দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ ইসরাইল এবং হামাস যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্র দেশগুলো অনেক আগেই জড়িয়ে পড়েছে। এক কথায় বলা যায় ইসরাইল ফিলিস্তীনে তথা গাজায় হামলা পরিচালনার সময় থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে সমর্থন জানিয়ে চলেছে। ইতিহাসের জঘন্যতম নির্মম হত্যাকান্ডের চাল হচ্ছে গাজা। এক কথায় বলা যায় ইতিহাসের অন্ধকারচ্ছন্ন পর্যায়ে পৌছেছে ঐতিহাসিক গাজা। দখলদার ইসরাইলি বাহিনী গাজাকে কেবল দখল করতে চাইছে না গাজার অধিবাসি ফিলিস্তীনিদেরকে নিশ্চিহৃ করতে চাইছে প্রতিদিনই গাজায় বিমান হামলার লোমহর্ষক ঘটনা গণহত্যায় পরিনত হচ্ছে। গতকাল ও দখলদার বাহিনীর বিমান হামলা বলেছে। খান ইউনিসে হামাস যোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রন খর্ব করতে অন্তত একমাস যাবৎ দখলদার বাহিনী ব্যাপক ভাবে বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযান পরিচালনা করছে। উত্তরাঞ্চলের একাধিক এলাকাতে ইসরাইলি বাহিনীর ব্যাপক হামলায় জনমানব শুন্য হয়ে পড়েছে। ইহুদী বাহিনীর পক্ষ হতে ঘোষনা দেওয়া হয়েছে যুদ্ধের পরবর্তি সময় গুলোতে তারা গাজার পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রন গ্রহণ করবে এবং গাজা কি অবস্থায় পরিচালিত হবে তার রোড ম্যাপ ঘোষনা করেছে ইসরাইল বাহিনী। বাস্তবতা হলো দীর্ঘ তিন মাসের মধ্যেও বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী ইসরাইল নামক দখলদারী দেশ নিরীহ ফিলিস্তীনিদেরকে হত্যা করতে পারলেও তারা গাজাকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে জীবন পন যুদ্ধরত হামাসকে ধ্বংস করতে পারেনি। বরঞ্চ ইসরাইলি বাহিনী পিছন হতে হামলা করছে। তার অর্থ সম্মুখ যুদ্ধে বা প্রকাশ্য যুদ্ধে জয়ী না হয়ে তারা গুপ্ত হামলার পথ বেছে নিয়েছে। সম্প্রতি লোবননে অবস্থানরত হামাসের উপ প্রধান সহ সাত হামাস কমান্ডারকে বিমান হামলায় হত্যার মাধ্যমে ইসরাইল তাদের দেউলিয়াপনাকে সম্মুখ পানে আনলো। এদিকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন দশ দেশের (জোটভূক্ত) লোহিত সাগরে হুতি বিদ্রোহীদের দমনে ব্যর্থ হয়েছে। সাগরে হুতি বিদ্রোহীদের অবস্থানের উপর একের পর এক ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালালেও শক্তি আর সামর্থের কারনে হুতি বিদ্রোহীরা সাগরে ইসরাইলি জাহাজে হামলা করছে অথবা আটক করছে। সাগরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা দেশের জাহাজ চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করে চলেছে। ইতিমধ্যে হুতি বিদ্রোহীরা ঘোষনা দিয়েছে যে ইসরাইল ফিলিস্তীনিদের হত্যা ও গাজায় বিমান হামলা বন্ধ না করলে তারা সাগরে ইসরাইলের এবং ইসরাইলগামী কোন জাহাজ চলাচল করতে দেবে না। এদিকে গণহত্যার জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে দক্ষিন আফ্রিকার মামলা দায়েরকে জোরালো ভাবে সমর্থন জুগিয়েছে মালদ্বীপ। নাসিরিয়া ও পাকিস্তান। পশ্চিমা মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে মঙ্গলবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তৃতা দেওয়ঢার প্রাক্কালে উল্লেখিত তিনটি দেশ আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরাইলের বিচার হওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন। এদিকে হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসেম ব্রিগেড জানিয়েছে গাজার প্রতিজন ফিলিস্তীনি এক এক জন হামাস, আর তাই গাজার প্রতিটি প্রান্তে প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে হামাস যোদ্ধারা। কখনও এবং কোন অবস্থাতেই হামাসকে নির্মূল করা সম্ভব না। হামাসের পক্ষ হতে আরও ঘোষনা করা হয়েছে যে ইসরাইলের সাথে কোন অবস্থাতেই সমঝোতা বা যুদ্ধ বিরতির আলোচনায় বসবে না হামাস। গতকালও গাজার দক্ষিন ও পশ্চিম এলাকায় হামাস যোদ্ধাদের সাথে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ হয়েছে। এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যাস্টনির ইসরাইল সফর শেষ হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে গাজার বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা না করার বিষয়ে নিশ্চিত করার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর। উল্লেখ্য ইতিপূর্বে আরব দেশগুলো ইসরাইল বর্তমান সময়ের ন্যায় একমাসে ঐক্যবদ্ধ ছিল না।, আরব দেশগুলোর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ ছিল কিন্তু ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকান্ডের কারনে আরব দেশগুলো দখলদার ও গণহত্যাকারী ইসরাইলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ছিল না, আরব দেশগুলোর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ ছিল কিন্তু ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকান্ডের কারনে আরকব দেশগুলো দখলদার ও গণহত্যাকারী ইসরাইলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিয়েছে। জর্দান আবারও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহবান জানিয়েছেন যে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতির। জাতিসংঘ গাজা যুদ্ধের পর থেকে ইসরাইলের হামলা, নিরীহ ও বেসামরিক নাগরিক হত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় ইসরাইলের পক্ষ হতে জাতিসংঘের উপর যুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত অব্যাহত আছে। গতকাল হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নসরুল্লাহ আবারও ঘোষনা দিয়ে বলেছে যে কোন অবস্থাতেই ইসরাইলের দুঃসাহসকে সয্য করা হবে না। লেবাননের অভ্যন্তরে হামলার কারনে ইসরাইলকে খেসারত দিতে হবে। হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা গতকাল ও ইসরাইল ক্ষেপনাস্ত্র ও রকেট হামলা চালিয়েছে। গাজায় ত্রান তৎপরতা পরিচালিত হচ্ছে। ইসরাইল বাহিনী ত্রান তৎপরতায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করলেও মিশরের রঙ্গা সীমান্ত দিয়ে ত্রানবাহী যানবাহন প্রবেশ কড়াকড়ি আরোপ করেছে। গোটা গাজা দৃশ্যতঃ ক্ষুধার নগরীতে পরিনত হয়েছে গাজায় সুপেয় পানির আরও পরিলক্ষিত হচ্ছে। নানান ধরনের রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে গাজাবাসি, চরম ভাবে প্রতিবন্ধকতায় পড়ছে ফিলিস্তীনিরা।