এফএনএস বিদেশ : ইসরায়েল এবং হামাস চলতি সপ্তাহে ছয় জিম্মিকে মুক্ত করার চুক্তিতে পেঁৗছানোর পর হাজার হাজার ফিলিস্তিনি উত্তর গাজায় ফিরতে শুরু করেছে। এর আগে নেতানিয়াহু সরকার বলেছে, গতকাল সোমবার থেকে ফিলিস্তিনিরা গাজার উত্তরাঞ্চলে ফেরা শুরু করতে পারবে। গত শনিবার ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েল নিয়ন্ত্রিত নেটজারিম করিডর অতিক্রম করেছে। বিবিসির প্রতিবেদনে এই খবর বলা হয়েছে। আলজাজিরার সংবাদদাতা জানিয়েছেন, উত্তর গাজায় ফিরতে বাধা দেওয়া হবে না— ইসরাইলের এমন ঘোষণার পর নেটজারিম করিডরের কাছে অপেক্ষারত হাজারো ফিলিস্তিনি আনন্দে ফেটে পড়ে। বাস্তুচ্যুত বাসিন্দারা মুহূর্তটিকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেন। তাদের মতে, যুদ্ধবিরতি ঘোষণার মতোই আজকের দিনটি গুরুত্বপূর্ণ। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ফিলিস্তিনিদের গতকাল সোমবার সকাল ৭টা থেকে হেঁটে আল—রশিদ স্ট্রিট এবং সকাল ৯টা থেকে গাড়িতে করে সালাহ আল—দিন স্ট্রিট অতিক্রম করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। গত শনিবার হামাস চার ইসরায়েলি নারী সৈন্যকে মুক্তি দিয়েছে। এর বিনিময়ে ২০০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্তি দেয় ইসরায়েল। তবে এরপর ইসরায়েল ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটির বিরুদ্ধে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে। ইহুদ নামের এক বেসামরিক নাগরিককে মুক্তি দেওয়া হয়নি তখন। এ কারণে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে ইসরায়েল। এদিকে ইহুদ এবং অন্য দুই জিম্মিকে বৃহস্পতিবার মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এরপর শনিবার আরো তিনজনকে মুক্তি দেওয়া হবে। গাজা যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তর গাজা। যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ওই এলাকার অধিবাসীরা তাদের আবাসস্থলে ফেরার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু হামাস ওই নারী জিম্মিকে মুক্তি না দেওয়ায় তাদের ঘরে ফেরা আটকে যায়। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধবিরতিতে এটি একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার পর ইসরায়েল ও হামাস একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে উপনীত হয়েছে। এদিকে ট্রাম্প গত শনিবার বলেছেন, ‘গাজা পরিষ্কার করা’ একটি বিকল্প হতে পারে, যেখানে আরব দেশগুলোর সহযোগিতায় উপত্যকার বাসিন্দাদের জন্য নতুন স্থানে আবাসন তৈরি করা যেতে পারে। এটি ‘অস্থায়ী বা দীর্ঘমেয়াদি’ হতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। জর্দানের বিশিষ্ট বিশ্লেষক ওরাইব রান্তাওয়ি বলেন, এই প্রস্তাব শুধু জর্দান ও মিসরের ওপর চাপ প্রয়োগের বার্তা নয়, বরং এটি একটি ‘বিষময় উপহার’, যা আরব দেশগুলোর ওপর ফিলিস্তিন সংকটের দায় চাপানোর কৌশল। প্রতিবেশী মিসরও ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ পরিকল্পনার স্পষ্ট বিরোধিতা করেছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ছয় সপ্তাহের ধাপে হামাস ৩৩ জন নারী, শিশু, বৃদ্ধ, অসুস্থ ও আহত বন্দিকে মুক্তি দেবে, যেখানে প্রতি বেসামরিক জিম্মির জন্য ইসরায়েল ৩০ বন্দি এবং প্রতি সেনার জন্য ৫০ জন বন্দি মুক্তি দেবে।
সূত্র : আলজাজিরা, বিবিসি