শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:১২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রাণিসম্পদের উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর এবার ইসরাইলের সেনা ঘাটিতে হিজবুল্লাহর হামলা প্রতাপনগর গ্যাস লাইট বিস্ফোরণে অগ্নিকাণ্ড প্রাণে রক্ষা পেলেন গবাদি পশু। কালীগঞ্জের দিনব্যাপী সার্বজনীন বাসন্তী পূজা কালিগঞ্জ প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী সাতক্ষীরায় পেশাজীবী গাড়ি চালকদের প্রশিক্ষণ শ্যামনগরে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করলেন এমপি আতাউল হক দোলন শ্যামনগরে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী উদ্বোধন পরানপুরে বিশ্বের সকল জীবের শান্তি ও মঙ্গল কামনায় সনাতন ধর্ম সভা অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে জাহিদ হজ্ব গ্রুপের ফ্রি ওমরাহ লটারী ড্র অনুষ্ঠিত

অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে ঝুঁকিপূর্ণ যান মোটর সাইকেলের ব্যবহার

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২৩

এফএনএস : দেশে অস্বাভাবিক হারে ঝুঁকিপূর্ণ যান মোটর সাইকেলের ব্যবহার বাড়ছে। ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় বাড়ছে আহত ও নিহতের সংখ্যাও। মোটর সাইকেল চালকদের অহেতকু হর্নে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র শব্দ দূষণ। বিভিন্ন গবেষণার তথ্যানুযায়ী মোটরসাইকেল একটি ঝুঁকিপূর্ণ বাহন। মোটর সাইকেল দুর্ঘটনার ঝুঁকি ৩০ গুণ বেশি। কিন্তু সাম্প্রতিককালে মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ ওই বাহনটির দিকেই বেশি আকৃষ্ট হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় সুযোগ পেলেই বেপরোয়া মোটর সাইকেল চালানো কিংবা ফুটপাতের ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল চালানো একটি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। রাজধানীতে তীব্র যানজটের কারণে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য মোটর সাইকেলের ব্যবহার বাড়ছে। কিন্তু তাতে দীর্ঘ মেয়াদি ঝুঁকিতে পড়ছে দেশ। বর্তমানে রাজধানীতে গণপরিবহনের চেয়ে চুক্তিভিত্তিক যাত্রী পরিবহনকারী মোটর সাইকেলের সংখ্যাই বেশি। ঢাকার প্রতিটি ট্রাফিক সিগন্যালেই বিপুলসংখ্যক মোটরসাইকেল অপেক্ষা করতে দেখা যায়। আর সিগন্যাল শেষ হওয়ার আগেই ওসব মোটর সাইকেল বেপরোয়া গতিতে চলাচল করে। সারাদেশের সড়ক ও মহাসড়কেই মোটর সাইকেলের বেপরোয়া গতি ছড়িয়ে পড়ায় বাড়ছে দুর্ঘটনা। আর ওসব দুর্ঘটনায় প্রাণহানির পাশাপাশি অনেকে আহত হয়ে পঙ্গু হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বেসরকারি এক হিসাবে সারাদেশে গত এক বছরে ২ হাজার ৯৭৩টি মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ৯১ জন নিহত ও ২ হাজার ১৫৪ জন আহত হয়েছে। নিহতের মধ্যে ৭৬ দশমিক ৪১ শতাংশ ১৪ থেকে ৪৫ বছর বয়সী। তাদের বেশিরভাগই যুবক ও শিক্ষার্থী। সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের কাছে ঢাকা ও সারাদেশে কি পরিমাণ মোটরসাইকেল চলাচল করে কোন পরিসংখ্যান নেই। তবে বিআরটিএ’র তথ্যমতে সারাদেশে এ পর্যন্ত অর্ধ কোটিরও বেশি মোটর সাইকেলের রেজিস্ট্রেশন দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে শুধু ঢাকায় নিবন্ধনকৃত মোটরসাইকেলের সংখ্যা ৪০ লাখেরও বেশি। গত এক বছরে সারাদেশে ৬ লাখ ২৭ হাজার ৭৬০টি মোটরসাইকেল নিবন্ধন দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে শুধু ঢাকা মহানগরীতে ৫ লাখ ৬ হাজার ৯১২টি মোটরসাইকেল নিবন্ধন দেয়া হয়। আর তার বেশির ভাগই রাজধানীতে চলাচল করছে। সূত্র জানায়, বিগত ২০১৬-১৭ সালে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে রাইড শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে মোটরসাইকেল চলাচল শুরু হলে এর চাহিদা বেড়ে যায়। ঢাকা শহরে তীব্র যানজটের মধ্যে সহজে চলাচলের জন্য অনেকেই মোটরবাইক ব্যবহার করে। এমন অবস্থায় টাকা আয়ের পথ হিসেবে অনেকেই রাইড শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে মোটরসাইকেল চালাচ্ছে। যদিও বর্তমানে বেশিরভাগ মোটরসাইকেল চালকরাই রাইড শেয়ারিং ছাড়া চুক্তিভিত্তিক যাত্রী পরিবহন করছে। অনেকে তা পেশা হিসেবেও নিয়েছে। ফলে এখন মোটরসাইকেল শুধু সড়ক ও মহাসড়ক নয়, পল­ী অঞ্চলের মাটির সড়কেও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। অনেক এলাকায় সরকারি নিবন্ধন ছাড়াই ওসব মোটর বাইক চলছে। ফলে সড়ক দুর্ঘটনাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে বেসরকারি সংস্থা রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, ২০২২ সালে ২ হাজার ৯৭৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ৯১ জন নিহত এবং ২ হাজার ১৫৪ জন আহত। অন্য যানবাহনের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটেছে ২১ দশমিক ২৬ শতাংশ, মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩২ দশমিক ২২ শতাংশ, মোটরসাইকেলে ভারি যানবাহনের চাপা ও ধাক্কা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে ৪৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ এবং অন্যান্য কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ৩৮ দশমিক ৩১ শতাংশ দুর্ঘটনার জন্য মোটরসাইকেল চালক এককভাবে দায়ী ছিল। দুর্ঘটনার জন্য বাসের চালক দায়ী ১১ দশমিক ৯৭ শতাংশ, ট্রাক চালক দায়ী ২৯ দশমিক ১৬ শতাংশ, কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি-ট্যাংকার চালক দায়ী ৯ দশমিক ১১ শতাংশ, প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস চালক দায়ী ২ দশমিক ৮৪ শতাংশ, থ্রি-হুইলার ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ, বাইসাইকেল, প্যাডেল রিক্সা, রিক্সাভ্যান চালক দায়ী ০ দশমিক ৯৪ শতাংশ এবং পথচারী দায়ী ৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং অন্যান্য কারণ দায়ী ০ দশমিক ৪৩ শতাংশ। জাতীয় মহাসড়কে ৩২ দশমিক ৩৫ শতাংশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে, ৪১ দশমিক ১৩ শতাংশ ঘটেছে আঞ্চলিক সড়কে, ১৫ দশমিক ২৮ শতাংশ ঘটেছে গ্রামীণ সড়কে এবং ১১ দশমিক ২৪ শতাংশ শহরের সড়কে দুর্ঘটনা ঘটেছে। অপ্রাপ্ত বয়সের কিশোর-যুবকরা বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর কারণে দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মূলত দেশে গণপরিবহন ব্যবস্থা উন্নত ও সহজলভ্য না হওয়া এবং যানজটের কারণে মানুষ মোটরসাইকেল ব্যবহারে উৎসাহিত হচ্ছে। ফলে দুর্ঘটনাও বাড়ছে। মোটরসাইকেল চালকদের বিরাট অংশই কিশোর ও যুবক। এদিকে মোটরসাইকেল চালকদের বিরুদ্ধে জোরালো হচ্ছে বেপরোয়া আচরণের অভিযোগ। মোটরসাইকেল চালকদের বিরুদ্ধে ট্রাফিক সিগন্যাল অমান্য করার অভিযোগ রয়েছে। সড়কের সিগন্যালে অপেক্ষার ধৈর্যও তাদের থাকে না। অনেক মোটরসাইকেল আরোহীরা যখন-তখন ফুটপাতের ওপর উঠিয়ে দেয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে মামলা ও জরিমানা করা হয়। অন্যদিকে এ বিষয়ে বিআরটিএর পরিচালক (রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী জানান, সারাদেশে কি পরিমাণ মোটরসাইকেল চলাচল করে এর তথ্য বিআরটিতে নেই। সড়ক ও মহাসড়কে মোটরসাইকেলসহ ছোট ছোট মোটরযান নিয়ন্ত্রণে একটি নীতিমালার খসড়া তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আর ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত মোটরসাইকেল নিবন্ধন প্রদানের সময়সীমা আগামী ১৪ ফেব্র“য়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com