বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আশাশুনিতে সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে আর্থ সামাজিক উন্নয়ন কাজের অনুমোদন নিয়ে অননুমোদিতভাবে মাইক্রোক্রেডিটের নামে সুদী কারবারের রমরমা ব্যবসার অভিযোগ উঠেছে এজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এব্যাপারে প্রতিকার প্রার্থনা করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। এলাকাবাসীর পক্ষে আশাশুনি উপজেলার সোদকনা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের পুত্র খায়রুল বাসার (সাদ্দাম) বাদী হয়ে দাখিলকৃত লিখিত অভিযোগে জানাগেছে, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের নিচ তলার একটি কক্ষে আর্থ সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা ‘এজ’ এর আঞ্চলিক কার্যালয় অবস্থিত। এজ এর পরিচালক আশাশুনি গ্রামের মৃত আঃ গনি সরদারের পুত্র মোছাদ্দেক হোসেন। তিনি এনজিও’র নামে সঞ্চয়/আমানত/বিনিয়োগ এর পাশ বই ছাপিয়ে সদস্য ভর্তি করে সদস্যদের মধ্যে ঋণ প্রদান করে সুদের রমরমা ব্যবসা করে আসছেন। পাশ বইয়ে হিসাব লিপিবদ্ধ করে সঞ্চয় ও ঋণের হিসাব সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে। ঋণ দেওয়ার সময় অলিখিত (ফাঁকা) চেক গ্রহন করা হয়ে থাকে। পরবর্তীতে ঋণ গ্রহিতাদের সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটলে বড় অংকের টাকা বসিয়ে মামলা দায়ের ও হয়রানীর ঘটনা ঘটানো হয়ে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। বাদী খায়রুল বাসার (সাদ্দাম) বলেন, ঋণদান বা সঞ্চয় গ্রহণের জন্য কোন সংস্থা, প্রতিষ্ঠান বা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন থেকে কোন প্রকার অনুমতি না নিয়েই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ভবনে বসে এজ আর্থ সামাজিক উন্নয়ন সংস্থার নামে ভুয়া এনজিও খুলে দিদারছে মাইক্রোক্রেডিট ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন বিবাদী। সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তাদের মাঝে ক্ষুদ্রঋণ বা ব্যবসায়িক ঋণ প্রদান করা হচ্ছে। ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে স্বাক্ষর সংযুক্ত অলিখিত ব্যাংক চেক গ্রাহকদের নিকট থেকে জমা রাখছেন তিনি। সাধারণ মানুষ কোন কিছু না বুঝেই ভুঁইফোড় এসকল এনজিও প্রতিষ্ঠানে সঞ্চয় করে এবং ঋণ নিয়ে বিপাকে পড়ছে। সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নয়নের কাজ করার কথা বলে প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে ঋণদান ও সঞ্চয় গ্রহণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে বিবাদী। বাদী আরও বলেন, তিনি নিজে ঋণ গ্রহন করেন এবং পাশ বইয়ের মাধ্যমে ঋনের টাকা পরিশোধ ও সঞ্চয় জমা করেন। সঞ্চয় বাদ দিলে তার কাছে ৭ হাজার ৫০০ টাকা পাওনা খাকে। কিন্তু ঋণ গ্রহণকালে উক্ত সংস্থার কাছে জামানত রাখা স্বাক্ষরযুক্ত ফাঁকা ব্যাংক চেক ডিজ অনার করে ব্যক্তিগত লেনদেন দেখিয়ে ২ লাখ টাকা আদায়ের জন্য ১৩ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবীর মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেন মোসাদ্দেক হোসেন। ভুক্তভোগী খায়রুল বাসার সাদ্দামের মত অনেক মানুষ এজ থেকে ঋণ গ্রহণ করে বিপাকে পড়েছে বলে তিনি জানান। অবৈধ কারবারকারী এজ সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণসহ ভুক্তভোগীদের হয়রানীর হাত থেকে রক্ষায় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি। এব্যাপারে আশাশুনি উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়েছি। সমাজ সেবা অধিদপ্তরের রেজিষ্ট্রেশন নিয়ে এভাবে মাইক্রোক্রেডিট এর কাজ করার সুযোগ নেই। অভিযুক্ত এজ পরিচালককে রবিবার কাগজপত্র নিয়ে সমাজ সেবা কার্যালয়ে আসতে বলা হয়েছে।