মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:১৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
প্রতিনিয়ত ভাংগনে ইছামতি ও কালিন্দী নদী \ ছোট হয়ে আসছে সাতক্ষীরা \ বাংলাদেশ হারাচ্ছে ভূ—খন্ড \ স্থায়ী সমাধান জরুরী প্রয়োজন মেগা প্রকল্প গ্রহণ \ এখনই সময় দেবহাটা সর: পাইলট হাইস্কুলের শহীদ মিনার উদ্বোধনী ও পুরস্কার বিতরণ দেবহাটা রিপোটার্স ক্লাবের শীতবস্ত্র বিতরণ দেবহাটায় তারুণ্যের উৎসব উদযাপনে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শ্যামনগরে গর্ভবতী গরু জবাই \গ্রাম্যমান আদালতে ব্যবসায়ীকে জরিমানা সাতক্ষীরায় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন সাতক্ষীরায় প্রেসব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম রসুলপুর জান্নাতুল ফিরদাউস কুরআনিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার ছাদ ঢালাই উদ্বোধন ডুমুরিয়ার বিল ডাকাতিয়ায় সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর আবাদী জমিতে বোরো চাষ অনিশ্চিত খুলনায় যুবদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

উন্নয়ন বাজেট কমিয়ে ওই অর্থে সরকারি কর্মচারীদের বর্ধিত বেতনভাতা দেয়া হবে

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২৫

এফএনএস এক্সক্লুসিভ: উন্নয়ন বাজেট কমিয়ে ওই অর্থে সরকারি কর্মচারীদের বর্ধিত বেতনভাতা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বিগত ২০১৫ সালে সরকারি কর্মচারীদের সর্বশেষ পে—স্কেল দেয়া হয়। এরপর তাদের আর বেতন বাড়েনি। অথচ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়েছে। চাকরিজীবীদের দৈনন্দিন খরচ বেড়ে যাওয়ায় মূল বেতনের সঙ্গে নির্দিষ্ট হারে মহার্ঘ ভাতা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যদিও মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করতে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি চাকরিজীবীদের মহার্ঘ ভাতার দাবি ছিল। তারই প্রেক্ষিতে বর্তমান সরকার মহার্ঘ ভাতা নির্ধারণে কমিটি গঠন করে। সরকারি কাজে নিয়োজিত জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫—এর আওতাভুক্ত কর্মকর্তা—কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা সংস্থানের বিষয়টি পর্যালোচনা করে সুপারিশ করার জন্য ওই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির কার্যপরিধি ছিল মহার্ঘ ভাতার প্রযোজ্যতা ও প্রাপ্যতার বিষয় পর্যালোচনা করা এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ দাখিল করা। অর্থ এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সরকারি কর্মচারীদের এবারই প্রথম গ্রেড অনুযায়ী মহার্ঘ ভাতা দেয়া হবে। যারা পেছনের গ্রেডে চাকরি করে তারা বেশি হারে এ ভাতা পাবে। অর্থাৎ কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা বেশি হবে। আর সামনের দিকের গ্রেডে চাকরির কারণে কর্মকর্তারা কম হারে ভাতা পাবে। অর্থ মন্ত্রণালয় এ—সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবের খসড়া চূড়ান্ত করেছে, যা অনুমোদনের জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হচ্ছে। ১ থেকে ৩য় গ্রেডে মহার্ঘ ভাতা হবে মূল বেতনের ১০ শতাংশ, ৪ থেকে ১০ গ্রেডের চাকরিজীবীরা ২০, ১১ থেকে ২০ গ্রেডধারীরা ২৫ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পাবে। তাতে সর্বনিম্ন ৪ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৮০০ টাকা বেতন বাড়বে। তবে স্কেলের মারপ্যাঁচের কারণেও কেউ ৪ হাজার টাকার কম এ ভাতা পাবে না। যদিও মহার্ঘ ভাতা কার্যকর হওয়ার পর আগের সরকারের দেয়া ৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা সুবিধাটি আর বহাল থাকবে না। আর পেনশন ভোগরত কর্মকর্তা—কমর্চারীরাও মহার্ঘ ভাতা পাবে। সূত্র জানায়, বেতন বা ভাতা বাড়ানোর প্রস্তাব সরকারপ্রধানের কাছে দিতে হলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে বাড়তি অর্থের জোগান কীভাবে হবে তা উল্লেখ করতে হয়। মহার্ঘ ভাতা বাড়ানোর পক্ষে অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুক্তি হচ্ছেÑ রাজস্ব খাতে ব্যয় কমিয়ে রাখা খুবই কঠিন। কাজেই সবকিছু উন্নয়ন বাজেটের ওপর গিয়ে পড়বে। উন্নয়ন বাজেট কমানো হবে এবং ওই অর্থ দিয়েই বর্ধিত বেতনভাতা দেয়া হবে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের বেতনের সঙ্গেই অর্থ মন্ত্রণালয়ের মহার্ঘ ভাতা দেয়ার প্রস্তাব রয়েছে। সূত্র আরো জানায়, পাঁচ বছর অন্তর সরকার সাধারণত একটি নতুন বেতন স্কেল ঘোষণা করে। কিন্তু দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ২০১৫ সালের পর আর কোনো নতুন পে—স্কেল দেয়া হয়নি। সর্বশেষ পে—কমিশনের চেয়ারম্যান নতুন পে—কমিশন না করে মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিয়ে বেতন কমিশন গঠনের সুপারিশ করলেও তৎকালীন সরকার ওই সুপারিশ বাস্তবায়ন করেনি। কিন্তু সরকারি চাকরিজীবীরা বাড়তি মূল্যস্ফীতিতে বেতন বাড়াতে নতুন পে—স্কেল ঘোষণাসহ বেশ কিছু দাবি জানিয়ে আসছিলো। এদিকে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, দপ্তর, করপোরেশন ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৪ লাখ কর্মচারী কর্মরত। চলতি ২০২৪—২৫ অর্থবছরের বাজেটে তাদের বেতনভাতা বাবদ ৮১ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বাজেটে মহার্ঘ ভাতায় কোনো বরাদ্দ নেই। তবে কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ওই হার চূড়ান্ত করে পরিচালন বাজেটের অন্য খাতের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর সরকারি কর্মচারীদের জন্য সংশোধিত বাজেটে মহার্ঘ ভাতার বরাদ্দ রাখার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা। ওইদিনের একনেক বৈঠক শেষে তিনি বলেছিলেন, সরকারি কর্মচারীদের বহু ধরনের দাবিদাওয়া মেটাতে গিয়ে বেতনভাতা বাড়ানোর বিষয় আছে। মহার্ঘ ভাতার বিষয় আছে। তাই রাজস্ব খাতে ব্যয় কমিয়ে রাখা খুবই কঠিন। কাজেই সবকিছু উন্নয়ন বাজেটের ওপর এসে পড়ে। উন্নয়ন বাজেট কমাতে হবে। বাজেট—ঘাটতি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে উন্নয়ন বাজেট সমন্বয় করতে হবে। সর্বশেষ ২০১৩ সালে সরকার ২০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দিয়েছিল। যার আওতায় সর্বোচ্চ ৬ হাজার আর সর্বনিম্ন ১ হাজার ৩০০ টাকা বেড়েছিল। তিন বছর পর যখন বেতন শতভাগ বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হলো, তখন কার্যত বেতন বেড়েছে ৮০ শতাংশ। গত বেতন স্কেলে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড কর্তন করা হয়েছিল। ১৯৭৭ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মোট আটটি পে—স্কেল দেয়া হয়। আর সরকারের সব সেক্টরে মহার্ঘ ভাতা দেয়ার প্রভাব বেসরকারি চাকরিজীবী ও সাধারণ মানুষের ওপর পড়ে। কারণ সরকার কর্মচারীদের ভাতা বাড়ালেও বেসরকারি চাকরিজীবীর বেতন বাড়ানোর কোনো দায়িত্ব নেয় না। যে কারণে ২১ লাখ সামরিক—বেসামরিক কর্মচারীর বেতন বৃদ্ধির জাঁতাকলে পিষ্ট হয় সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে এ অর্থবছরই মহার্ঘ ভাতা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান জানান, আগামী ৩০ জুনের মধ্যেই কর্মচারীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করা হবে। মহার্ঘ ভাতা নিয়ে দুটি সভা হয়েছে। এবার যারা পেনশনে গিয়েছেন তাদেরও মহার্ঘ ভাতা দেয়া হবে। যারা মহার্ঘ ভাতা পাবেন, ইনক্রিমেন্টের সময় সেই ভাতা বেসিকের সঙ্গে যোগ হবে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com