দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যরা এবার ফিলিস্তিনিদের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে খ্যাত রাফায় হামলা শুরু করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের কসাইখ্যাত ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বারবার ঘোষনা দিয়ে আসছে যে রাফা শহরে হামলা পরিচালনা করা হবে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরাইল সংশি−ষ্ট দেশগুলো রাফায় অভিযান পরিচালনা ও হত্যাকান্ড হতে বিরত থাকার আহবান জানিয়ে আসছিল। কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা জানিয়েছে, ইসলাইলের প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় জানিয়েছে যে হামাস সন্ত্রাসীদের (তাদের দৃষ্টিতে সন্ত্রাসী) নির্মূল ও নিয়ন্ত্রন না করা পর্যন্ত এবং হামাসের হাতে অপহৃত ইসরাইলি সামরিক ও বেসামরিক নাগরিকদেরকে মুক্ত না করা পর্যন্ত আমাদের রাফা অভিযান চুড়ান্ত পর্যায়ে তথা চুড়ান্তধাপ অতিক্রম করবে একই সাথে হামাস সন্ত্রাসী দেরকে ধ্বংস করা হবে। রাফা অভিযান বিষয়ে হামাসের পক্ষ হতে ইসরাইলকে বারবার সতর্ক ও হুশিয়ারী করে বলা হয়েছে কোন অবস্থাতেই রাফা অভিযান এবং রাফায় গনহত্যা মেনে নেওয়া হবে না। হামাস যোদ্ধারা বুকের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে হলেও দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর প্রতিজন সদস্যকে প্রতিরোধ ও প্রতিহত করবে। গতকাল হতে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী রাফা শহরে মাইকিং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বিমান হতে আরবি হিব্র ভাষায় লিফলেট বিতর করে জানিয়ে দেয় রাফার দক্ষিন এলাকার অধিবাসিরা যেন অবিলম্বে স্ব স্ব অবস্থান ও বসতঘরবাড়ী ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যায়। সৌদি আরব ভিত্তিক প্রকাশনা আরাবিয়া নিউজ গতকাল তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত এক মাসের অধিক সময়ে ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যরা রাফার চর্তুদিকে ঘেরাও করে বিক্ষিপ্ত হামলা, হত্যা ও লুটপাট করলেও গতকাল থেকে তাদের পুর্ব ঘোষনা অনুযায়ী বিমান হামলা ও স্থল অভিযান শুরু করেছে। মিশর সীমান্তের কাছাকাছি শহরটি ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক। অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী এই শহরটিতে ইসরাইলি বাহিনীল সদস্যরা হামলা ও হত্যার পাশাপাশি রাফা বাসির ধন সম্পদ লুটপাট করছে। গতকালের রাফার চিত্র দখলদার বাহিনী কর্তৃক রাফার চর্তুদিক থেকে বিমান হামলা ও গুলি বর্ষন, প্রানচাঞ্চল্য, কর্মব্যস্ত রাফা শহরের যেকোন পাঠ খুলেনি। সর্বত্র হতাশা, আতঙ্ক আর উদ্বেগ। হামাস প্রধান ইসমাইল জানিয়েছে যে সময়ে ইসরাইলের সাথে যুদ্ধ বিরতি ও বন্দী বিনিময় বিষয়ে পরোক্ষ আলোচনার জন্য মিশরে অবস্থান করছে সেই সময়েই ইসরাইলি বাহিনী রাফায় ব্যাপক ভিত্তিক হামলা পরিচালনা করে হত্যাকান্ড ঘটাচ্ছে। এদিকে ইসরাইল বিরোধী বিক্ষোভ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সীমানা অতিক্রম করে অন্তত তেরটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। পশ্চিমা মিডিয়া, রয়টার্স ও এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পুলিশ আন্দোলনরত, বিক্ষোভরত বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের উপর শারিরীক নির্যাতন চালিয়েছে। গতকাল পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার বিক্ষোভরত শিক্ষার্থী গ্রেফতার করেছে মার্কিন পুলিশ। একাধিক বিশ্ব বিদ্যালয়ে বিক্ষোভরত ছাত্রদের তৈরী করা ও তার মধ্যে অবস্থান নেওয়া অস্থায়ী তাবু গুলো ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। এদিকে হামাস যোদ্ধারা শত প্রতিকুলতার সাথে ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি জাতিসংঘের মহাসচিব ও বিশ্ব মানবাধিকার কর্মিরা ইসরাইলের রাফা অভিযানে নিন্দা প্রকাশের পাশাপাশি উদ্বেগ জানিয়েছে। আল জাজিরা হামাস ইসরাইলের মধ্যকার আলোচনা ও চুক্তি ব্যর্থতার পথে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে অবশ্য কাতারও মিশরের কর্মকর্তারা বলছেন যে তারা আশাত্যাগ করেনি। কাতার ও হামাসের মধ্যে সম্পর্ক টানাপোড়ন ও অবনতি ঘটতে চলেছে বলে যে খবর পশ্চিমা মিডিয়া গুলো দিয়েছে তা বাস্তবতা প্রতিপক্ষ বলে মন্তব্য করেছে কাতার, ফিলিস্তীরা অন্তঃসত্ত্বা নারীরাও ইসরাইলের হামলায় মৃত্যু বরণ করছে এবং তারা সুপেয় পানির অভাব বোধ করছে একই সঙ্গে ফিলিস্তীনি মায়েরা অপুষ্টিতে ভুগছে। অন্তত দেড়লক্ষ গর্ভবতী মায়ের জীবন সংকটের মুখে। গতকালও হিজবুল−াহ যোদ্ধারা ইসরাইলের হামলা চালিয়েছে। সর্বশেষ খবরে জানাগেছে হামাস যোদ্ধারা ইসরাইলের ভূ-খন্ডে রকেট হামলা চালিয়েছে। মুহুর মুহুর রকেট হামলা ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দেশটির সরকার নাগরিকদের নিরাপদে যেতে সাইরেন বাজিয়েছে।