বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
শ্যামনগরে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জিয়া স্মৃতি ভলিবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত শ্যামনগরে মৃত্যুর চার মাস পর কবর থেকে গৃহবধুর মরদেহ উত্তোলন দেবহাটায় জামায়াতের আয়োজনে কুরআন শিক্ষায় মুহাদ্দিস রবিউল বাসার উচ্চতায় পৌছানো রুপসী ম্যানগ্রোভ দেবহাটা পর্যটন কেন্দ্র আলো ঝলমলে দ্যুতি ছড়ানো সৃষ্টিশীলতার অনন্য ক্ষেত্র কুলিয়ার টিকেট কালীপূজা পরিদর্শন করলেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ ভোমরায় টাস্কফোর্সের অভিযানে ৩ টন রসুন উদ্ধার সহ লাখ টাকা জরিমানা খলিশখালী সচেতনতামূলক নারী সমাবেশ বাস্তবায়ন সাতক্ষীরায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দিল জেলা পুলিশ বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে শিবিরের ফ্রী ব্লাড গ্রুপ ক্যাম্পেইন নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে মহান বিজয় দিবস পালিত

একজিমা নিয়ে যত ভুল ধারণা

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৩

এফএনএস স্বাস্থ্য: একজিমা নামের চর্মরোগটির চিকিৎসা ও খাবারের বাছবিচার নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ভুল ধারণা আছে, সঠিকভাবে রোগ সারাতে যা প্রায় সময়ই বাধা হয়ে দাঁড়ায়। বলা হয়ে থাকে, একজিমায় খাবারদাবারের কোনো বাছবিচার নেই, রোগটি কোনো খাবারের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। আসলেই কি তাই? একজিমা শরীরের যেকোনো জায়গায়ই হতে পারে, যেমন-খুব কমন একটি একজিমা আছে, যা বহুলভাবে দেখা যায়, সেটিকে বলা হয় ‘হাউসওয়াইফস একজিমা’। এটা হাতে হয়ে থাকে, মহিলাদের হাতে এটা বেশি দেখা যায় বলে এ রকম নামকরণ হলেও কিছু ক্ষেত্রে পুরুষের হাতেও যে এটা হয় না তা কিন্তু নয়। এই একজিমা হওয়ার পেছনে প্রধান কারণ বংশগত প্রবণতা হলেও দেখা গেছে সাবান, ডিটারজেন্ট ব্যবহার করলে এটা শত চিকিৎসায়ও আরোগ্য হয় না; বারবার ফিরে আসে বা ধীরে ধীরে বেড়েই যায়। কিন্তু কথাটি এখানেই শেষ নয়। দেখা গেছে চিকিৎসকের নির্দেশ মেনে রোগী যখন এগুলো ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ রাখেন, তখনো এটা অনেক সময়ই উপযুক্ত চিকিৎসার পরও বাড়তেই থাকে। তখন রোগী বলে থাকেন বেগুন, চিংড়ি, ইলিশ, বোয়াল ইত্যাদি কথিত অ্যালার্জিক খাবার খেলেই নাকি এটা বেড়ে যায়। আসল সত্য হলো, খাবারের বাছটি মানতে হবে শুধু হাতের ক্ষেত্রে অর্থাৎ একজিমা রোগটি যখন হাতে দেখা দেবে শুধু তখনই কিছু খাবার আছে, যার মধ্যে বেগুন অন্যতম প্রধান, যা হাত দিয়ে ধরাই যাবে না, তা খাওয়ার জন্যই হোক বা কোটা, বাছা, ধোয়া বা রান্নার জন্যই হোক। এ কথাটি অন্য অনেক খাবারদাবার, যেমন-গরু, ইলিশ, চিংড়ি ইত্যাদির ক্ষেত্রেও একইভাবে প্রযোজ্য। অর্থাৎ হাতে একজিমা হলে রোগী হাত দিয়ে ধরতে পারবেন না অনেক কিছুই, কিন্তু হাত দিয়ে না ধরে (যেমন-চামচের