বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪২ অপরাহ্ন

আশাশুনি হাসপাতালে ১০ জনের বিপরীতে বর্তমানে চিকিৎসক ৩জন

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ২২ মে, ২০২৩

এম এম নুর আলম \ সাতক্ষীরার উপকূলবর্তী একটি উপজেলা হচ্ছে আশাশুনি। এই উপজেলাটি ১১ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এখানে প্রায় চার লক্ষ মানুষের বসবাস। কিন্তু এই বিপুলসংখ্যক মানুষের চিকিৎসা সেবার জন্য প্রতিষ্ঠিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে চিকিৎসা সেবা ব্যহত হচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, আশাশুনি উপজেলার মানুষের চিকিৎসার জন্য ১৯৮৬ সালে ৬ একর জায়গা নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরুতে ৩১ শয্যা নিয়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে ৫০ শয্যার জন্য অনুমোদনের অপেক্ষায়। এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে ১০ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও সেবা দিচ্ছেন ৩ জনে। বর্তমানে সার্জারী, মেডিসিন, এ্যানেসথেশিয়া, গাইনী, মেডিকেল অফিসার, ডেন্টাল সার্জন পদটি খালি। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ল্যাবরেটরি, ডেন্টাল, রেডিও, ওয়ার্ডবয়, আয়া পদ গুলোও খালি। এছাড়ও আরো কিছু গুরুত্বপূর্ন পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। হাসপাতালটিতে আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন, এক্সরে মেশিন থাকলেও পরিচালনা করার জনবলের অভাবে এগুলো যথাসময়ে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। গাইনী চিকিৎসক না থাকলেও এই এলাকার গর্ভবতী মহিলাদের কথা মাথায় রেখে ডিএসএফ প্রকল্পের মাধ্যমে সাতক্ষীরা থেকে চিকিৎসক এনে সিজারিয়ান সেকশন পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে গত ১ বছর ধরে এ প্রকল্পের অর্থ বন্ধ রয়েছে। ডাক্তারদের আবাসিক ভবনটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রয়েছে। আবাসিক ভবনগুলো মেরামত কিংবা নতুন ভবন তৈরি করা খুবই জরুরী হয়ে পড়েছে। শনিবার (২০ মে) সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত আশাশুনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা গেছে, বহিঃবিভাগ, আন্তঃবিভাগ ও জরুরী বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসক সংকটের কারণে সহকারী সার্জনদের (ইউনিয়ন) দিয়ে রোগীদের সেবা দিতে দেখা গেছে। আন্তঃবিভাগে ৩১ জন রোগী ভর্তি আছে। জরুরী বিভাগে ২০ জন ও বহিঃবিভাগে ২০০ জনকে সারিবদ্ধ হয়ে সেবা নেওয়ার আপেক্ষায় দাড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভবনটিতে বেশ কয়েক স্থানে পলেস্তারা খসে পড়েছে। রোগীদের জন্য সুপেয় পানির কোন ব্যবস্থা দেখা যায়নি। আশাশুনি উপজেলায় বসবাসকারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আশাশুনি উপজেলাসহ এর পার্শ্ববর্তী উপজেলার মানুষ এখানে চিকিৎসা নেন। স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে গুরুতর রোগীদের সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় জরুরী বিভাগে আগত গুরুতর রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। আশাশুনি থেকে সাতক্ষীরা নিতে রোগীর স্বজনদের মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। চিকিৎসক সংকটের বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পদায়নের জন্য আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে প্রতিনিয়ত তাগিদ দিয়ে আসছি। কিন্তু কোন ব্যবস্থা হচ্ছে না। হাসপাতালে সুপেয় পানির কোন ব্যবস্থা নেই। কর্মকর্তা কর্মচারীদের আবাসনের সংকট রয়েছে। শত সংকটের মধ্যও আমরা রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি। জনবল সংকটের বিষয়টিও যথাযথ কর্তৃপক্ষ অবহিত আছেন। বহিঃর্বিভাগে এবং ভর্তিকৃত রোগীদের প্রাপ্যতা অনুসারে আমরা প্রয়োজনীয় সকল প্রকার ওষুধ সরবরাহ করে থাকি। সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন মোঃ সবিজুর রহমান বলেন, আশাশুনি দুর্যোগ কবলিত উপজেলা হওয়ায় সবসময় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখা হয়। সংকটের বিষয়টি অধিদপ্তরে সবসময় বলা হচ্ছে। আশাকরি তাড়াতাড়ি এ সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com