এফএনএস বিদেশ : অপারেশন সিঁদুর নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য করার অভিযোগে অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আলি খান মাহমুদাবাদকে গ্রেফতার করেছে ভারতের দিল্লি পুলিশ। গতকাল রোববার তাকে গ্রেফতার করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এসিপি) অজীত সিং বলেন, অপারেশন সিঁদুর সংক্রান্ত কিছু মন্তব্যের ভিত্তিতে আলি খান মাহমুদাবাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিজেপি যুব মোর্চার এক নেতার অভিযোগের ভিত্তিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশোকা বিশ্ববিদ্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আমরা জানতে পেরেছি যে অধ্যাপক আলি খান মাহমুদাবাদকে গতকাল রোববার সকালে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আমরা মামলার বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। বিশ্ববিদ্যালয় পুরোপুরি তদন্তে পুলিশ ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করবে। মাহমুদাবাদ তার মন্তব্যে বলেছিলেন, অনেক ডানপন্থি সমর্থক কর্নেল সোফিয়া কুরেশির প্রশংসা করছেন। এটা ভালো। তবে তারা যদি একইরকম জোরালোভাবে গণপিটুনি, বুলডোজার অভিযান ও ঘৃণার রাজনীতির শিকার নাগরিকদেরও রক্ষা করার দাবি তোলেন, তাহলে সেটাই হবে প্রকৃত দেশপ্রেম। কর্নেল কুরেশির সংবাদ সম্মেলনসহ অপারেশন সিন্দুরের বিভিন্ন উপস্থাপনাকে ‘অপটিক্স’ বা ‘লোক দেখানো’ বলে মনে হয়। তিনি বলেন, এটি যদি বাস্তবতার প্রতিফলন না হয়, তাহলে তা কেবলই ‘ভণ্ডামি’ ছাড়া আর কিছু নয়। তার এই মন্তব্য ঘিরেই বিতর্ক শুরু হয়। হরিয়ানা রাজ্য মহিলা কমিশনও নিজে থেকেই বিষয়টির তদন্তে নেমে অধ্যাপক মাহমুদাবাদকে নোটিশ পাঠায়। তাদের দাবি, এই মন্তব্য শুধু ভারতীয় সেনার নারী কর্মকর্তাদেরই অবমাননা করেছে না, বরং সা¤প্রদায়িক বিভেদ ছড়ানোর মতো মন্তব্যও এতে রয়েছে। গ্রেফতারের কয়েকদিন আগে, হরিয়ানা রাজ্য নারী কমিশন অধ্যাপক মাহমুদাবাদকে তার মন্তব্য নিয়ে একটি নোটিশ পাঠিয়েছিল। ১২ মে প্রকাশিত সেই নোটিশে বলা হয়, ৭ মে মাহমুদাবাদ যে ‘প্রকাশ্য মন্তব্য’ করেছিলেন, তা কমিশন স্বতঃপ্রণোদিতভাবে গুরুত্বসহকারে নিয়েছে। কমিশনের চেয়ারপার্সন রেনু ভাটিয়া বলেন, আমরা দেশের কন্যা কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংকে স্যালুট জানাই। কিন্তু রাজনৈতিক বিজ্ঞানের একজন অধ্যাপক তাদের নিয়ে যে ভাষা ব্যবহার করেছেন, তাতে আমরা আশা করেছিলাম যে অন্তত গতকাল রোববার কমিশনের সামনে এসে তিনি অনুশোচনা প্রকাশ করবেন। নারী কমিশনের মতে, তার এই মন্তব্যে ইউনিফর্ম পরা নারীদের, বিশেষ করে কর্নেল কুরেশি ও উইং কমান্ডার সিংয়ের অবদানকে অবমাননা করা হয়েছে এবং তাদের পেশাদারিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। মাহমুদাবাদ দাবি করেন, তার পোস্টের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে ও তিনি সংবিধানপ্রদত্ত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রয়োগ করে শান্তি ও ঐক্যের বার্তা দিতে চেয়েছেন। ২২ এপ্রিল ভারত শাসিত কাশ্মীরের পহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে ৭ মে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের সন্ত্রাসবাদী অবকাঠামোতে হামলা চালায় ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী। ওই অপারেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন কর্নেল কুরেশি ও উইং কমান্ডার উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং। সূত্র: এনডিটিভি