আশাশুনি প্রতিনিধি \ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্য পুস্তক বোর্ডের (এনসিটি এর) বইয়ের বাইরে গিয়ে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে নোট—গাইড বই কিনতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে আশাশুনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির বিরুদ্ধে। আশাশুনি উপজেলার মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বোর্ড বইয়ের বাইরে সমিতির মনোনীত নোট গাইড বই ক্রয় করতে বলা হয়েছে। উপজেলার কাদাকাটি গ্রামের তুহিন উল্লাহ তুহিন নামে এক অভিভাবক উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রতিকার প্রার্থনা করে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ তদন্তের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আতিয়ার রহমান ইতিমধ্যে অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছেন। স্কুলে বোর্ড অনুমোদিত বইয়ের বাইরে কোন প্রকার বই— নোট গাইড পড়ানো সম্পুর্ণ নিষিদ্ধ থাকলেও আশাশুনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি পাঞ্জেরী নামের একটি প্রকাশনীর নোট গাইড বই পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভূক্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানাগেছে, উপজেলার শরাফপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি এব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে সভা করেছিল। সভায় পুস্তক প্রকাশক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত হয়ে তাদের সমিতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে অনুমোদন পেতে কথা বলেন। এবং সুযোগ সুবিধাদানের প্রস্তাব করেন। সভায় পাঞ্জেরী ও পপি প্রকাশনীর প্রতিনিধি ও পপুলার লাইব্রেরীর প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। পাঞ্জেরী না পপির বই সিলেক্ট করা হবে এ নিয়ে সভায় দু’টি পক্ষের সৃষ্টি হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত থাকা একজন জানান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি কুঁন্দুড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরিফুল ইসলাম, সহ সভাপতি বদরতলা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অরুন কুমার গাইন, গাবতলা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পরিমল কুমার দাশ, কাদাকাটি আরার হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বদিউজ্জামান খান ও আরো কিছু শিক্ষক পাঞ্জেরী পাবলিকেসন্স এর সাথে ১০ লক্ষ টাকার চুক্তি করেছেন। তারা ৭ লক্ষ টাকা অগ্রিম নিয়ে পাঞ্জেরীর সাথে চুক্তির ঘোষণা দিলে অনেকের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। কেননা পাঞ্জেরীর চেয়ে বেশী ১২ লক্ষ টাকা অফার করে পপি লাইব্রেরী। এনিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে প্রধান শিক্ষক গোলাম কিবরিয়া বিষয়টি নিরসন করতে চেষ্টা চালান বলে জানাগেছে। এব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আরিফুল ইসলাম জানান, ঐদিন সমিতির সাংগঠনিক মিটিং ছিল। মিটিং এ বার্ষিক আয়—ব্যয়ের হিসাব, ক্যাশিয়ার ইন্তেকাল করায় তদস্থলে একজনকে কোঅপট করা, অবসর প্রাপ্ত শিক্ষকদের আর্থিক অনুদানের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। আমাদের অজান্তে সভার মধ্যে হঠাৎ করে পাঞ্জেরী, পপি ও পপুলার লাইব্রেরীর প্রতিনিধি উপস্থিত হন। তারা তাদের বই চালানোর ব্যাপারে কথা তুললে আমরা বলি, কোন গ্রামার, ব্যাকারণ গাইড এখনো প্রকাশিত হয়নি বা আমরা দেখিনি। বই না দেখা পর্যন্ত আমরা কিছুই বলতে পারবোনা। তাছাড়া বোর্ডের সিদ্ধান্তের বাইরে আমরা কিছু করতে পারবো না। সরকার অনুমোদন না দিলে আমরা কোন বই কিনতে বলতে পাবোনা। তিনি বলেন, কারো সাথে আমাদের কোন চুক্তি বা অর্থ লেনদেন হয়নি। এব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আতিয়ার রহমান জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার কৃষ্ণা রায় মহোদয়ের নির্দেশনায় ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছি। কোন গাইড ও নোট বই শিক্ষার্থীদের কাছে বা প্রতিষ্ঠানে পাইনি। প্রধান শিক্ষকদেরকে এব্যাপারে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। অনুমোদন বিহিন কোন পাঠ্য বই না চালানোর বিষয়ে শিক্ষকদের নিয়ে সভা করে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।