এফএনএস স্পোর্টস: আগামী মাসে ওয়েম্বলিতে অনুষ্ঠিতব্য ঐতিহাসিক এফএ কাপের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে লিভারপুল ও ম্যানচেস্টার সিটি। রোববার কোয়ার্টার ফাইনালে লিভারপুল দিয়োগো জোতার একমাত্র গোলে চ্যাম্পিয়নশীপের দল নটিংহ্যাম ফরেস্টকে পরাজিত করে শেষ চার নিশ্চিত করে। অন্যদিকে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব সাউদাম্পটনকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট কেটেছে সিটি। এর মাধ্যমে এবারের মৌসুমে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় তিনবারের প্রচেষ্টায় সাউদাম্পটনকে পরাস্ত করতে সক্ষম হলো পেপ গার্দিওলার দল। শেষ আটের মিশনে ফরেস্ট প্রিমিয়ার লিগের দুই জায়ান্ট লিস্টার ও আর্সেনালকে পরাস্ত করলেও লিভারপুলের বিপক্ষে আর শেষ রক্ষা হয়নি। ম্যাচ শেষে লিভারপুল বস জার্গেন ক্লপ বলেছেন, ‘এটি একটি নিখুঁত কাপ ম্যাচ ছিল। আমরা জানতাম ফরেস্টের এই ম্যাচে হারানোর কিছু নেই, সে কারনেই তারা নির্ভার হয়ে মাঠে নামবে। তারা আজ সত্যিই দুর্দান্ত খেলেছে, বড় একটি প্রশংসা তারা পেতেই পারে।’ মূল একাদশে কাল সাতটি পরিবর্তন করে দল সাজিয়েছিলেন ক্লপ। একাদশ থেকে বিশ্রাম দেয়া হয়েছিল মোহাম্মদ সালাহ, সাদিও মানে ও এন্ডি রবার্টসনকে। বিরতির আগেই রবার্তো ফিরমিনো রেডদের এগিয়ে দেবার সুযোগ পেয়েছিলেন। গোলরক্ষক এথান হোভার্থকে একা পেয়েও গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন ফিরমিনো। বিরতির পর অবশ্য বেশী সুযোগ পেয়েছে ফরেস্ট। ম্যাচ শেষের ১৪ মিনিট আগে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন ফিলিপ জিনকারনাগেল। ব্রেনান জনসনের ক্রস থেকে এই ড্যানিশ এ্যাটাকার ফরেস্টকে এগিয়ে দিতে পারেননি। তিন মিনিট পর কোসটাস টিসিমিকাসের ক্রস থেকে গোল করে জোতা ফরেস্টের ফরোয়ার্ডদের দেখিয়েছেন কিভাবে গোল দিতে হয়। মৌসুমে এটি জোতার ১৯তম গোল। ম্যাচের শেষদিকে রায়ান ইয়াটেসের হেড সরাসরি এ্যালিসন বেকারের হাতে ধরা না পড়লে ম্যাচটি হয়ত অতিরিক্ত সময়ে গড়াতে পারতো। ১৯৯৮/৯৯ মৌসুমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মত এক মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, প্রিমিয়ার লিগ ও এফএ কাপের শিরোপা জয়ের হাতছানি এখন সিটির সামনে। প্রিমিয়ার লিগ টেবিলে পেপ গার্দিওলার দলের থেকে এক পয়েন্ট পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে লিভারপুল। ফেব্র“য়ারিতে চেলসিকে হারিয়ে লিগ কাপের শিরোপা জয়ে পর লিভারপুলের সামনে এফএ কাপ ও প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জয়ের সুযোগ রয়েছে। দুই দলের কেউই ট্রেবল জয়ের এই ঐতিহাসিক স্মৃতি হাতছাড়া করতে চাইবে না। স্কোরলাইন সমৃদ্ধ হলেও সেন্ট মেরিসে সাউদাম্পটনের বিপক্ষে প্রথম ঘন্টাটা ভাল কাটেনি সিটির। এবারের মৌসুমে দুইবার ইংলিশ চ্যাম্পিয়নদের আটকে দেয়া সাউদাম্পটন কালও ম্যাচের শুরুতে সিটিকে সমস্যায় ফেলেছিল। ম্যাচ শেষে গার্দিওলা বলেছেন, ‘আমাদের শুরুটা দারুন হয়েছিল। কিন্তু কিছুক্ষন পরেই আমরা খেলতে ভুলে গিয়েছিলাম। এই সুযোগে সাউদাম্পটন আমাদের ওপর চেপে বসে। ম্যাচটি যে কঠিন হবে তা অনুমেয়ই ছিল। কারণ এই মুহূর্তে ইংলিশ লিগে সবচেয়ে গোছানো দল হিসেবে নিজেদের প্রমান করেছে সাউদাম্পটন। সেইন্টসদের হয়ে এ্যাডাম আর্মস্ট্রং পোস্টে বল লাগালে এগিয়ে যাওয়া হয়নি স্বাগতিকদের। কয়েক সেকেন্ড পরেই গাব্রিয়েল জেসুসের পাসে ঠান্ডা মাথায় বল জালে জড়িয়ে সিটিকে এগিয়ে দেন রাহিম স্টার্লিং। এরপর ইকে গুনডোগান বল পোস্টে লাগান। কিন্তু প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে মোহাম্মদ এলইউনুসির ক্রসে অমারিক লাপোর্তের আত্মঘাতি গোলে সমতায় ফিরে সাউদাম্পটন। ৬২ মিনিটে জেসুসকে অযথায় ডি বক্সের মধ্যে ফাউল করায় মোহাম্মদ সালিসুর বিপক্ষে পেনাল্টি আদায় করে নেয় সিটি। স্পট কিক থেকে ফ্রেসার ফর্স্টারকে পরাস্ত করতে ভুল করেননি কেভিন ডি ব্র“ইনা। ৭৫ ও ৭৮ মিনিটে দুই বদলী খেলোয়াড় ফিল ফোডেন ও রিয়াদ মাহারেজের গোলে সিটির জয়ের ব্যবধান বড় হয়েছে। এফএ কাপের আরেক সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে ক্রিস্টাল প্যালেস ও চেলসি। সেলহার্স্ট পার্কে রোববার কোয়ার্টার ফাইনালে এভারটনকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে শেষ চারের টিকিট পেয়েছে প্যালেস। প্যাট্রিক ভিয়েরার অধীনে উড়তে থাকা ঈগলসের হয়ে গোলগুলো কলেছেন মার্ক গুয়েহি, জিন-ফিলিপ মাতেতা, উইলফ্রিড জাহা ও উইল হিউজেস। ম্যাচ শেষে উচ্ছ¡সিত প্যালেস কোচ ভিয়েরা বলেছেন, ‘ওয়েম্বলিতে যাওয়াটা সবসময়ই আনন্দের। এখন থেকেই আমরা স্টেডিয়ামের আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি। এখানকার সমর্থকরা দুর্দান্ত।’ এর আগে শনিবার চ্যাম্পিয়নশীপের দল মিডলসব্রোকে ২-০ গোলে পরাজিত করে সেমিফাইনালের টিকিট পেয়েছে চেলসি।