দৃষ্টিপাত রিপোর্ট \ তালার ইসলামকাটি গ্রামের সম্ভ্রান্ত খান পরিবারের সন্তান খান সুজায়েত আলী। জীবনের দীর্ঘসময় ব্যয় করেছেন শিক্ষা বিস্তর, প্রচার আর প্রসারে। ২০১২ সালে উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে অবসর জীবন যাপনে আছেন। প্রতিশ্র“তিশীল এই শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব সরকারি চাকুরী হতে অবসর নিলেও থেমে নেই নানান ধরনের আলোক উজ্জ্বল কর্মযজ্ঞ। নিজ গ্রাম ইসলামকাটিতে তিনি গড়ে তুলেছেন ডেইরি ফার্ম। সরকারি চাকুরীর কল্যানে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পরিভ্রমন করা বিচিত্র সব অভিজ্ঞতার ভান্ডারে পূর্ণতার অধিকারী শেখ সুজায়েত আলীর মুখে জানি, তিনি দৃষ্টিপাতকে জানান আমি আজীবন কাজ পাগল, ছাত্রজীবন হতে কাজের প্রতি বিশেষ আগ্রহ, একাগ্রতা আবার কর্মজীবনে তার সফল প্রভাব ঘটায়। তিনি বলেন ২০১২ সালে অবসর গ্রহন পুর্ববর্তী দিন গুলো তিনি বেবেছেন দেশের বেকার সমস্যা সমাধান, স্বাবলম্বীতায়, আত্মনির্ভর শীলতা, কর্মসংস্থান আর স্বাস্থ্যবান হওয়ার বিষয়ে ডেইরী ফার্ম (দুগ্ধ উৎপাদন খামার) প্রতিষ্ঠা জরুরী। তিনি প্রাথমিক পর্যায়ে তিনটি গাভীন গরু ক্রয় করলেন। আত্মবিশ্বাসী শেখ সুজায়েত আলীর সেই তিনটি গরুর ডেইরি ফার্ম ত্রিশটির অধিক গাভীতে পরিপূর্ণ। ইসলামকাটির পলীতে আলো ছড়িয়ে পুরো সাতক্ষীরাকে আলোর বিচ্ছুরন ঘটাচ্ছে এই ফার্মটি। প্রায় এক কোটি টাকা সমমূল্যের ত্রিশটির অধিক গাভী পরিচর্যায় অন্তত ৫/৬ জন শ্রমিক সর্বদা কর্মরত। গরু লালন পালন, পরিচর্যা, খাবার পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, গরু খাদ্য সব ক্ষেত্রেই সুজায়েত আলীর হাতের ছোয়া সম্পৃক্ততা। প্রতিদিন এক মনের অধিক দুধ দিচ্ছে গাভীগুলো, সাতক্ষীরা শহরের মিষ্টির হোটেল গুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এর জন্য অপরিহার্যতায় পূর্ণতা পেয়েছে ডেইরি ফার্মটি। অত্যন্ত স্পষ্টবাদী, দৃঢ় ব্যক্তিত্বের অধিকারী জনবান্ধব শেখ সুজায়েত আলীর খামারে উৎপাদিত দুধের বিক্রিত একটি অংশের অর্থ বরাবরই অতিথি আপ্যায়ন সেবামূলক কর্মকান্ডে ও অসহায়, দুঃস্থদের জন্য বরাদ্ধ রেখেছেন। খামারের বর্জ হতে বায়োগ্যাস প্লান এবং কৃষি ও মৎস্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হচ্ছে। শিক্ষা কর্মকর্তার পর পিটিআইয়ের রিসোর্স পার্মেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালনকারী অবসর প্রাপ্ত কর্মকর্তা গ্রামীন পরিবেশে গ্রামের মানুষদের সাথে অবলিলায় মিশে একাকার, শারিরীক ভাবে স্বচ্ছল এই মানুষটি স্পষ্ট কথা জাক করতে হবে, বসে থাকলে চলবেনা। নানামুখি সৃষ্টিশীল এবং অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে সৃষ্টি করতে হবে। কাজে কোন লাজ নেই। আবার ফার্মটি কিছু মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। এলাকার অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখছে। বিশ্ব বিদ্যালয়ের এক সময়ের মেধাবী শিক্ষার্থী দীর্ঘ কর্মজীবন শেষে গ্রামই বেছে নিলেন এটা বড় ধরনের দৃষ্টান্ত। তিনি বলেন সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রুহুল আমীন একাধিক বার ফার্মটি পরিদর্শন করেছেন এবং আমাকে প্রতিনিয়ত প্রেরনা দিয়ে চলেছেন। সহযোগিতা করছেন। বিগত বছরে মহামারী করোনার ভয়াল ছোবল পড়ে ফার্মটিতে দুধ অবিক্রিত থাকায় ব্যাপক লোকসানের সম্মুখিন হয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংক ঋনে চলমান, করোনার প্রনোদনা ফার্মটি পাইনি, সরকারি সুবিধা, ব্যাংক ঋন এর সুদ মওকুফ ই শেখ সুজায়েত আলীর ডেইরী ফার্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে। করোনার ধকল কাটিয়ে নিজস্ব গতিতে, সফল ভাবে পরিচালিত হচ্ছে সাতক্ষীরার ভৌগিলকতা পেরিয়ে জাতীয় ভাবে পরিচিতি পাওয়ার দাবিদার ফার্মটি।