রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

অ্যাশেজ দিয়েই ব্রডের বিদায়ের ঘোষণা

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ৩১ জুলাই, ২০২৩

এফএনএস স্পোর্টস: অবিশ্বাস্য সব সাফল্যে ঠাসা, স্বপ্নময় ক্যারিয়ারের শেষের একদম দুয়ারে দাঁড়িয়ে স্টুয়ার্ট ব্রড। চলতি অ্যাশেজ শেষে পেশাদার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞ এই পেসার। দা ওভালে অ্যাশেজের শেষ টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শেষে এই সিদ্ধান্ত জানান ব্রড। স্কাই স্পোর্টসকে শনিবার তিনি বলেন, চলমান পঞ্চম টেস্টই তার ক্যারিয়ারের শেষ। সবসময় চ‚ড়ায় থেকেই বিদায় নিতে চেয়েছিলেন টেস্ট ইতিহাসের দ্বিতীয় সফলতম পেসার। তাই এটাই সঠিক সময় বলে মনে করেন তার। “এটা ছিল বিস্ময়কর এক অভিযাত্রা। নটিংহ্যামশায়ার ও ইংল্যান্ডের জার্সি পরতে পারা অনেক বড় পাওয়া।” “গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই আমি এটা নিয়ে ভাবছি। আমার কাছে সবসময়ই ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার লড়াই চ‚ড়ান্ত। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আমার যে লড়াই, সেটা আমি ভালোবাসি। অ্যাশেজ ক্রিকেটের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালোবাসার। আমি চেয়েছি, আমার শেষ ব্যাটিং ও বোলিং হোক অ্যাশেজ ক্রিকেটে।” টেস্টের পঞ্চম সফলতম বোলার হিসেবে অবসরে যাচ্ছেন ব্রড। ভাঙছে এই সংস্করণের ইতিহাসের সফলতম জুটি। যেখানে তার সঙ্গী ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণের সফলতম পেসার অ্যান্ডারসন। আপাতত অবশ্য অবসরের ভাবনা নেই অ্যান্ডারসনের। ব্রড জানান, দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে শুক্রবার রাতে অবসরের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। “গত রাতে আমি স্টোকসিকে (ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস) বলি, সকালে ড্রেসিংরুমে জানাই। সত্িয বলতে আমার মনে হয়েছে, এটাই সঠিক সময়।” “এ নিয়ে আমি অনেক ভেবেছি। এমনকি গতকাল রাত আটটা পর্যন্তও ভেবেছি। এটা ঠিক পঞ্চাশ/পঞ্চাশ ছিল না, আমি কিছুটা অনিশ্চিত ছিলাম। তবে যখন আমি স্টোকসির রুমে যাই আর তাকে বলি, তখন আমি বেশ ভালো অনুভব করি।” এখন পর্যন্ত টেস্টে ব্রডের উইকেট ৬০২টি। সংখ্যাটি বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ আছে এখনও। এই সংস্করণে তার রান ৩ হাজার ৬৫৬। তৃতীয় দিন শেষে অপরাজিত আছেন তিনি ও অ্যান্ডারসন। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ৯ উইকেটে ৩৮৯ রানে দিন শেষ করেছে ইংল্যান্ড। দলটি এখন এগিয়ে ৩৭৭ রানে। যদি স্বাগতিকরা জিততে পারে তাহলে সিরিজ শেষ হবে ২-২ সমতায়।সিরিজে এখন পর্যন্ত ২০ উইকেট নিয়েছেন ব্রড। এই বয়সে ¯্রফে ছয় সপ্তাহের মধ্েয পাঁচটি টেস্ট খেলতে পেরে তিনি নিজেই কিছুটা বিস্মিত। “সব সময় যতটা ভালোবেসেছি ক্রিকেটকে এখনও ততটাই ভালোবাসি। এই সিরিজে অংশ নিতে পারাটা দারুণ। আমি যত সিরিজ খেলেছি, তার মধ্যে এটাই সবচেয়ে উপভোগ্য ও আনন্দদায়ক।” ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে শ্রীলঙ্কায় টেস্ট ক্রিকেটে যাত্রা শুরু হয় ব্রডের। বর্ণাঢ্য পথচলায় গত সপ্তাহে অ্যাশেজের চতুর্থ ম্যাচে কেবল দ্বিতীয় পেসার হিসেবে স্পর্শ করেন ৬০০ টেস্ট উইকেটের মাইলফলক। ১২১টি ওয়ানডে ও ৫৬টি টি-টোয়েন্টিও খেলেছেন ব্রড, ২০১১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত সংস্করণে দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। ২০১৬ সাল থেকে খেলছেন কেবল টেস্টেই। অ্যাশেজে ইংল্যান্ডের সেরা পারফরমারদের একজন ব্রড। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিয়েছেন রেকর্ড ১৫১ উইকেট। ২০১৫ সালে ট্রেন্ট ব্রিজে ১৫ রানে ৮ উইকেট তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে উজ্জ্বল পারফরম্যান্স। একই মাঠে ২০১১ সালে ভারতের বিপক্ষে কেবল ৫.১ ওভারে ৫ রানে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। টানা তিন বলে মহেন্দ্র সিং ধোনি, হরভজন সিং ও প্রাভিন কুমারকে ফিরিয়ে করেছিলেন নিজের প্রথম টেস্ট হ্যাটট্রিক। তার আরেকটি নজরকাড়া পারফরম্যান্স দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। ২০১৬ সালে ৩১ বলে ১ রানে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। ২০০৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজের প্রথম সিরিজের পর থেকে চির প্রতিদ্ব›দ্বীদের বিপক্ষে ঘরের মাঠে প্রতিটি টেস্ট খেলেছেন ব্রড। এখন পর্যন্ত নিয়েছেন ১০৪ উইকেট। বিদায় বেলায় অ্যাশেজে পারফরম্যান্সকেই বড় করে দেখছেন তিনি। “বেড়ে ওঠার সময় খুব ছোট থেকেই বুঁদ ছিলাম (অ্যাশেজ ক্রিকেটে)। অবশ্যই আমি মনে করি, খেলোয়াড় হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ডে আমার রেকর্ড ভালো। সব মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটে যে প্রতিদ্ব›িদ্বতা নিয়ে আসে, সেটা আমার সেরাটা বের করে আনে। আমি জানি, ভালো একজন বোলার হতে আমার আবেগ হতে হবে আকাশ-ছোঁয়া।” “অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দেড়শ টেস্ট উইকেট নিতে পেরে, এই ক্যাটাগরিতে শেন ওয়ার্ন, গেøন ম্যাকগ্রার চেয়ে উপরে থাকতে পেরে আমি গর্বিত। নিশ্চিতভাবেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বোলিংয়ের প্রতিটা মুহূর্ত আমি উপভোগ করি।”

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com