ব্যাটিং ব্যর্থতায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৬৪ রানে অলআউট হয়েছে সফরকারী বাংলাদেশ। জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে ১ উইকেটে ৭০ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৯ উইকেট হাতে নিয়ে ৯৪ রানে পিছিয়ে ক্যারিবীয়রা। জ্যামাইকার কিংস্টনে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিন শেষে ৩০ ওভারে ২ উইকেটে ৬৯ রান তুলেছিলো বাংলাদেশ। ওপেনার সাদমান ইসলাম ৫০ এবং শাহাদাত হোসেন ১২ রানে অপরাজিত ছিলেন। দ্বিতীয় দিনের প্রথম ৮ ওভার ভালোভাবে পার করে দেন সাদমান ও শাহাদাত। নবম ওভারে সাদমান—শাহাদাতের প্রতিরোধ ভাঙেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসার শামার জোসেফ। ২টি চারে ৮৯ বলে ২২ রান করা শাহাদাতকে বোল্ড করেন শামার। ১৯৩ বল খেলে ৭৩ রানের জুটি গড়েছিলেন দু’জনে। দলীয় ৮৩ রানে তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে শাহাদাতের আউটে মিনি ধস নামে বাংলাদেশ ইনিংসে। ৯৮ রানে ষষ্ঠ উইকেট পতন হয় টাইগারদের। লিটন দাসকে জেইডেন সিলেস ও জাকের আলিকে বিদায় দেন শামার। দুই ব্যাটারই ১ রান করে করেন। সতীর্থদের যাওয়া—আসার মাঝে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে পারেননি ২শর বেশি মিনিট ক্রিজে থাকা সাদমান। শামারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৩৭ বলে ৬৪ রান করেন প্রথম দিন দু’বার ক্যাচ দিয়ে রক্ষা পাওয়া সাদমান। ১৫ রানের ব্যবধানে ৪ ব্যাটারকে হারিয়ে দ্রুত গুটিয়ে যাবার শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশ। সেই শঙ্কা দূর করে বাংলাদেশ অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম। রানের জন্য না ছুটে উইকেট বাঁচাতে মরিয়া ছিলেন তারা। মিরাজ—তাইজুল জুটি ভাঙতে নিজেকেসহ সাত বোলার ব্যবহার করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। অবশেষে ইনিংসের ৬৪তম ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্রেক—থ্রম্ন এনে দেন পেসার আলজারি জোসেফ। দলীয় ১৩৯ রানে স্লিপে জাস্টিন গ্রেভসকে ক্যাচ দেন তাইজুল। ১৩০ মিনিট ক্রিজে থেকে ১টি চারে ৬৬ বলে ১৬ রান করেন তিনি। মিরাজের সাথে জুটিতে দলের স্কোর বোর্ডে ১১৬ বলে ৪১ রান জড়ো করেন তাইজুল। তাইজুল ফেরার পর তাসকিন আহমেদকে নিয়ে বাংলাদেশের রান দেড়শ পার করেন মিরাজ। এরপর ১ রানের ব্যবধানে সাজঘরে ফিরেন তাসকিন ও মিরাজ। একই ওভারের প্রথম ও শেষ বলে তাসকিনকে ৮ রানে ও মিরাজকে ৩৬ রানে আউট করেন সিলেস। ১৮৩ মিনিট ক্রিজে থেকে ৭৫ বলে ২টি চারে নিজের ইনিংসটি সাজান মিরাজ। তাসকিন ও মিরাজ ফেরার পর শেষ উইকেটে মাত্র ৪ রান যোগ করতে পারে বাংলাদেশ। ৭১.৫ ওভারে ১৬৪ রানে অলআউট হয় টাইগাররা। ৫ রানে শেষ ৩ উইকেট পতন হয় বাংলাদেশের। বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেরা বোলার ছিলেন সিলেস। ১৫.৫ ওভারে মাত্র ৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন তিনি। এছাড়া শামার ৩টি ও কেমার রোচ ২টি উইকেট নেন। নিজেদের প্রথম ইনিংসে খেলতে নেমে ২৫ রানের সূচনা করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৩ ওভারের শেষ বলে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন পেসার নাহিদ রানা। উইকেটরক্ষক লিটন দাসের ক্যাচ বানিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওপেনার মিখাইল লুইসকে ১২ রানে বিদায় দেন রানা। দ্বিতীয় উইকেটে কেসি কার্টিকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার ব্র্যাথওয়েট। দিন শেষে ১৪৪ বলে ৪৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়লেও, ব্যক্তিগত ২৬ ও ৩২ রানে জীবন পান ব্র্যাথওয়েট। মিরাজের বলে সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটে খেলতে না পারায় ব্র্যাথওয়েটকে লেগ বিফোর আউট দেন আম্পায়ার। সাথে—সাথে রিভিউ নিয়ে নিজের উইকেট বাঁচান ব্র্যাথওয়েট। দিন শেষে ৩টি চারে ব্র্যাথওয়েট ৩৩ ও ১টি বাউন্ডারিতে কার্টি ১৯ রানে অপরাজিত আছেন। বাংলাদেশের রানা ২৮ রানে ১টি উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
(টস—বাংলাদেশ)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৭১.৫ ওভারে ১৬৪/১০ (সাদমান ৬৪, মিরাজ ৩৬, সিলেস ৪/৫)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস : ৩৭ ওভার ৭০/১ (ব্র্যাথওয়েট ৩৩*, কার্টি ১৯, রানা ১/২৮)।