ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি ॥ বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা বিধৌত সুন্দরবন যেন চির সুন্দর। তার অনন্ত চিরযৌবনা সৌন্দর্য হাতছানি দিয়ে ডাকে ভ্রমণ পিপাসু মানুষ কে। ভ্রমণ পিপাসু মানুষ ও তার এ সৌন্দর্যে বিমোহিত।প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে কার না মন চায়। সৌন্দর্যের এই লীলাভূমির ডাকে সাড়া দিয়ে দিনে দিনে বাড়ছে ভ্রমণ পিপাসু মানুষের সংখ্যা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা গেল এমন তথ্য। তবু এ সংখ্যা যেন পর্যাপ্ত নয়। সুন্দরবনকেন্দ্রিক যে পরিমাণ মানুষ আসার কথা হিসাব অনুযায়ী আদৌ মিলছে না। অনিন্দ সুন্দর প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য্যের আধার আমাদের গর্বের প্রতিক প্রিয় সুন্দর বন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ, লোনাপানির বন সুন্দর বন। এ বনের বিশেষ পরিচিতি ও চেনাতে এবং জানাতে দেশী বিদেশীদের কে, সময়ের আবর্তে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের চিন্তার আকাশে জন্ম নেয় এক মহতি উদ্যোগ। যার ফল আজকের এই আকাশ নীলা ইকোট্যুরিজম। জন্ম লগ্ন থেকে যেন মানুষকে আকৃষ্ট করছে। মানুষের অভূতপূর্ব সাড়া মিললেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা, থাকার সুষম ব্যবস্থা না থাকায় দিনে দিনে যেন তার কর্ম পরিধি কমছে এই কাব্যিক লীলাভূমিতে জন্ম নেওয়া আকাশ লীনা ইকোট্যুরিজমের। সৃষ্টি লগ্নে তার সৃষ্টির উপর যে কর্মযজ্ঞ ছিল তা দিনে দিনে যেন ঝিমিয়ে পড়ছে। তার সৃষ্টি শৈলীর যে পরিকল্পনা ছিল আজ যেন তা মন্থর। আন্তরিকতার অভাব, ভবন অবকাঠামো সহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য কাজগুলো অগ্রগতিহীনতার কারণে সুন্দরবনের যে জৌলুস তা ঠিকঠাক মতো মানুষ উপভোগ করতে পরছে না। ঝড়-ঝঞ্ঝা প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহ জলোচ্ছাসের হাত থেকে রক্ষা করে। মায়ের মত পরম মমতায় সুন্দরবন উপকূলবর্তী অঞ্চলকে আগলে রাখা আমাদের এ প্রিয় সুন্দর বন সম্পর্কে সবাই চিনবে জানবে এমন প্রত্যাশা সুধী মহলের। শুধু চিনবে বা জানবে কেন,সুন্দর বনের বিশাল জায়গা জুড়ে বিস্তৃত ছোট বড় কয়েক প্রজাতির সবুজ গাছের অপরুপ মনোরম দৃশ্য,বনের মধ্য বানরের সারাক্ষন লুকচুরি,বিভিন্ন প্রজাতির পাখির কলরব,নদীর কুল কুল ধ্বনি,নদীতে পাল তোলা নৌকার মনোহরী দৃশ্য,প্রকৃতির ফুরফুরে বাতাসে শুধু দেহ মন জুড়ায় না মনের ক্ষুধা – তৃষ্নার খোরাক ও বটে।এ ট্যুরিজম স্পটের পরিপূর্ণ গঠন শিল্প আর সুন্দর বনের বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, বানর,হরিণ,জীব জন্তুর,ও কৃত্রিম কারু ক্য্যা সহ গ্রামের সাধারন দৃশ্যের সমন্বয়ে সময়ের আবর্তে পরিনত হবে অপরুপ সৌন্দর্য্যের এক মিলন মেলায় এমন টা মনে করে স্থানীয় জনগন।বর্তমানে নির্মানাধীন এ পার্কের গেস্ট হাউস,পার্কিং স্পট,ওয়াচ টাওয়ার সহ বিভিন্ন কাজ চলছে।ওয়াচ টাওয়ারে বসে বনের বিচরনকৃত বন্য প্রানী দেখা যাবে যা অত্যন্ত মজার ব্যাপার বলে অনেকে মনে করেন।ইতোমধ্যে এ পার্কে মোঃ আবদুস সামাদ ফিস মিউজিয়ামে সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির নদী ও সামুদ্রিক মাছ।এ ছাড়া গাছে গাছে ঝুলছে কৃত্রিম বানর,ঘাস আর গাছের নিচে বাঘ, পাখি ও দলে দলে চিত্রালী মায়াবী হরিন। এত সুন্দর নান্দনিক সৌন্দর্য নিয়ে যায় কল্পনার গহীন রাজ্যে। আমাদের গর্বের প্রতিক আকাশনীলা ইকোট্যুরিজমে বিটিভির সবচেয়ে জনপ্রিয় শিক্ষা ও তথ্য বিষয়ক ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদি এ পার্কে হওয়ায় এক অন্যরকম মাত্রা সৃষ্টি হয়েছিল। এর পর থেকে দর্শনার্থীদের ভিড় আনুপাতিক হারে বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। গর্বের প্রতীক প্রিয় সুন্দর বন পরিচিতিতে আরও একধাপ এগিয়ে গেল আকাশ নীলা। বেড়েছে দর্শনার্থীদের সংখ্যা। তবুও যেন আশানুরূপ চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। জাতীয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমাদৃত সৌন্দর্যের এই ভূস্বর্গে দর্শনার্থীদের পদচরণায় মুখরিত হবে। আনন্দ উচ্ছ্বাসের উদ্বেলিত হবে প্রতিটি দিনের প্রতিটি ক্ষণ। এই কাঙ্ক্ষিত ফল মিললেই সড়কপথে সুন্দরবন ভ্রমণে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে চির জাগ্রত সুন্দরবনের যে আসল রূপ বৈচিত্র তা মানব মনে প্রস্ফুটিত হবে। এমন প্রত্যাশা-আশা, আকাঙ্ক্ষায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনসহ স্থানীয় সুধী মহলের।