শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:২১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
ভূস্বর্গ কাশ্মির এখন জনশূন্য \ সীমান্তে গোলাগুলি সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতের ওপর প্রভাব \ বেলুচিস্তানে বোমা হামলায় ৪ নিরাপত্তা কর্মী নিহত গাড়িবোমা হামলায় রুশ জেনারেল নিহত শোলমারি সুইসগেট ও ভরাট নদী পরিদর্শনে খুলনা জেলা প্রশাসক বহেরা বাজার কমিটির নির্বাচন সভাপতি রাজীব—সম্পাদক রানা কলারোয়ায় মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করল মা কলারোয়ায় বিএনপি’র সাংগঠনিক কমিটির মতবিনিময় সভায় সাবেক এমপি হাবিব থামছে না সুন্দরবনে হরিণ শিকার যশোরে হাসপাতালের শৌচাগারে মিলল নবজাতকের লাশ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে যুবক আহত পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে রোমে পেঁৗছেছেন ড. ইউনূস

সুন্দরবনে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বনদস্যু সাত বাহিনী \ আতঙ্কে জেলে বাওয়ালীরা

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫

সোহরাব হোসেন শ্যামনগর মুন্সীগঞ্জ থেকে \ বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনে আবারো বেড়েছে দস্যু আতঙ্ক। দস্যু বাহিনীর আত্মসমর্পণের কারণে দস্যু আতঙ্ক কাটিয়ে কিছুদিন হাঁপ ছেড়েছিল সুন্দরবন। স্বস্তি ফিরেছিল বনের উপরে নির্ভরশীল মানুষের জীবনে। কিন্তু আবারও মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে দস্যুরা। এতে সুন্দরবনের মূর্তিমান আতঙ্ক বনদস্যু বাহিনীর কারণে বনে যেতে ভয় পাচ্ছেন জেলে বাওয়ালিরা। তবে কোস্টগার্ডের সাাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এতে তৎপরতা কমেছে বনদস্যু বাহিনীর। স্বস্তি ফিরেছে উপকূলের বনজীবীদের মাঝে। বনবিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র বলছে, সুন্দরবনের বনদস্যুরা কয়েক দফায় আত্মসমর্পণ করে আলোর পথে ফিরেছিল। ২০১৬ সালে সুন্দরবনের সাতটি বনদস্যু দল একসঙ্গে আত্মসমর্পণ করে। সে সময় ৩২ জন বনদস্যু অস্ত্র সমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার অঙ্গীকার করে। এরপর ২০১৮ সালের পহেলা নভেম্বর ৯টি বনদস্যু বাহিনীর ৫৭ জন বনদস্যু আত্মসমর্পণ করে। সূত্র বলছে, গত তিন মাসে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ২০ জনেরও বেশি জেলে ও মৌয়াল অপহরণের শিকার হয়েছেন। মুক্তিপণের জন্য তাদের কাছে দাবী করা হয়েছে অন্তত ১০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে কোস্ট গার্ড সফল অভিযানের মাধ্যমে জেলে বাওয়ালিদেরকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সুন্দরবন সংশ্লিষ্ট একাধিক জেলে ও বনজীবীরা বলছেন, বর্তমানে বিভিন্ন নামে নতুন বনদস্যু বাহিনী গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে করিম শরীফ বাহিনী, দয়াল বাহিনীসহ অন্তত ৫/৭টি ডাকাত দল রয়েছে। নৌকায় করে এসব বনদস্যুরা সুন্দরবনের গহীনে অবস্থান করে। বনের বিভিন্ন পয়েন্টে রয়েছে এদের ডেরা। সুযোগ বুঝে এই বনদস্যুরা কখনো মাছ ধরার ট্রলার কিংবা বনজীবীদের জিম্মি করে। অপহরণের পর বনদস্যু বাহিনীর ডেরায় নিয়ে করা হয় অমানুসিক নির্যাতন। অনেকেই মুক্তিপণ দিয়ে সেখান থেকে ছাড়া পেয়েছেন। বনদস্যু বাহিনীর হাতে অপহরণের শিকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলে বলেন, ‘সুন্দরবনের যে কয়টি দস্যু বাহিনী এই মুহূর্তে সক্রিয় রয়েছে তার মধ্যে দয়াল বাহিনী অত্যন্ত দুর্র্ধষ। এই বনদস্যুরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে মাছ ধরার ট্রলারে হামলা করে অপহরণ করে। এরা এতটাই কুখ্যাত যে মুক্তিপণের টাকা না দিলে নির্মম নির্যাতন চালায়। এরা কেউকে মেরে নদীতে ভাসিয়ে দিতেও দ্বিধাবোধ করে না’। এলাকার সচেতন মহল দাবি করে বলেন, বনদস্যুরা সাধারণত বনজীবী কিংবা জেলে বাওয়ালিদের ছদ্মবেশে সুন্দরবনের প্রবেশ করে দস্যুতায় জড়িয়ে পড়ে। এসব বনদস্যুদের ডাটাবেজ তৈরি করে তাদেরকে ডিজিটালাইজড করতে হবে, যাতে সহজেই তাদেরকে চিহ্নিত করা যায়। এসব দস্যুদের চিহ্নিত করে তাদের সুন্দরবনে যাওয়া আটকাতে হবে। পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে হবে এবং পরিবারের প্রতিও নজর রাখতে হবে। সুন্দরবনের বিভিন্ন পয়েন্টে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল এবং নজরদারি বাড়াতে হবে। তাদেরকে বিকল্প কর্মসংস্থানের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। সুন্দরবনের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য এটি শুধু একটি নিরাপত্তার ইস্যু নয়, বরং এটি অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত সংকটের দিকেও ইঙ্গিত করছে। যদি দ্রæত ব্যবস্থা না নেয়া হয়, তবে এই প্রাকৃতিক সম্পদ ও এর উপর নির্ভরশীল মানুষের ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।এদিকে গেল ১০ এপ্রিল সুন্দরবনের গহীন হতে বনদস্যু করিম শরীফ বাহিনীর জিম্মি থেকে ৬ নারীসহ ৩৩ জেলেকে উদ্ধার করে কোস্টগার্ড। এর আগেও অস্ত্রসহ কয়েকজন দস্যুকেও গ্রেপ্তার করে কোস্টগার্ড।কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লে. মাহবুব হোসেন বলেন, বিগত দিনে সুন্দরবনের দস্যুতা দমনে কোস্ট গার্ড যেমনি তৎপর ছিল, তেমনি বর্তমানেও রয়েছে, আগামীতেও এ তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com