শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:১১ অপরাহ্ন

ইসরাইল এবার জাতিসংঘের মহাসচিবের পদত্যাগ গাজায় মারনাস্ত্রের প্রয়োগ ঘটাচ্ছে ॥ ইসরাইল হামাস ও হিজবুল্লাহর প্রতিরোধ হামলা চলছেই

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৩

দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ ইসরাইলী বাহিনী ফিলিস্তীনি নিধন এবং গাজা উপত্যকাকে নিমিষেই নিশ্চিহৃ করার যে বাসনা লালন করে আসছিল মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান পরিবেশ ও পরিস্থিতির বলে দিচ্ছে ইসরাইলের জন্য আগামী দিনগুলো খুব বেশী সুখবর হবে না। গত রবিবার ইসরাইলী সেনারা গাজা উপত্যকায় হামাস যোদ্ধাদের দ্বারা যে ভাবে নিগৃহীত ও হামলার শিকার হয়েছে এবং তাদের অত্যাধুনিক ট্যাংক ধ্বংস হয়েছে একই সাথে তিন ইসরাইলী সেনার মৃত্যু ঘটেছে তাতে ইহুদীবাদী রাষ্ট্রটি স্পষ্ট হয়েছে যে হামাস যোদ্ধাদের সহজেই কুপোকাত করা সম্ভব হবে না। গত দুই দিনে ইসরাইলের বিমান হামলায় অন্ততঃ চারশতাধীক নিরীহ ফিলিস্তীনির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গাজায় হাসপাতালে বোমা হামলার পর থেকে আহত ফিলিস্তীনিরা একদিকে হাসপাতালে যেতে ভয় পাচ্ছে অন্যদিকে হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সামগ্রী না থাকায় বিনা চিকিৎসায় ফিলিস্তীনিরা মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছে। অতীতের যে কোন সময় অপেক্ষা বর্তমান সময়ে অতি নিষ্ঠুরতা আর অমানবিকতায় দিন যাপন করছে। দৃশ্যতঃ গাজায় মানবিক বিপর্যয় শুরু হয়েছে। গাজার চিকিৎসকরা জানিয়েছে ইসরাইল এর বিমান হামলার মাঝে তারা মারনাস্ত্র ব্যবহার করছে। মানবতার বিরোধী মারনাস্ত্রের ব্যবহার আন্তর্জাতিক আইনে সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ হলেও দখলদার ইসরাইল বাহিনী তা ব্যবহার করে চলেছে। এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা বিশ্ব ইসরাইলকে আকুণ্ঠ সমর্থন ও সামরিক সহযোগিতা করলেও জাতিসংঘ মানবতার পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস জাতিসংঘ সাধারন সভায় বলেছেন হামাস ইসরাইলকে শুন্য হতে হামলা পরিচালনা করেনি। ইসরাইল সত্তর বছর যাবৎ দখলদারের ভূমিকায় অবতীর্ণ থেকেছে এবং দমন নিপিড়ন পরিচালনা অব্যাহত রেখেছে যে কারনে নির্যাতিত ফিলিস্তীনিদের পক্ষে হামাস উক্ত হামলা পরিচালনা করেছে। তিনি আবার এও বলেছেন যে হামাস যে ভাবে হামলা পরিচালনা করে যে ভাবে হামলা পরিচালনা করাটাও ঠিক হইনি। ইসরাইল সরকার জাতিসংঘের মহাসচিবের বক্তব্যকে ভাল ভাবে না নিয়ে সরকারের পক্ষ হতে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেসের পদত্যাগের দাবী করেছেন। হামাসের পাশাপাশি হিজবুল্লাহ যোদ্ধারাও ইসরাইলী বাহিনীর বিরুদ্ধে অবিরাম যুদ্ধ পরিচালনা করছে। ইসরাঈলী বাহিনী হিজবুল্লাহকে বিশেষ সমীহ করে চলে। ইতিপূর্বে ইসরাইল লেবাননে হামলা পরিচালনা করলে হিজবুল্লাহর কঠোর প্রতিরোধ ও পাল্টা হামলায় তারা লেবানন ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে বলা হয়েছে যে তারা কোন ভাবেই হিজবুল্লাহর সাথে যুদ্ধ করবে না। বা যুদ্ধে জড়াবে না। ইসরাইলের জন্য বর্তমান সময়ে বিশেষ আতঙ্ক হামাস যোদ্ধাদের হাতে বিমান ও ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপনাস্ত্রের উপস্থিতি। সর্বশেষ মধ্যপ্রাচ্যের চীনের ছয় যুদ্ধ জাহাজের অবস্থান ও ইসরাইলকে বিশেষ ভাবে উদ্বীগ্ন করে তুলেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চরম প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত ইরান, চীন এবং রাশিয়া আন্তর্জাতিক ভূ রাজনীতিতে বরাবরই মার্কিন বিরোধী অবস্থানে। অন্যদিকে ইরান দীর্ঘদিন যাবৎ নিরীহ ফিলিস্তীনিদের অধিকার রক্ষার সংগ্রামে নিয়োজিত। হামাস যোদ্ধারা গত মঙ্গলবার রাতে তাদের হাতে আটক দুই ইসরাইলী নাগরিককে মুক্তি দিয়ে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। গত কয়েকদিন যাবৎ মিশর সীমান্ত দিয়ে গাজায় ত্রান সরবরাহ হওয়ায় অল্প হলেও তা ফিলিস্তীনিদের জীবন ধারনে সাহায্য করছে। যতই দিন যাচ্ছে ততোই এই যুদ্ধ গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা উকি মারছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com