মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ০১:৪৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
ধুলিয়াপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হলেন আশিক সাতক্ষীরা রেড ক্রিসেন্টের ফুড প্যাকেজ বিতরণ আছিয়া হত্যার প্রতিবাদে মহিলা জামায়াতের মানববন্ধন আশাশুনি পলিথিন ও প্লাস্টিক দুষণ প্রতিরোধে করণীয়তা নিয়ে কর্মশালা আইন—শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আশাশুনি থানা পুলিশের বিশেষ মহড়া কয়রায় হরিণের মাংস ফেলে পালালো শিকারীরা নারী ও শিশু ধর্ষনের প্রতিবাদে কয়রায় মানববন্ধন কয়রায় বিএনপির মতবিনিময় সভা তালায় চাঞ্চল্যকর শিক্ষক বিপ্লব হত্যাকান্ড এমপি, এসপি, দু’ওসিসহ আসামিদের এজাহার গ্রহণের নির্দেশ নূরনগরে অতি দরিদ্র পরিবারের মাঝে ভিজিএফ এর চাউল বিতরণ

কর্মবিরতিতে মেট্রোরেলের স্টাফরা: যাত্রী হয়রানি ও রাজস্ব ক্ষতিতে সমালোচনা

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫

এফএনএস: ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) পুলিশ মেট্রোরেলের চার জন কর্মীকে মৌখিক ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় বিচারের দাবিসহ অন্যান্য দাবিতে কর্ম বিরতিতে গিয়েছিলেন মেট্রোরেলের স্টাফরা। পরে এমডির আশ্বাসে কাজে ফেরেন। তবে তাদের এমন আচরণে বিরক্ত প্রকাশ ও সমালোচনা করেন যাত্রীরা। যাত্রীদের বক্তব্য, সেবা খাতের কর্মীদের এই ধরনের আচরণ অপ্রত্যাশিত ও দায়িত্বজ্ঞানহীন। সমস্যা সমাধানের জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা ছিল যৌক্তিক পথ, কিন্তু কর্মবিরতি ডেকে জনগণের ভোগান্তি সৃষ্টি করা অপেশাদার আচরণ। ঘটনার সূত্রপাত গত রোববার বিকাল প্রায় ৫টায় সচিবালয় স্টেশনে। সেখানে দায়িত্বরত এমআরটি পুলিশের কয়েকজন সদস্যদের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে মেট্রোরেলের কাস্টমার রিলেশন অ্যাসিস্ট্যান্টের (সিআরএ) সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এছাড়া, এক টিকিট মেশিন অপারেটরের (টিএমও) শার্টের কলার ধরে জোর করে এমআরটি পুলিশ বক্সে নিয়ে মারধর করার অভিযোগ আসে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ওইদিন রাতে কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা। পরে গতকাল সোমবার সকাল ৭টা ১০ মিনিটে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হলেও স্টেশনে উপস্থিত কর্মীরা যাত্রীদের কোনও সহায়তা দিচ্ছিলেন না। পরে সকাল প্রায় ৮টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ মিরপুর ১০ নম্বর স্টেশনে এসে স্টাফদের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং তাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। এরপর সকাল ৯টায় স্টাফরা কাজে ফেরেন। কিন্তু মেট্রোরেল স্টাফদের এই কর্মবিরতিতে এক প্রকার ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। তারা সকালে নানা বিভ্রান্তিতে পড়েন। একক যাত্রার টিকিট মেশিন বন্ধ থাকায় টিকিট কেনা যাচ্ছিলো না। কোনও কোনও প্লাটফর্মে প্রবেশের গেটের মেশিন চালু না থাকায় এক স্টেশন থেকে কার্ড পাঞ্চ প্রবেশ করলেও অন্য স্টেশনে গিয়ে বের হতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। পাস জনিত কোনও সমস্যা সমাধানে কাউকে পাওয়া যাচ্ছিলো না। অধিকাংশ যাত্রী বিনা টিকিটেই মেট্রোরেল ভ্রমণ করেন নানা শঙ্কা নিয়ে। এছাড়া সরকারও রাজস্ব হারিয়েছে। এই আকস্মিক কর্মবিরতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যাত্রীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। মেট্রোরেল যাত্রীদের অন্যতম পরিচিত ফেসবুক গ্রুপ ‘মেট্রোরেল প্যাসেঞ্জার কমিউনিটি—ঢাকা’—তে ব্যাপক সমালোচনা হয়। গ্রুপে মাইনুদ্দিন মোল্লা নিরব নামে একজন লেখেন, মেট্রোরেলের কর্মচারীরা কথায় কথায় কর্মবিরতি দেয়! মনে হয় তারা চাকরিটাকে নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মনে করে। তারা যাত্রীদের সেবার কথা না ভেবে নিজেদের স্বার্থের দিকে নজর দিচ্ছে। আরেক যাত্রী ইফতেখার আহমেদ বলেন, এই কর্মবিরতির কারণে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারিয়েছে। যারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের বেতন কর্তন করে সেই ক্ষতি পূরণ করা হোক। সাজেদা আক্তার সাজু মন্তব্য করেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা যেতো। কিন্তু যখন—তখন কর্মবিরতি পালন করা, সাধারণ মানুষ ও সরকারকে বেকায়দায় ফেলা গ্রহণযোগ্য নয়। যারা এর উসকানি দাতা, তাদের স্থায়ীভাবে ছাঁটাই করা উচিত। বাংলাদেশ মেট্রো রেলওয়ে ইনফরমেশন নামে আরেক গ্রুপে মাসুম বিল্লাহ লেখেন, মেট্রোরেল তো একটা প্রতিষ্ঠান। এখানে চেইন অব কমান্ড থাকার কথা। একটি ঘটনায় যদি কর্মবিরতিতে চলে যায়, তাহলে এত বড় ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান টিকে থাকবে কিসের ওপর ভিত্তি করে? তবে আগামীতে এধরনের ঘটনা এড়াতে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের স্টাফরা ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেছেন। দাবিগুলো হলো¬Ñ ১। আগামী এক কার্যদিবসের মধ্যে ঘটনার মূল হোতা এসআই মাসুদকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের (কনস্টেবল রেজনুল, ইন্সপেক্টর রঞ্জিত) শাস্তি প্রদান ও প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। ২। মেট্রোরেল, স্টাফ ও যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে হবে। ৩। এমআরটি পুলিশকে অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। ৪। স্টেশনে কর্মরত সিআরএ, টিএমও, স্টেশন কন্ট্রোলারসহ সব কর্মীদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ৫। অফিসিয়াল পরিচয়পত্র ও অনুমতি ছাড়া কেউ যেন পেইড জোনে প্রবেশ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। ৬। আহত কর্মীদের সম্পূর্ণ চিকিৎসার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com