে ১,০৮,৮৯,৭৪৮/- টাকা আর্থিক সাহায্য প্রদান করেছেন। স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইনে পৌরসভা মেয়র বা কাউন্সিলর কর্তৃক পৌরসভার কোন ঠিকাদারী কাজে যুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু মেয়র তাজকিন আহমেদ পৌরসভা থেকে ঠিকাদারির জন্য ট্রেড লাইসেন্স গ্রহন করেছেন। তারা ঠিকাদারি লাইসেন্স নং-০৮-০০০-১০৩৩০। তিনি সরাসরি পৌরসভা কর্তৃক বাস্তবায়িত জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো প্রতিষ্ঠানিকীনে প্রকল্প’’ সরাসরি অংশগ্রহন করেছেন। পৌরসভার মেয়র নিজেকে আড়াল করতে গতকাল সাংবাদিকদের কাছে পৌরসভার ০২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ মাহমুদ পাপার বিরুদ্ধে এবং ১ নং প্যানেল মেয়র কাজী ফিরোজ হাসান সম্পর্কে যে সব তথ্য উপাত্ত প্রদান করেছেন তা হাস্যকর। ১৯৭৬ সালে মিনি মার্কেট তৈরি হওয়ার সময়ে কাউন্সিলর/কমিশনার নির্বাচিত হওয়ার বহু পূবে মিনি মার্কেটের পিছনে বাড়ি হওয়ার কারনে তৎকালীন পৌর চেয়ারম্যান কর্তৃক দুটি দোকান বরাদ্দ ২নং কাউন্সিলর এবং ০১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সবে মাত্র কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। এখন থেকে ১৫/১৬ বছর পূর্বে তার পিতা-মাতা মিনিমার্কেটস্থ দোকানঘর পৌরসভা থেকে ইজারা নিয়ে অন্যান্যদের ন্যায় বৈধ ভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন। সাতক্ষীরা পৌরসভার ঠিকাদারদের মধ্যে যারা, পৌর মেয়র ও তার পরিবারের ইট ভাটা থেকে ইট ক্রয় করেন তারা আগে পেমেন্ট পাবেন। অন্যথায় অপেক্ষার পর অপেক্ষা করতে হয়। কাউন্সিলর বৃন্দ আরো বলেন, মেয়র তাজকিন আহমেদ ক্ষমতা অপব্যবহার করে বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে পৌরসভার কাজ দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা ৪২,৬৯,৫০৭/- টাকা উত্তোলরন করেন। পৌরসভার পাবলিক টয়লেট ও সেপটিক ট্যাংক পরিস্কার বাবদ আয়ের কোন অর্থ পৌর তহবিলে জমা দেয়া হয়নি। পৌরসভার তহবিল হতে তিনি ব্যক্তিগত সিআরবি-১৫-৬৬৭৭ নং গাড়ি ও পালসার মোটর সাইকেলের জন্য টাকা তছরুপ করেছেন। সরকারী অতি জরুরি কারন এবং সরকারী নির্দেশনা ছাড়া বিমানযোগে ঢাকায় ভ্রমন দেখিয়ে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র আলহাজ্ব কাজী ফিরোজ হাসান, আনোয়ার হোসেন মিলন, রাবেয়া পারভিন কউন্সিলর কায়সারুজ্জামান হিমেল, সৈয়দ মাহমুদ পাপা, আইনুল ইসলাম নান্টা, শেখ মারুফ হাসান, শফিকুল আলম বাবু, শেখ শফিকউদ্দৌলা সাগর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর অনিমা রানী মন্ডল, নুরজাহান।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com