এফএনএস বিদেশ: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০টি দেশের সংস্থা আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলন গতকাল মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ায় শুরু হয়েছে। মিয়ানমার সঙ্কট ও দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের প্রভাব নিয়ে সেখানে আলোচনা হচ্ছে। স্নায়ু যুদ্ধের চলার সময় কমিউনিজমের প্রসার ঠেকাতে ১৯৬৭ সালে আসিয়ান প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর বর্তমান সদস্যরা হচ্ছে ব্রæনাই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম। এই দেশগুলোতে ৬৫ কোটির বেশি মানুষ বাস করে এবং সম্মিলিতভাবে এটি বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি। ২০২১ সালে মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের পর দেশটির সামরিক নেতাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে আসিয়ান। তবে মিয়ানমার সঙ্কটের সমাধানে আসিয়ান সদস্যদের এক হতে দেখা যাচ্ছে না। কারণ ইন্দোনেশিয়া চায় মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার সহিংসতা বন্ধ করে আলোচনা শুরু করুক। কিন্তু অন্যদিকে জান্তা সরকারের সাথে থাইল্যান্ডের আলাদা সম্পর্ক রয়েছে। ফলে আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলন শেষে প্রকাশের জন্য যে বিবৃতির খসড়া তৈরি করা হয়েছে। সেখানেও মিয়ানমার বিষয়ে আসিয়ান দেশগুলোর মধ্যে ঐকমত্য দেখা যায়নি বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি। স¤প্রতি চীন একটি মানচিত্র প্রকাশ করেছে। তাতে দক্ষিণ চীন সাগরের একটি বড় অংশ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইন্স চীনের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। ফলে দক্ষিণ চীন সাগর ঘিরে অত্র অঞ্চলে চীনের শক্তিবৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে সম্মেলনে আলোচনা হচ্ছে। বিশ্বের দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে দ্ব›দ্বও আসিয়ানের মধ্যে থাকা ফাটল সামনে নিয়ে এসেছে। ফিলিপাইন্স ও ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ঝুঁকে রয়েছে। আর চীনকে সমর্থন করছে কম্বোডিয়া। তবে আসিয়ান অঞ্চলে চীন শক্তি দেখানোয় ওই অঞ্চলে থাকা মিত্রদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরো গভীর হবে বলে মনে করছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। আসিয়ান সম্মেলনের পর আগামী বৃহস্পতিবার ইন্দোনেশিয়ায় পূর্ব-এশিয়া সামিট হবে। সেখানে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং চীন ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা উপস্থিত থাকবেন। আসিয়ান সম্মেলন শুরুর আগে সোমবার ইন্দোনেশিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্টি নাতালেগাওয়া স্বীকার করেন, আসিয়ান যে অত্র অঞ্চলে কেন্দ্রীয় ভ‚মিকা পালনের যোগ্য, তা বিশ্ব নেতাদের বোঝানোর জন্য এখনও লড়াই করছে সংস্থাটি। তিনি বলেন, ‘আসিয়ানের মৃত্যু সংবাদ আসলে বহুবার লেখা হয়ে গেছে। তবে ওই সময়গুলোতে আসিয়ান কোনো না কোনোভাবে নিজেকে নতুন করে উদ্ভাবন করতে এবং এর প্রাসঙ্গিকতা পুনরায় তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে।’ সূত্র : ডয়চে ভেলে