সাহায্যে) খেতে পারবেন সব কিছুই। এ ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই তাঁর জন্য অনেক কাজকর্মই নিষিদ্ধ হয়ে যায়, বাসন-পেয়ালা ধোয়ামাজা ছাড়াও হাতের বেশির ভাগ কাজ থেকেই তাঁকে বিরত থাকতে হয়। এই যেমন সবজি কাটা, বিশেষ করে আদা, রসুন, পেঁয়াজ ইত্যাদি হাত দিয়ে ধরলেই তাঁর হাতের একজিমা বেড়ে যায়। অতএব সাধারণভাবে সব আনাজপাতি ধোয়া, কাটা, বাছা বা হাত দিয়ে নড়াচড়া করা তার জন্য বারণ। এ ছাড়া তেল-মসলা হাত দিয়ে মাখানোয়ও রোগটির নিশ্চিত বৃদ্ধি ঘটে। এমনকি রান্না করার পর ঝাল-তেল-মসলাসমৃদ্ধ খাবার হাত দিয়ে মেখে খেলেও যে রোগটি বেড়ে যায়, সেটা আক্রান্ত ব্যক্তি বা তার নিকটজনরা একটু ভালো করে নজর করলেই বুঝতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে যে ব্যাপারটি উপলব্ধি করা প্রয়োজন সেটা হলো, যে খাবারগুলোকে অ্যালার্জিক বলে চিহ্নিত করা আছে (সে তালিকা বেশ বিরাট) সেগুলো খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে ঢোকার জন্য কিন্তু একজিমা বাড়ে না, বাড়ে আক্রান্ত হাতের সঙ্গে ওই সব খাদ্যদ্রব্যের সরাসরি সংস্পর্শ ঘটার জন্য। রোগী যদি হাতের সংস্পর্শ এড়িয়ে এ খাবারগুলো খান, তাহলে কখনোই এ খাবারগুলোর জন্য রোগ বৃদ্ধি ঘটবে না। আসল ব্যাপার হলো, খাবারগুলোর মধ্যে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা ত্বকের হাতের (বিশেষ করে আঙুলের) কোষকলাকে উদ্দীপিত বা উত্তেজিত করে তোলে, যাতে সেখানে এমন কিছু পরিবর্তন ঘটে, যার ফলে ত্বকে পর্যায়ক্রমে লাল হওয়া, চুলকানি, ছোট গোটা তৈরি হওয়ার মতো ঘটনাগুলো ঘটতে থাকে এবং রোগটি অবশেষে তার পরিপূর্ণ বৈশিষ্ট্য নিয়ে হাজির হয়। যেহেতু আমাদের দেশে আমরা হাত ব্যবহার করে খেতে অভ্যস্ত, তাই আমাদের ক্ষেত্রে এ কথাগুলো বেশি প্রযোজ্য। তবে রোগ পুরোপুরি সেরে যাওয়ার পরও যে এই বাছবিচারগুলো সব সময়ের জন্য বহাল থাকবে তা মনে রাখা অত্যাবশ্যক। যেহেতু হাতে একজিমা হলে হাতের ত্বক সংবেদনশীল হয়ে পড়ে, তাই হাতের সঙ্গে এসবের সংস্পর্শ ঘটলে রোগ সারে না বা বাড়তে থাকে। কিন্তু শরীরের অন্যান্য স্থানের একজিমার ক্ষেত্রে এগুলোর সরাসরি সংস্পর্শ ঘটে না বলে অন্য জায়গার একজিমার সঙ্গে এ কথাগুলোর কোনো সম্পর্ক নেই। এবং সে ক্ষেত্রে হাত দিয়ে নাড়াচাড়া বা খাওয়া কোনো ক্ষেত্রেই এ রকম নিষেধাজ্ঞা নেই। আর খাওয়াদাওয়ার নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারটি শুধু হাতের একজিমার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। শরীরের অন্যান্য সাধারণ একজিমার জন্য প্রযোজ্য নয়। অন্যদিকে ‘অ্যাটপিক ডার্মাটাইটিস’ নামে একটি ত্বকের সমস্যা রয়েছে, যাকে একজিমার অন্তর্ভুক্ত করা যায়। সে ক্ষেত্রে জন্মের চার মাস বয়স থেকে দুই বছর বয়স পর্যন্ত কয়েকটি সুনির্দিষ্ট খাবারে নিষেধ থাকে।
(লেখক সিনিয়র কনসালট্যান্ট, ডার্মাটোলজি উত্তরা স্কিন কেয়ার অ্যান্ড লেজার)

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com