দিঘলিয়া প্রতিনিধি ॥ দিঘলিয়া আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আ’লীগের প্রার্থী হতে উপজেলার চারটি ইউনিয়ন চষে বেড়াচ্ছেন একঝাঁক আ’লীগ নেতা। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১০২ খুলনা-৪ (রূপসা-দিঘলিয়া-তেরখাদা) নিয়ে গঠিত তবে দিঘলিয়া উপজেলার আড়ংঘাটা ও যোগীপোল ইউনিয়ন সংসদীয় আসন খুলনা ৩ এর মধ্যে। দিঘলিয়া সদর, বারাকপুর, সেনহাটি ও গাজীরহাট ইউনিয়ন খুলনা ৪ আসনের মধ্যে। এই আসনে বেশ কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম শোনা যাচ্ছে। এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন-বর্তমান সংসদ সদস্য বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম মুর্শেদী, প্রয়াত সংসদ সদস্য এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার পুত্র জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদীন রশিদী সুকর্ণ, জেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তেরখাদা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু, জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. সুজিত অধিকারী, জেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান জামাল, খুলনা মহানগর যুবলীগের সভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা শফিকুর রহমান পলাশ। এই আসনে বিএনপির রয়েছে একক প্রার্থী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক ও ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল। জাতীয় পার্টি থেকে ডা: আবুল কাশেম এর নাম শোনা যাচ্ছে। জামায়াত ইসলামীর খুলনা জেলার নায়েবে আমীর মাওলানা কবিরুল ইসলাম। খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মহাসচিব হাফেজ অধ্যক্ষ ইউনুস আহমেদ। খুলনা-৪ আসনে ১৯৯১ সালের নির্বাচনে ৪১ হাজার ৬৯৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন জেলা আ’লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক এস এম মোস্তফা রশিদী সুজা। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে সুজা ৫৯ হাজার ৫১৬ ভোট পেয়ে পুনরায় জয়লাভ করেন। ২০০১ সালে বিএনপি নেতা এম নুরুল ইসলাম দাদু ভাই ১ লাখ ২ হাজার ৯৬৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আ’লীগ নেতা আলহাজ্ব মোল্লা জালাল উদ্দিন ১ লাখ ৯ হাজার ২১৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। আর ২০১৪ সালের নির্বাচনে এস এম মোস্তফা রশিদী সুজা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। সুজার মৃত্যুর পর এই আসনের উপ-নির্বাচনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় সালাম মুর্শেদী নির্বাচিত হন। খুলনা-৪ আসনে ভোটার ৩ লাখ ১০ হাজার ১২৩। এর মধ্যে রূপসা উপজেলায় ভোটার ১ লাখ ৩৬ হাজার ৮৬৯ জন, দিঘলিয়া উপজেলায় ভোটার ৮৬ হাজার ২৪৪ জন ও তেরখাদা উপজেলায় ভোটার ৮৭ হাজার ১০ জন। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দ্বীপ বেষ্ঠিত এই জনপদে দিনরাত চষে বেড়াচ্ছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। দিঘলিয়ায় আ’লীগের শক্ত অবস্থান থাকলেও বিভিন্ন কারনে তাদের ইমেজ নষ্ট হয়েছে। দলীয় ইমেজ নষ্ট হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো একাধিক গ্রুপ, বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর হার এবং সর্বশেষ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের পাঁচটি ইউনিয়নে নৌকা পরাজয় বরন করে। দিঘলিয়া উপজেলায় বর্তমানে সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদী এবং বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী সাহগীর হোসেন পাভেল নৌকা প্রতীক পেয়ে বিজয়ী জনপ্রতিনিধি। সবকিছু মিলিয়ে দিঘলিয়ায় আ’লীগের তৃনমুলের অবস্থা নাজুক তা বিগত উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সমীকরণ দেখলে স্পষ্ট হয়ে যায়। আ’লীগের তৃনমুলকে সংগঠিত করতে দলীয় নীতিনির্ধারকেরা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে চলেছেন।