এফএনএস: সারাদেশে আগামী ৬ নভেম্বর শুরু হচ্ছে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় ২০২১ সালের তুলনায় ১ লাখ ৯৬ হাজার ২৮৩ জন শিক্ষার্থী ঝরে গেছে। একই সঙ্গে মোট প্রতিষ্ঠান কমেছে ২টি, আর কেন্দ্রের সংখ্যা বেড়েছে ২৮টি। গতকাল বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এইচএসসি-সমমান পরীক্ষার আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। দীপু মনি বলেন, গত বছরের তুলনায় ২০২২ সালের এইচএসসি-সমমান পরীক্ষায় ১ লাখ ৯৬ হাজার ২৮৩ পরীক্ষার্থী কমে গেছে। দুটি প্রতিষ্ঠান কমলেও পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা ২৮টি বেড়েছে। এর কারণ হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে ক্লাসের পাঠদান বন্ধ থাকায় পেছনের কয়েকটি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে নেওয়া হয়েছে। সে কারণে পাশের হার বেড়ে যায় বলে অনিয়মিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে গেছে। এজন্য এবার প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে গেছে। এটি স্বাভাবিক পরিস্থিতি বলেও দাবি করেন তিনি। তবে এসব শিক্ষার্থীরা গত দুই বছর আগে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও তারা এইচএসসি পরীক্ষায় আর অংশ নেয়নি বলে বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে। এবারের পরীক্ষায় ১১টি শিক্ষা বোর্ডের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৯ হাজার ১৮১টি প্রতিষ্ঠানে ২ হাজার ৬৪৯টি কেন্দ্রে মোট ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। এদের মধ্যে ৬ লাখ ২২ হাজার ৭৯৬ জন ছাত্র এবং ৫ লাখ ৮০ হাজার ৬১১ জন ছাত্রী রয়েছে। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ৪ হাজার ৬৪৭টি প্রতিষ্ঠানে ১ হাজার ৫২৮টি কেন্দ্রে ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৭১৩ জন পরিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। এদের মধ্যে ৪ লাখ ৮২ হাজার ১৮৩ জন ছাত্র এবং ৫ লাখ ৩ হাজার ৫৩০ জন ছাত্রী রয়েছে। তার মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ২ লাখ ৪০ হাজার ৫০৬ জন, মানবিক বিভাগে ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৬৭১ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৫৩৬ জন পরীক্ষার্থী রয়েছেন। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে ২ হাজার ৬৭৮টি প্রতিষ্ঠানে ৪৪৮টি কেন্দ্রে ৯৪ হাজার ৭৬৩ জন পরিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। এদের মধ্যে ৫১ হাজার ৬৯৫ জন ছাত্র এবং ৪৩ হাজার ৬৮ জন ছাত্রী রয়েছে। এ ছাড়া কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১ হাজার ৮৫৬টি প্রতিষ্ঠানে ৬৭৩টি কেন্দ্রে ১ লাখ ২২ হাজার ৯৩১ জন পরিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এদের মধ্যে ৮৮ হাজার ৯১৮ জন ছাত্র এবং ৩৪১৩ জন ছাত্রী রয়েছেন। দেশের বাইরে মোট আটটি দেশে এইচএসসি-সমমান পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। তার মধ্যে জেদ্দায় ৫১ জন, রিয়াদে ২০ জন, ত্রিপলীতে ৪ জন, দোহায় ৬২ জন, আবুধাবিতে ২৭ জন, দুবাইয়ে ২১ জন, বাহরাইনে ১৫ জন এবং সাহাম, ওমানে ২২ জন মিলে মোট ২২২ জন পরীক্ষার্থী রয়েছেন। শিক্ষা মন্ত্রী জানান, এবার পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে এসএমএসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রশ্নপত্রর সেট কোড জানিয়ে দেওয়া হবে। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ব্যতীত অন্য কেউ মোবাইলফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করে পারবেন না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। অভিভাবকদেরও সামাজিক দূরত্ব রেখে চলাফেরার অনুরোধ করা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী স্ক্রাইব (শ্র“তি লেখ) সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। এ ধরনের পরীক্ষার্থীদের এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধী পরীক্ষাথীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় দেওয়া হবে। এ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুবজমুক্ত ও নকলমুক্ত পরিবেশে সুষ্ঠু, সুন্দরভাবে আয়োজনে আগামী ৩ নভেম্বর থেকে আগামী ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা আয়োজনে সবার সহযোগীতা আহŸান করেন শিক্ষামন্ত্রী।