দৃষ্টিপাত রিপোর্ট ॥ নিত্য প্রয়োজনীয় এবং সবজি বাজার অস্থির থাকলেও এতোদিনে মসলাবাজার স্থিতিশীল থাকলে ঈদুল আযহার আগমনী বার্তার পাশাপাশি মসলা বাজারের ঝাজ বাড়ছে। বলা যায় যতই কুরবানী ঈদ ঘনিয়ে আসছে ততোই মসলা বাজার অস্থির হয়ে উঠছে। সারা বছর যাবৎ পেয়াজ আর রসুনের বাজার ছিল উঠা পড়া। তবে বছরব্যাপী পেয়াজের বাজার ছিল উর্ধমুখি। ঈদুল আযহায় মাংস অন্যতম উপজীর্ব্য বিষয়। পশু কুরবানীর নিয়ম আর নীতিমালায় সামর্থ ও অসামর্থ সব শ্রেনির লোক কুরবানীর মাংস পেয়ে থাকে আর মাংস রান্নার অন্যতম উপকরন মসলা বিধায় বর্তমান সময়ে মসলার চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুনে। এই সুযোগে এক শ্রেনির অসাধু ব্যবসায়ীরা মসলার বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টির প্রয়াসে লিপ্ত। আবার এক শ্রেনির অসাধু ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করার পায়তারা যে করছে না তা নয় পাশাপাশি পাইকারী মসলা আমদানী কারক ও বিক্রেতারাও মসলার সঙ্গী করে অধিক মূল্য বৃদ্ধির সাথে সংশ্লিষ্ট হয়ে পড়েছে। মসলা বাজারের অস্থিরতা তথা মূল্য বৃদ্ধির যাতাকলে পৃষ্ট হচ্ছে সাধারন ভোক্তা তথা ক্রেতা সাধারন। মসলা বাজারে পেয়াজ, রসুন, আদা, হলুদ, এর মূল্য বৃদ্ধি অপেক্ষা বর্তমান সময়ে সর্বাপেক্ষা আলোচিত মসলা এলাচের মূল্য বৃদ্ধি। বাজার ঘুরে দেখাগেছে পূর্বের অপেক্ষায় বেশী মূল্য বিক্রি হচ্ছে এলাচ, বাংলাদেশের মসলা বাজারে এলাচের বৃহত্তম অংশ ভারত থেকে আমদানী করা হয়। এই মসলার মূল্য বৃদ্ধির কারন হিসেবে ব্যবসায়ী বলছেন অত্যাধিক গরমের কল্যানে এলাচের উৎপাদন কাঙ্খিত না হওয়ায় মূল্য বৃদ্ধির কারন। এখানেই শেষনয় এলাচের পাশাপাশি লবঙ্গ, জিরার মূল্য বেড়েছে। সারা দেশের ন্যায় সাতক্ষীরার মসলা বাজারের ঝাজ ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল সরজমিন সাতক্ষীরা পাইকারী মসলা বাজার এর চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে তা বিগত দুই মাসের ব্যবধানে উর্ধমুখি। পাইকারী কেজি প্রতি এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৩১শত থেকে ৩২ শত টাকায়,জিরা কেজি প্রতি বিভিন্ন ধরনের ৬৮০ হতে ৯০০ টাকা, লবঙ্গ বাজারের চিত্র ভিন্ন ধরনের ১০ কেজি প্রতি কার্টুন বিক্রি হচ্ছে ১৪ হাজার টাকায় এবং কেজি প্রতি ১৮০০ টাকায় দারুচিনি কেজি প্রতি ৪৩৫-৪০০ টাকা, কিসমিস ৩০৫ থেকে ৩১০ টাকা, রসুন কেজি প্রতি ২১০ থেকে ২১৫, গুড়োঝাল কেজি প্রতি ৪১০ থেকে ৪২০, হলুদ ৩০০ থেকে ৩০৫ টাকা, পেয়াজ (ভারতীয়) ৭৩ থেকে ৭৫ টাকা, জয়ত্রী কেজি প্রতি ৩২০০ টাকা, জয়ফল ৭০০ থেকে ৭৭৫ টাকা, মূল্য বেড়েছে কাঠবাদাম, ধনের গুড়া, কালো মরিচ, এর মূল্য দেশের বৃহত্তম মসলা পাইকারী বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ, উক্ত পাইকারী বাজারেও দফায় দফায় মসলার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় পাইকারী বাজারের মূল্য এবং খুচরা বাজারের মূল্যের মাঝে যোজন যোজন ব্যবধান। মসলার মূল্য বৃদ্ধির এই অসম সময়গুলোতে খুচরা মসলা ক্রেতারা সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বাজারের সিংহ ভাগ ক্রেতারা বিভিন্ন ধরনের মসলা এক কেজি বা পাঁচশত গ্রামক্রয়ের ক্ষমতা হতে বঞ্চিত, আবার অনেক ক্রেতা মসলার কেজি মূল্য না জেনেই ৫০ টাকার, ১০০ টাকার বা ৩০টাকার মরিচ, এলাচ, সহ অন্যান্য মসলার চাহিদা জানালে এক্ষেত্রে সৎ বিক্রেতারা এক ধরনের মূল্য রাখে আর অসাধু বিক্রেতারা অধিকমূল্য রাখে এখানে খুচরা ক্রেতাদের ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে বাস্তবেও তাই ঘটছে। মাংস রান্নার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে ভোজ্য তেলের বিকল্প নেই কিন্তু ভোজ্য তেলের বাজারের ধারাবাহিকতার ছন্দ পতন ঘটছে। ঈদের মসলা বাজার সিন্ডিকেট চক্রের হাতে বন্দি হলে দৃশ্যত ক্ষতিগ্রস্থ হবে সাধারন ভোক্তারা। অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ব রোধে এবং অযৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধি রোধে বাজার মনিটরিং সহ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপ অপরিহার্য।