এফএনএস বিদেশ : উত্তর আফ্রিকার দেশ আলজেরিয়ার একটি আদালত একজনকে হত্যার দায়ে ৪৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা গত বছর একজনকে পিটিয়ে পুড়িয়ে মারার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল। ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর আলজেরিয়ায় ভয়াবহ আগুন ছড়িয়ে পড়ে। জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার জন্য দণ্ডপ্রাপ্ত এসব আসামি ভুলভাবে সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তিকে পিটিয়ে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে। তবে আলজেরিয়ায় বর্তমানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ওপর স্থগিতাদেশ থাকায় দণ্ডপ্রাপ্ত এসব আসামির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানোর সম্ভাবনা রয়েছে। ২০২১ সালে নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলের সম্মুখীন হয় আলজেরিয়া। এই বছর একাধিক দাবানলে উত্তর আফ্রিকার এই দেশটিতে ৯০ জনের প্রাণহানি হয়েছিল। দাবানল শুরুর কারণ হিসেবে জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার জন্য স্থানীয়দের ভুল সন্দেহের বশে পিটুনিতে প্রাণ হারান জামেল বেন ইসমাইল। কিন্তু আগুন ছড়িয়ে দিতে নয় বরং দাবানল মোকাবিলায় অন্যান্যের সহায়তা করতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন তিনি। গত বছরের আগস্টে দাবানল ছড়িয়ে পড়ার পর টুইটারে একটি পোস্ট করেন ৩৮ বছর বয়সী জামেল বেন ইসমাইল। সেখানে তিনি জানান, কাবিলি অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া দাবানল মোকাবিলায় সহায়তা করতে তিনি তার বাড়ি থেকে ৩২০ কিলোমিটার (২০০ মাইল) দূরে যাবেন। রাজধানী আলজিয়ার্সের পূর্বে অবস্থিত ওই অঞ্চলটিই ছিল দাবানলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা। তবে কাবিলি অঞ্চল থেকে নিজের এলাকায় ফিরে আসার পরপরই স্থানীয়রা জামেলকে মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করে। সেসময় স্থানীয়রা দাবি করেন, জামেল নিজেই জঙ্গলে আগুন লাগিয়েছেন। এরপর গত বছরের ১১ আগস্ট সহিংসতার গ্রাফিক ফুটেজ ছড়াতে শুরু করে। যেখানে দেখা যায়, বেন ইসমাইলকে আক্রমণ করা হয়েছে। তাকে নির্যাতন ও পুড়িয়ে হত্যার পর লোকজন তার মরদেহ গ্রামে নিয়ে যায়। এই ঘটনা ও ভিডিওগুলো আলজেরিয়ায় ব্যাপক ক্ষোভের কারণ হয়েছিল। অবশ্য নিহত বেন ইসমাইলের ভাই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের হামলার ভিডিও ফুটেজ মুছে ফেলার আহŸান জানিয়েছেন। তিনি জানান, তার মা এখনও জানেন না কিভাবে তার ছেলে মারা গেছে। তার বাবা নুরদ্দীন বেন ইসমাইল বলেছেন, ‘আমার ছেলে দাবানল মোকাবিলায় সাহায্য করার জন্য কাবিলি গিয়েছিল। এই অঞ্চলটি তার পছন্দের ছিল। কিন্তু অভিযুক্তরা তাকে জীবন্ত পুড়িয়ে দিয়েছে।’ বিবিসি জানিয়েছে, শুষ্ক অবস্থা ও খুব উচ্চ তাপমাত্রার মধ্যে গত বছর ওই আগুনের ঘটনা ঘটে। তবে আলজেরীয় কর্তৃপক্ষ আগুনের জন্য অপরাধীদেরও দায়ী করেছিল। বেন ইসমাইলকে হত্যা সম্পর্কিত অন্যান্য অপরাধের জন্য আদালত আরও ২৮ জনকে দুই থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।