দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ ইসরাইল ইরানের ভূ-খন্ডে পাল্টা হামলা করা হতে পিছুটান দিল। গত শনিবার মধ্যরাতে ইতিহাসের নজিরবিহীন হামলার শিকার হয় মধ্যপ্রাচ্যের কসাই খ্যাত দখলদার ও আগ্রাসন বাদী ইসরাইল। দীর্ঘদিন যাবৎ বছরের পর বছর দখলদার ইসরাইলি বাহিনী নিরীহ ফিলিস্তিনিদের উপর হামলা সহ হত্যাকান্ড চালিয়ে আসছিল। ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কথা বলার দুর্দান্ত শক্তি আর সাহসের প্রতিক ইরান এর উপর ইসরাইলের তার ক্ষোভ ছিল, বছরের বিভিন্ন সময়ে ইরানের সেনা কর্মকর্তা সহ নেতৃবৃন্দকে একের পর এক হত্যাকান্ড চালিয়ে আসছিল ইসরাইল কিন্তু বাস্তবতা হলো বিভিন্ন গ্র“প বিশেষ করে হিজবুল্লাহ ও হুতিরা মাঝে মধ্যে ইসরাইলে হামলা করলেও কোন দেশ প্রত্যক্ষ ভাবে ইসরাইলে হামলা করেনি। কেবল মাত্র ইরানই ইসরাইলে শতাব্দীর শ্রেষ্ঠতম হামলা পরিচালনা করেছে। হামলার পর থেকে ইসরাইল বলে আসছিল যে তারা ইরানের ভূ-খন্ডে হামলা চালিয়ে প্রতিশোধ গ্রহন করবে এমনও বলছিল তারা পারমানবিক হামলা করবে কিন্তু ইসরাইল হামলা হতে নিজেকে গুটিয়ে নিলো। ইসরাইল ইরানে হামলা করা থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার অন্যতম কারন ইরানের সামরিক সক্ষমতা, কারন ইরানে হামলা করলে তা হবে ইসরাইলের জন্য চরম বিপর্যয়। আন্তর্জাতিক বিশ্বে ইরান সামরিক দিক দিয়ে অতি শক্তিশালী তা স্পষ্ট। কাতার ভিত্তিক আল জাজিরা টেলিভিশন জানিয়েছে যে ইরান ইসরাইলে যে হামলা চালিয়েছে তা নিতান্তই ইরানের ক্ষমতা ও সক্ষমতার সামান্য অংশ। ইরান সামরিক শক্তিতে এতটুকু অগ্রগামী যে ইরানের সামরিক হামলা মোকাবিলা করার সক্ষমতা নেই ইসরাইলের। এ দিকে ইরানের হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা ইসরাইলে হামলা পরিচালনা করেছে। কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা জানিয়েছে লেবানন ভিত্তিক যোদ্ধা সংগঠন হিজবুল্লাহ ইসরাইলের ভূ-খন্ডের একটি কমান্ড সেন্টারে হামলা চালিয়েছে। চ্যানেলটি আরও জানায় উক্ত কমান্ড সেন্টারটি ইসরাইলি সেনা বাহিনীর নতুন সদস্যদের প্রশিক্ষন প্রদান করা হয় ও সেনা কর্মকর্তাদের আবাসিক এলাকা হিসেবে চিহিৃত। ইসরাইলের উক্ত সামরিক কমান্ড কাউন্সিলটি আরব আল আরাখশি। ধারনা করা হচ্ছে হিজবুল্লাহর হামলায় উক্ত কমান্ড সেন্টারে অবস্থানরত সেনা সদস্যরা হতাহতের শিকার হয় এবং সেন্টারটির ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। উল্লেখ্য এই হামলার পূর্বেও হিজবুল্লাহ ইসরাইলের ভূ-খন্ডে একদিনে শতাধীক রকেট হামলা পরিচালনা করে। এদিকে আবারও জাতিসংঘের পক্ষ হতে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে সংযত থাকার আহবান জানানো হয়েছে। এদিকে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যরা গাজার খান ইউনিস এলাকাতে গতকালও মুল অভিযান পরিচালনা করেছে। দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যরা ধ্বংসপ্রাপ্ত আল সিফা হাসপাতাল কমপ্লেক্স এলাকাতেও ব্যাপক ভিত্তিক তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করে। আল সিফা হাসপাতালে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যরা এই প্রথমবারের মতো অভিযান পরিচালনা করেছে তা নয় হামাস যোদ্ধাদের ঘাঁটি বলেও দখলদার ইসরাইলি বাহিনী একাধিক বার বিমান হামলা পরিচালনা করেছে। এদিকে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে আবারও হামাস অভিযোগ করে বলেছে যে, দখলদার ইসরাইলের কারাগারে আটক ফিলিস্তিনিদের উপর অমানবিক নির্যাতন পরিচালনা করছে ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যরা। হামাসের পক্ষ হতে আরও বলা হয়েছে যে, দখলদার বাহিনী বন্দী ফিলিস্তিনিদের উপর বৈদ্যুতিক ব্যবস্থাপনায় নির্যাতন পরিচালনা করছে। কারাগারে আটক নারী বন্দীদের উপর চালানো হচ্ছে যৌন নির্যাতন। দখলদার বাহিনীর সদস্যরা গতকাল রাফা শহরের বিভিন্ন এলাকাতে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করেছে। ফিলিস্তিনিদের জন্য বহন করা ত্রানের যানবাহন আটকানোর পাশাপাশি ত্রান বিতরনেরও বাঁধা প্রদান করছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ইসরাইলের বর্বরতাকে ঘৃণা ও নিন্দা জানানোয় এবং অবিলম্বে ফিলিস্তিনিদের উপর হামলা বন্ধের আহবান জানানোয় হামাস, প্রধান ইসমাইল হানিয়া প্রেসিডেন্ট তাইয়েফ এরদোগানকে ধণ্যবাদ জানিয়েছেন। উল্লেখ্য এরদোগান ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে মধ্যপ্রাচ্যের কসাই হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এদিকে ইরান তার পারমানবিক স্থাপনায় অতি সতর্কতা অবলম্বন করেছে কোন অবস্থাতেই ইরান ইসরাইলকে ছাড় দিতে নারাজ অবশ্য বিশ্বের কোটি কোটি মানবতা বাদীরা ইসরাইলের অমানবিকতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের পক্ষে।