রানের ফোয়ারা ছুটিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে সব আলো নিজের ওপর কেড়ে নিয়েছেন এনামুল হক বিজয়। দেশের ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরির ফিফটি করার অনন্য নজিরও গড়েছেন। ফর্ম যখন তুঙ্গে তখন মুখে চওড়া হাসি ডানহাতি ব্যাটসম্যানের। সেই হাসির উপলক্ষ্য দ্বিগুণ করে দিয়েছেন নির্বাচকরা। ফর্মে থাকা এনামুলকে জাতীয় দলে ফিরিয়েছেন গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে এনামুল ফিরেছেন জাকির হাসানের জায়গায়। সিলেটে দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও মাহমুদুল হাসান জয় ব্যর্থ হয়েছেন। এনামুল সেরা একাদশে সুযোগ পাবেন কি পাবেন না সেটা পরের বিষয়। গাজী আশরাফের আনন্দ, ‘‘ফর্মে থাকা একজন যিনি প্রতি ম্যাচেই রান করছেন তাকে আমরা পেয়েছি।’’ এনামুলের রেকর্ডই তার হয়ে কথা বলছে। চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে রান ফোয়ারা ছুটিয়ে দিয়েছেন এনামুল। শেষ ম্যাচে করেছেন সেঞ্চুরি, আবাহনীর বিপক্ষে। ১৪ ইনিংসে ৮৭৪ রান করেছেন ৪টি করে সেঞ্চুরি ও ফিফটিতে। যেখানে তার গড় রান ৭৯.৪৫। রান সংগ্রাহকের তালিকায় সবার শীর্ষে, ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তার পরে ১৭৭ রান পিছিয়ে থেকে দুইয়ে অবস্থান করছেন পারভেজন হোসেন ইমন। ঢাকা লিগ দেশের একমাত্র লিস্ট ‘এ’ প্রতিযোগিতা। পঞ্চাশ ওভারের ফরম্যাট। সাদা বলের ক্রিকেটের পারফরম্যান্স লাল বলে ক্রিকেটে কতটা প্রভাব রাখবে সেই প্রশ্নও উঠতে পারে। জানিয়ে রাখা ভালো, সবশেষ জাতীয় ক্রিকেট লিগে এনামুলের লাল বলের পারফরম্যান্সও ছিল দারুণ। আসরে ছিলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। খুলনা বিভাগের হয়ে ৫৩.৮৪ গড়ে ১ সেঞ্চুরি ও ৬ ফিফটিতে ৭০০ রান করেছিলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। বিশ্লেষকরা বলেন রান করা অভ্যাসের বিষয়। যেকোনো প্রতিযোগিতায়, যেকোনো পর্যায়েই রান পেলে ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ^াস বাড়ায়। এনামুলের থেকে সেই আত্মবিশ^াসী পারফরম্যান্সটাই চান গাজী আশরাফ হোসেন, ‘‘ওর যেই ধারাবাহিকতা, যে একাগ্রতা দিয়ে জাতীয় লিগ বা ঢাকা লিগ খেলেছে সেটা প্রশংসনীয়। আমাদের কাছে মনে হয়েছে ও এসব প্রতিযোগিতায় খুব ফ্রি হয়ে নিজে খেলতে পারে। আমার ব্যক্তিগত প্রত্যাশা সেই মনোভাবটাই যেন জাতীয় দলে দেখাতে পারে। এটা এমন না যে ওর থেকে সেঞ্চুরি, ডাবল সেঞ্চুরি করুক। যে কাজটা এতোদিন ঘরোয়া ক্রিকেটে করেছে সেটাই করুক।’’ ২০২২ সালের পর টেস্ট দলে ফিরলেন এনামুল। ৫ টেস্টে ১০০ রান করা এনামুল ঘরের মাঠে ২০১৩ সালের পর টেস্ট খেলবেন। বয়স ৩২ পেরিয়েছে। জাতীয় দলে এক সময়ে থিতু হয়েছিলেন। পরবর্তীতে আড়াল হয়ে যান। এরপর আসা—যাওয়ার ভেতরেই থাকেন। এবার সুযোগ হয়েছে জাকিরের পরিবর্তে। কিন্তু দুই ওপেনার সাদমান ও জয়ও নেই ফর্মে। তাদের দুজনের একজনকে ড্রপ করে এনামুলকে চট্টগ্রামে খেলানোর সম্ভাবনাই বেশি। লম্বা সময় ধরে আন্তর্জাতিক বোলারদের খেলার অভিজ্ঞতা এনামুলের নেই। এবার খারাপ করলেও তাকে বাদ দেবে না নির্বাচকরা সেই আশ^াস দিয়ে রেখেছেন। তবে ফর্মে থাকা একজন, জাতীয় দলে ফেরার তীব্র জেদে থাকা একজন নিজের পায়ের নিচের মাটি শক্ত করবেন এমনটাই প্রত্যাশা গাজী আশরাফের।