শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ০৪:৪৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
সুন্দরবনে বিএসএফের রেখে যাওয়া ৭৫ জনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর দেবহাটা বিএনপির সদস্য নবায়ন উদ্বোধনী আয়োজনে জেলা বিএনপির আহবায়ক রহমাতুল্লাহ পলাশ বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন যুবদলের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত কলারোয়ায যুবদল নেতার ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ মুন্সীগঞ্জে তাপদাহে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ শ্রীউলায় ইউনিয়ন পর্যায়ে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত তারুণ্যের সমাবেশ সফল করতে স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রস্তুতি সভা ভাড়াশিমলায় ২৫০ প্রান্তিক কৃষানের মধ্যে সবজির বীজ বিতরণ খুলনার সাবেক মহিলা কাউন্সিলর গ্রেফতার বসন্তপুর ফকিরপাড়া জামে মসজিদে বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল

আয়ারল্যান্ডকে উড়িয়ে বাংলাদেশের সিরিজ জয়

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৪ মার্চ, ২০২৩

এফএনএস স্পোর্টস: সূর্যের আলো তখনও যথেষ্টই আছে। সঙ্গে জ¦ালিয়ে দেওয়া হয়েছে স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইটগুলোও। কিন্তু সব আলো যেন ¤øান বাংলাদেশের পেসারদের বোলিং রোশনাইয়ের কাছে। দুপুর আড়াইটায় শুরু ম্যাচের প্রথম ইনিংস শেষ বিকেল পৌনে পাঁচটাতেই! পেসত্রয়ীর বোলিং দ্যুতিতে ঝলসে গেল যেন আইরিশ ব্যাটিং। গতি, সুইং আর দুর্দান্ত স্কিলের মিশেলে তিন পেসার মিলে গড়লেন ইতিহাস। পেস বোলিংয়ের আলোর ছটায় বাংলাদেশ নিশ্চিত করল সিরিজ জয়। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার শেষ ওয়ানডেতে আয়ারল্যান্ডকে ১০ উইকেটে উড়িয়ে সিরিজ জয় নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। তিন সংস্করণ মিলিয়েই বাংলাদেশের প্রথম ১০ উইকেটের জয় এটি। যে জয়ের মঞ্চ গড় দেন পেসার হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ ও ইবাদত হোসেন চৌধুরি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৩৭ বছরের পথচলায় ৬৯২ ম্যাচে এই প্রথমবার প্রতিপক্ষের ১০ উইকেটই পেস বোলিংয়ে নিতে পারে বাংলাদেশ। আগের দুই ম্যাচে টস জিতে বোলিংয়ে নামা আইরিশরা আরও একবার টস জিতে বেছে নেয় এবার ব্যাটিং। কিন্তু সেই চ্যালেঞ্জ মুখ থুবড়ে পড়ে তারা। বাংলাদেশের পেসারদের স্কিলের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি আইরিশ ব্যাটিং। ¯্রফে ২৮.১ ওভারেই অলআউট তারা ১০১ রানে। বাংলাদেশের পেস আক্রমণের সবচেয়ে তরুণ যিনি, সেই হাসান মাহমুদই ছিলেন উজ্জ্বলতম। ইনিংসের প্রথম বল থেকে দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৫ উইকেট নেন তিনি ৩২ রানে। ২৩ বছর বয়সী পেসারের ছোট্ট আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং এটি। দুর্দান্ত বোলিংয়ের ধারাবাহিকতায় পেস আক্রমণের নেতা তাসকিন আহমেদের শিকার ৩ উইকেট। খরুচে শুরুর পর ইবাদত আহমেদের প্রাপ্তি ২টি। রান তাড়ায় লিটন কুমার দাস ও তামিম ইকবালের উদ্বোধনী জুটিতেই বাংলাদেশ ম্যাচ শেষ করে দেয় ১৩.১ ওভারে। ১০০ ওভারের ম্যাচ শেষ ৪১.