এফএনএস: ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ বাংলাদেশের স্থলভাগ থেকে এখনো এক হাজার কিলোমিটার দূরে রয়েছে। তবে এর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে গত সোমবার থেকে সারাদেশে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এই বৃষ্টি পরবর্তী তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। গত সোমবারের মত আজ বুধবারও দেশের উপক‚লীয় তিন বিভাগে (খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম) অতিভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা জারি করেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। উপক‚লীয় এই তিন বিভাগে আগামী তিনদিন ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই ঢাকার আকাশ মেঘলা রয়েছে। মঝে মধ্যে হালকা বৃষ্টি হয়েছে। তবে বেলা ৩টার পর থেকে মেঘের আনাগোনা বেড়ে যায়। সাড়ে তিনটার দিকে চারপাশ অন্ধকার হয়ে যেন সন্ধ্যা নামে রাজধানীতে। এরপরই শুরু হয় তুমুল বৃষ্টি। গত সোমবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশেই বৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি ২০৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায়। গতকাল মঙ্গলবার ভারি বর্ষণের সতর্কবাণীতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় অশনির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী (২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী (৮৯ মিলিমিটার বা এর বেশি) বর্ষণ হতে পারে। অন্যদিকে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর- ১৩) ঘূর্ণিঝড় অশনির বিষয়ে জানানো হয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ২০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ১৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে পরবর্তী ১২ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে। বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব ধরনের মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপক‚লের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।