রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

কবি সুফিয়া কামালের ১১১তম জন্মবার্ষিকী আজ

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ২০ জুন, ২০২২

এফএনএস: দেশে ‘নারী জাগরণের অগ্রদূত’ মহীয়সী নারী কবি সুফিয়া কামালের ১১১তম জন্মবার্ষিকী আজ। ‘জননী সাহসিকা’ হিসেবে খ্যাত এই কবি ১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশালের শায়েস্তাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। সুফিয়া কামাল আজীবন মুক্তবুদ্ধির চর্চার পাশাপাশি সা¤প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিপক্ষে সংগ্রাম করে গেছেন। সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে বিশেষ ভ‚মিকা রেখেছেন। তিনি ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকায় মারা যান। কবির জন্মদিন উপলক্ষে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তাঁরা নারী জাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ কবি সুফিয়া কামালের জন্মবার্ষিকীতে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। রাাষ্ট্রপতি বলেন, কবি সুফিয়া কামাল ছিলেন বাংলাদেশের নারী সমাজের এক ও অনুকরণীয় উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব। তিনি নারী সমাজকে কুসংস্কার আর অবরোধের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করতে আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। দেশের সকল প্রগতিশীল আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। নারীদের সংগঠিত করে মানবতা, অসা¤প্রদায়িকতা, দেশাত্মবোধ ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে তিনি ছিলেন পথিকৃৎ। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাণীতে বলেন, ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭১’র অসহযোগ আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীন বাংলাদেশে বিভিন্ন গণতান্ত্রিক সংগ্রামসহ শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে তার প্রত্যক্ষ উপস্থিতি তাকে জনগণের ‘জননী সাহসিকা’ উপাধিতে অভিষিক্ত করেছে। তার স্মরণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের জন্য ‘বেগম সুফিয়া কামাল হল’ নির্মাণ করে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আজ বিকাল ৪টায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুফিয়া কামালের জন্ম-বার্ষিকী উপলক্ষে স্মারকবত্তৃতা ও সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। ‘সুফিয়া কামাল ও নারীবাদী আন্দোলন’ শীর্ষক স্মারক বত্তৃতা প্রদান করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কাবেরী গায়েন। কবি সুফিয়া কামাল সম্মাননা প্রদান করা হবে বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী ইফফাত আরা দেওয়ানকে। বাংলার প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে সুফিয়া কামালের ছিল আপোষহীন এবং দৃপ্ত পদচারণা। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর সুফিয়া কামাল পরিবারসহ কলকাতা থেকে ঢাকায় চলে আসেন। ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং এই আন্দোলনে নারীদের উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি ১৯৫৬ সালে শিশু সংগঠন কচিকাঁচার মেলা প্রতিষ্ঠা করেন। পাকিস্তান সরকার ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র সংগীত নিষিদ্ধ করলে তার প্রতিবাদে সংগঠিত আন্দোলনে তিনি জড়িত ছিলেন এবং তিনি ছায়ানটের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা দেন। স্বাধীন বাংলাদেশে নারী জাগরণ ও নারীদের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামেও তিনি উজ্জ্বল ভ‚মিকা পালন করেন। সাঁঝের মায়া, মন ও জীবন, শান্তি ও প্রার্থনা, উদাত্ত পৃথিবী ইত্যাদি তার উলে­খযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। এ ছাড়া সোভিয়েতের দিনগুলি এবং একাত্তরের ডায়েরি তার অন্যতম ভ্রমণ ও স্মৃতিগ্রন্থ। সুফিয়া কামাল দেশ-বিদেশের ৫০টিরও বেশি পুরস্কার লাভ করেছেন। এর মধ্যে উলে­খযোগ্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার, সোভিয়েত লেনিন পদক, একুশে পদক, বেগম রোকেয়া পদক, জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার ও স্বাধীনতা দিবস পদক।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com