বিভাষ মন্ডল বুড়িগোয়ালিনী (শ্যামনগর) প্রতিনিধিঃ বৈশ্বিক জলবায়ু কর্মসপ্তাহ (গ্লোবাল ক্লাইমেট অ্যাকশন উইক) উপলক্ষ্যে খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ এলাকায় আয়োজিত বিশাল জলবায়ু ধর্মঘটে ৬ দেশের প্রতিনিধিরা উপকূলের দুর্গত মানুষদের দাবির সাথে সংহতি জানিয়েছেন। সাতক্ষীরার শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনীর দূর্গাবাটি গ্রামের ভাঙন কবলিত এলাকায় নদীর চরে নেমে কয়েকশ যুব চিৎকার তুলেছেন, ‘আমরা আর ডুবে মরতে চাইনা’। বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক, যুব সংগঠন ও জনসংগঠন মিলে নয় দিন ধরে উপকূলে ন্যায্যতার দাবিতে ‘নয় দিনের চীৎকার কর্মসূচি’ পালন করেছে। ‘নয়-ছয় মানবো না আর, ক্ষতিপূরণের অঙ্গীকার চাই জলবায়ু সুবিচার’ এই দাবিতে এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ, বিপদাপন্ন মানুষেরা আসন্ন জলবায়ু সম্মেলনে ধনী দেশকে ক্ষতিগ্রস্থ দেশের জন্য তহবিল গঠনের জোর দাবি জানান। উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন থেকে ম্যারাথন দৌড় দিয়ে যুবকরা দূর্গাবাটি এসে মিলিত হন, পাশপাশি জলবায়ু অবরোধের মাধ্যমে নানা দাবি সংবলিত ব্যনার, পোস্টার, ফেস্টুন ও শ্লোগানের মাধ্যমে সবাই ধনীদেশকে কার্বন নির্গমন বন্ধের আহবান জানান। পরে যুবকরা দুর্যোগ প্রস্তুতি বিষয়ক নাটক পরিবেশন করে। এবং ইউনিয়ন পরিষদের জন প্রতিনিধিসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষেরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করেন বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদ। গবেষক পাভেল পার্থের সঞ্চালনায় জলবায়ু অবরোধ সমাবেশে সংহতি জানান ব্রাজিল ও সুইডেনের প্রতিনিধি প্রিসিলা কবো, সোমালিয়ার মোহামেদ, আইদারুস মোহাম্মদ এবং সিয়াদ আদনান মোহাম্মদ, কেনিয়ার জিমি কার্টার ওটিনো গর, শ্রীলংকার কুমুদু সুমঙ্গলী অতুলুগামা, বলিভিয়ার এরিয়াল মার্শেলো শ্যাভেজ বিনাভিদেজ নিজেদের মাতৃভাষায় পোস্টার লিখে বাংলাদেশের উপকূলের জলবায়ু-দুর্গত মানুষদের দাবির সাথে সংহতি জানিয়েছেন। টেকসই বেড়িবাঁধ, জলবায়ু অভিযোজন, বৈশি^ক তহবিল এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সক্ষমতা বাড়াতে ধনী ও উন্নত দেশকে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানান তারা। ডিয়াকোনিয়া-বাংলাদেশ প্রতিনিধি মর্জিনা খাতুন এবং মাজহারুল ইসলাম, বারসিক নির্বাহী পরিচালক সুকান্ত সেন, নগর গবেষক জাহাঙ্গীর আলম সহ অনেকেই সংহতি বক্তব্য রাখেন। মানববন্ধন শেষে জলবায়ু সংকট নিয়ে স্থানীয় যুব সংগঠনের অংশগ্রহণে একটি নাটিক অনুষ্ঠিত হয়। এই ব্যতিক্রমধর্মী জলবায়ু ন্যায্যতার কর্মসূচিটি বাংলাদেশসহ সাত দেশের প্রতিনিধিদের দাবিতে দুর্গত উপকূল জীবনে এক ভিন্নতা তৈরি করেছে।