মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:০৭ পূর্বাহ্ন

অনশনে না গিয়ে শিক্ষার্থীদের আলোচনার আহŸান কুয়েট প্রশাসনের

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫

এফএনএস: আমরণ অনশনে না গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ছাত্র কল্যাণ বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ ইলিয়াস আকতার। গতকাল সোমবার দুপুর পৌনে একটায় ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন তিনি। অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ ইলিয়াস বলেন, বিকেল ৩টা থেকে শিক্ষার্থীদের অনশন করার কর্মসূচি রয়েছে। আমরা তাদেরকে বুঝিয়েছি, আশা করি তারা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবে। শিক্ষার্থীরা অল্প কয়েকজন আমাদের সঙ্গে বসেছিল, কিন্তু তারা বাকি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি আরও বলেন, ৩৭ জন শিক্ষার্থীর সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত স্থগিত করার জন্য প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবো বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করেছি। ছাত্রদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। নির্দোষ কেউ শাস্তি পাবে না। হলে খাবারের সমস্যা আছে। খাবারের ব্যবস্থা করার কথা বলেছি। নির্দিষ্ট কোনো এজেন্ডা নিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনা হয়নি। তবে আলোচনা হয়েছে শিক্ষার সার্বিক পরিবেশ স্বাভাবিক করার জন্য। তিনি উল্লেখ করে বলেন, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে আদালতে যে মামলা হয়েছে সে ব্যাপারে শিক্ষার্থীদেরকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হবে। মামলার বাদীর সঙ্গে আলোচনা করে মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। মামলার বিষয়ে কুয়েট প্রশাসনের কোনো ইন্ধন নেই বলেও তিনি জানান।

বড় ভ‚মিকম্পের শঙ্কা বাড়াচ্ছে
এফএনএস : সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ঘন ঘন একাধিক ভ‚মিকম্পের ঘটনা ঘটেছে। আর অল্পসময়ে একাধিক ভ‚মিকম্প দেশে বড় ভ‚মিকম্পের শঙ্কা বাড়াচ্ছে। বিগত তিন মাসে বাংলাদেশ ও পাশর্^বর্তী চার দেশে ৪৪টি ভ‚মিকম্পের ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ গত ১১ এপ্রিল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৪ মাত্রার ভ‚মিকম্প অনুভ‚ত হয়েছে। বিকাল ৪টা ৫২ মিনিটে এ ভ‚মিকম্প অনুভ‚ত হয়। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভ‚মিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র ভ‚মিকম্পের তথ্য নিশ্চিত করে। ঢাকা থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জসংলগ্ন ভারত সীমান্তে এর উৎপত্তিস্থল। আবহাওয়া অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, চলতি ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ ও এর পাশর্^বর্তী দেশে ছোট-বড় অন্তত ৪৪টি ভ‚মিকম্প হয়েছে। তার মধ্যে গত ২৮ মার্চ মিয়ানমারে সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ৩ মাত্রার ভ‚মিকম্প অনুভ‚ত হয়েছে। একই দিনে ওই দেশটিতে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার আরেকটি ভ‚মিকম্প (আফটার শক) অনুভ‚ত হয়। ওই ভ‚মিকম্পে দেশটিতে ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটে। এটি বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানেও অনুভ‚ত হয়। ওই ভ‚মিকম্পে মিয়ানমারের পাশর্^বর্তী দেশ থাইল্যান্ডে মারাত্মক প্রভাব পড়ে। ওই দেশের রাজধানী ব্যাংককে নির্মাণাধীন ৩০ তলা একটি ভবন ধসে পড়ে। তাছাড়া জানুয়ারিতে চীনে ৭ দশমিক ১ মাত্রার ও ৫ দশমিক ৭ মাত্রার এবং ভারতে ৫ দশমিক ৩ মাত্রার ভ‚মিকম্প অনুভ‚ত হয়। ফেব্রæয়ারিতে বাংলাদেশে ৩ দশমিক ৩, ৩ দশমিক ৫ ও ২ দশমিক ৯ মাত্রার ভ‚মিকম্প হয়। একই মাসে নেপালে ৫ দশমিক ৫ ও ৫ দশমিক ২ মাত্রা এবং ভারতে ৫ দশমিক ৩ মাত্রার ভ‚মিকম্প হয়। মার্চের শুরুতে মিয়ানমার ও ভারত সীমান্তে ৫ দশমিক ৬ ও নেপালে ৫ দশমিক ১ মাত্রার ভ‚মিকম্প অনুভ‚ত হয়। আর এপ্রিলের শুরুতে ৫ দশমিক ২ মাত্রার ভ‚মিকম্পে কেঁপে ওঠে নেপাল ও ভারত। সর্বশেষ ১১ এপ্রিল বাংলাদেশে ৪ ও মিয়ানমারে ৪ দশমিক ১ মাত্রার ভ‚মিকম্প অনুভ‚ত হয়েছে। ওই সময়ে বাংলাদেশে তিনটি কম মাত্রার ভ‚মিকম্প হলেও পাশর্^বর্তী দেশ ভারত, মিয়ানমার ও নেপালে বেশি মাত্রার একাধিক ভ‚মিকম্প হয়েছে। সূত্র জানায়, বাংলাদেশসহ পাশর্^বর্তী দেশে অল্প সময়ে একাধিক ভ‚মিকম্পকে বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের জন্য বড় শঙ্কার বিষয় বলে মনে করছেন। তাদের মতে, বাংলাদেশে ১৯১৮ সালে সর্বশেষ বেশি মাত্রার ভ‚মিকম্প হয়েছিল। বেশি মাত্রার ভ‚মিকম্প একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর আবারো ফিরে আসে। ফলে গত ১০০ বছরে বড় ভ‚মিকম্প না হওয়ায় সেটি আবারো ফিরে আসতে পারে। দেশে ৫ থেকে ৭ মাত্রার ভ‚মিকম্প হলে ঢাকাসহ চট্টগ্রাম, সিলেট অঞ্চলে ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। সূত্র আরো জানায়, ভ‚মিকম্পের মতো বড় দুর্যোগের জন্য বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, মিয়ানমার অ্যাক্টিভ অঞ্চল হওয়ায় ছোট ছোট ভ‚মিকম্প হয়। স্বাভাবিকভাবে দক্ষিণ ও উত্তরাঞ্চল হচ্ছে ভ‚মিকম্পপ্রবণ অঞ্চল। সেখানে প্রায় সময়ই ছোট ছোট ভ‚মিকম্প হয়। তবে এখানে বড় ভ‚মিকম্পের আশঙ্কা রয়েছে। এর কারণ বাংলাদেশ ও এর পাশর্^বর্তী অঞ্চলে ১৯১৮ সালের পর আর বড় ধরনের ভ‚মিকম্প হয়নি। বেশি মাত্রার ভ‚মিকম্প একটি সময় পর ফিরে আসে। যার কারণে এ অঞ্চল ওই ঝুঁকিতে রয়েছে। এদিকে এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের ভ‚তাত্তি¡ক বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এটিএম সাখাওয়াত হোসেন জানান, ভৌগোলিক দিক থেকে বাংলাদেশ ভ‚মিকম্পের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। তবে ভ‚মিকম্প অনুভবের ক্ষেত্রে ভ‚পৃষ্ঠের প্লেট, উৎপত্তিস্থল, দূরত্ব, সময়কাল এসব নির্ভর করে। ভ‚তাত্তি¡ক দিক থেকে ঢাকার চেয়ে চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চল বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তবে অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও ভবন নির্মাণের কারণে ৫ থেকে ৭ মাত্রার ভ‚মিকম্প হলেই ঢাকা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com