কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি \ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমির ডাঃ শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা বৈষম্য দুর করে সাম্যের বাংলাদেশ গড়তে চাই। বৈষম্যহীন একটা দেশ গড়তে চাই। যে দেশে দখলবাজ চাঁদাবাজি চলবে না। দূর্বলরা সবল দ্বারা অত্যাচারিত হবে না। শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য পাওণা পাবেন। সমতা— সাম্য কায়েম হবে। অফিস—আদালত থেকে ঘুষ—দূর্ণীতি নির্মুল করতে হবে। বাংলাদেশে আর কখনও চাঁদাবাজ ও দখলবাজদের অস্তিত্ব রাখা হবে না। চাঁদাবাজি, দখলদারি বন্ধ করতে হবে। এজন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। বৃহস্পতিবার (২৬ডিসেম্বর) বিকাল ৩ টায় কয়রা কপোতাক্ষ কলেজ মাঠে কর্মী সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে অসংখ্য মায়ের বুক খালি হয়েছে। আয়নাঘর’— এ বন্দি রেখে জঙ্গিবাদের নাটক করা হয়েছে। অসংখ্য মানুষকে বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছে, গুম করা হয়েছে। এতদিন বিনা ভোটে যারা সংসদে প্রতিনিধিত্ব করে দেশের মালিক দাবি করেছিলেন তাদের দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। দেশের মালিক জনগণ। স্বৈরাচার হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর জনগণ দেশের মালিকানা ফিরে পেয়েছেন। জাতীয় নির্বাচনের নামে বিনা ভোটে এমপিদের পাশ করানো হয়েছে, নিশি রাতে ভোট হয়েছে এবং ২০২৪ সালে আমি আর ডামির নির্বাচন নির্বাচন হয়েছে। পতিত ফ্যাসিবাদী সরকার আমাদের দেশপ্রেমিক বিডিআর বাহিনীকে ধ্বংস করেছে। আওয়ামীলীগের উদ্যেশ্যে তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছর যারা শাসন করেছেন, তারা দেশকে না সাজিয়ে নিজেদেরকে সাজিয়েছেন। দেশের মানুষের রিযিক তারা তুলে নিয়েছে। লাখো বেকারের মিছিলে জনগণ ছিল পিষ্ট। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কলম হাত থেকে কেড়ে নিয়ে গুন্ডাদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। এদেশের মানুষের হাড়ভাঙা পরিশ্রমের অর্জিত টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়নের রোল মডেল গড়ে তোলার কথা বলা হলেও রোল মডেল খুঁজে পাওয়া যায় না। সৌভাগ্যক্রমে ইংল্যান্ডের মন্ত্রী হয়ে টিউলিপ ছিদ্দিকী রুপপুর পারমানবিক কেন্দ্র থেকে ৫৭ হাজার কোটি টাকা চুরি করেছে। ব্যাংকগুলো সব ফাঁকা, ফিন্যান্স সেক্টর ধ্বংস বীমা কোম্পানিগুলো মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে গ্লোবাল। বিগত ফ্যাস্টিট সরকার জাতির দুশমন। শক্র, চোর এরা বাংলাদেশ থেকে সব চুরি করে নিয়ে পালিয়ে গেছে। এদেরকে বিচার করতে হবে এই বাংলার মাটিতে। কয়রার প্রধান সমস্যা বেঁড়িবাধ সংকট নিরসনে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, আপনারা অন্তত শুরু করুন। জামায়াত দেশ সেবার সুযোগ পেলে আর কোন দাবি করতে হবে না, বরং জনগনের সংকটগুলো খুঁজে নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করবে। এদেশের যুবকরা বৈষম্যমুক্ত যে সমাজের স্বপ্ন দেখেছিল তেমন একটি সমাজ গড়তে তিনি সকলের ঐক্যবদ্ধ সহযোগিতা কামনা করেন। ডাঃ শফিকুর রহমান বলেন, আমরা এ দেশকে ভালবাসি, এদেশ গড়তে চাই। এমন একটি সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন করতে চাই যেখানে দূর্ণীতিবাজ দখলদারদের অস্তিত্ব থাকবে না। যে সমাজে আমাদের মা বোনেরা ইজ্জতের সাথে গৃহে এবং বাইরে সমস্ত জায়গায় চলতে পারবে। তিনি বলেন, মানুষের মুক্তি অর্জন না হওয়া পর্যন্ত সাম্যের দিক থেকে, ন্যায় বিচারের দিক থেকে একটি দেশ এবং জাতি গঠন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে, ইনশাআল্লাহ। কয়রা উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে ও খুলনা জেলা সহকারি সেক্রেটারী এ্যাডঃ মোস্তাফিজুর রহমানের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। এতে আরও বক্তব্য কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন,জামায়াত নেতা মাওলানা গোলাম সরোয়ার, অধ্যক্ষ কবিরুল ইসলাম, মুন্সি মিজানুর রহমান, মুন্সি মইনুল ইসলাম, অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, অধ্যক্ষ গাউসুল আযম হাদী, কৃষ্ণ নন্দী, কয়রার জামায়াত নেতা মাওলানা রফিকুল ইসলাম, মাওলানা সুজাউদ্দিন প্রমুখ।