২ ওভারেই। সিলেটে এ দিন সকাল থেকেই ছিল রোদ-মেঘ-বৃষ্টির লুকোচুরি। দুপুর নাগাদ অবশ্য বৃষ্টি থেমে যায়। তবে আকাশ ছিল কিছুটা মেঘলা। উইকেটে আগের মতোই ছিল খানিকটা ঘাসের ছোঁয়া। সেখানেই জ¦লে ওঠেন বাংলাদেশের তিন পেসার। দুর্দান্ত লেংথ আর দুই দিকে সুইংয়ের মোহনীয় বোলিংয়ে প্রথম ওভার থেকেই সুর বেঁধে দেন হাসান। আরেকপাশ থেকে শুরুটা ভালো করেন তাসকিন। আইরিশ ওপেনাররা কোনো জবাব পায়নি এই বোলিংয়ের। প্রথম ৪ ওভারে ৮ রান তোলার পর পঞ্চম ওভারে প্রথম উইকেট আসে হাসানের হাত ধরে। ধুঁকতে থাকা স্টিভেন ডোহেনি উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ২১ বলে ৮ রান করে। একটু পর এক ওভারেই জোড়া শিকার ধরেন তিনি দুর্দান্ত ডেলিভারিতে। অফ স্টাম্পের বাইরে থেকে অনেকটা ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে এলবিডবিøউ অভিজ্ঞ পল স্টার্লিং (১২ বলে ৭)। দুই বল পর আরেকটি ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে হেরি টেক্টর এলবিডবিøউ কোনো রান না করেই। পরের ওভারে আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নি ¯িøপে ক্যাচ দেন তাসকিনের বলে। ২৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে আইরিশরা তখন ধুঁকছে। ইনিংসের সবচেয়ে বড় জুটি এরপরই পায় আয়ারল্যান্ড। লর্কান টাকার নেমে আগ্রাসী কিছু শট খেলেন। ইবাদতের এক ওভারে তিনটি চার মারেন তিনি। ৪২ রানের জুটি ভাঙেন ইবাদতই। দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে ফিরিয়ে দেন তিনি ২৮ রান করা টাকারকে। পরের বলেই গতিতে পরাস্ত জর্জ ডকরেলের স্টাম্প ডিগবাজি খায় কয়েকটি। এরপর কিছুটা লড়াই করেন কেবল কার্টিস ক্যাম্পার। তাসকিন দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে তিন বলের মধ্যেই ফিরিয়ে দেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন ও মার্ক অ্যাডায়ারকে। শেষটায় আবার হাসানের হাসি। ক্যাম্পারকে ২৬ রান ফিরিয়ে প্রথমবার ৪ উইকেটের স্বাদ পান তিনি। পরের ওভারেই নিজের সেরা বোলিংকে সমৃদ্ধ করেন আরও। ১০১ রানে শেষ হয়ে যায় আইরিশ ইনিংস। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে কোনো দলের যা তৃতীয় সর্বনিম্ন ইনিংস। সহজ রান তাড়া আরও অনায়াস হয়ে যায় তামিম ও লিটনের স্ট্রোকের ফোয়ারায়। দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারিতে শুরু করেন তামিম। দ্বিতীয় ওভারে লিটন মারেন দুই চারে, তৃতীয় ওভারে তামিম তিনটি। এরপর অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটতে থাকেন দুজন। এক পর্যায়ে লড়াইটা দাঁড়ায়, কে আগে ফিফটি করবেন! শেষ পর্যন্ত অধিনায়ককে ছাড়িয়ে সেখানে জিতে যান লিটনই। যথারীতি চোখঝুড়ানোর সব শটের সমাহার সাজিয়ে ৩৮ বলে ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি ৩৮ বলে। ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৪১ বলে ৪১ রানে অপরাজিত তামিম। ২২১ বল বাকি রেখেই ম্যাচ শেষ করে বাংলাদেশ। বল বাকি রাখার হিসেবে এর চেয়ে বড় জয় আছে আর কেবল একটি। ২০০৯ সালে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়েকে ৪৪ রানে গুটিয়ে জয় এসেছিল ২২৯ বল বাকি রেখে। সিরিজ জয় ছিল প্রত্যাশিতই। এক ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে না গেলে হয়তো হোয়াইওয়াশের লক্ষ্যও পূরণ হতো। তবে প্রাপ্তি শুধু এটুকুই নয়। কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা, বিভিন্ন জনকে নানা ভ‚মিকায় পরখ করা, এমন ছোট ছোট যেসব চাওয়া ছিল, সেখানেও সফল বাংলাদেশ। দুই দল এখন মুখোমুখি হবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে, চট্টগ্রামে সেই লড়াই শুরু সোমবার থেকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আয়ারল্যান্ড: ২৮.১ ওভারে ১০১ (ডোহেনি ৮, স্টার্লিং ৭, বালবার্নি ৬, টেক্টর ০, টাকার ২৮, ক্যাম্পার ৩৬, ডকরেল ০, ম্যাকব্রাইন ১, অ্যাডায়ার ৩, হিউম ৩, হামফ্রেজ ৮*; হাসান ৮.১-১-৩২-৫, তাসকিন ১০-১-২৬-৩, ইবাদত ৬-০-২৯-২, নাসুম ৩-০-১১-০, মিরাজ ১-০-৩-০)।
বাংলাদেশ: ১৩.১ ওভারে ১০২/০ (তামিম ৪১*, লিটন ৫০*; অ্যাডায়ার ৩-০-২৯-০, হিউম ৩-০-১৫-০, হামফ্রেজ ৪-০-৩৬-০, ক্যাম্পার ৩.১-১-২১-০)।
ফল: বাংলাদেশ ১০ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ২-০তে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: হাসান মাহমুদ।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com